আর্থিক সংকটে থাকা বাসিন্দাদের সহায়তায় ২.৭ মিলিয়ন পাউন্ডের রিলিফ প্যাকেজ অনুমোদন দিলেন মেয়র লুৎফুর রহমান

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

টাওয়ার হ্যামলেটসঃ টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সংকট মোকাবেলায় বারার বাসিন্দাদের জন্য নতুন একটি রিলিফ অর্থাৎ সহায়তামূলক প্যাকেজ অনুমোদন করার ফলে আর্থিক সংকটে থাকা হাজার হাজার পরিবার টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে এককালীন অনুদান পাবে।১১ জুলাই অনুষ্ঠিত কাউন্সিলের কেবিনেট মিটিংয়ে মেয়র লুৎফুর রহমান কর্তৃক অনুমোদিত এই রিলিফ প্যাকেজের অধীনে ফ্রি স্কুল মিলস্ বা স্কুলে বিনামূল্যে খাবার লাভের যোগ্য পরিবারগুলি প্রতিটি শিশুর জন্য ১০০ পাউন্ড নগদ সহায়তা পাবে। এছাড়া দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে থাকা অন্য পরিবারগুলোকেও শিশু প্রতি ১০০ পাউন্ড করে অনুদান দেওয়া হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ি ১০০ পাউন্ড করে মোট ১৭,৫০০টি অনুদান পেমেন্ট দেয়া হবে, যাতে কাউন্সিলের খরচ হবে ১.৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড।

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের বিশেষ এই রিলিফ প্যাকেজের আওতায় পেনশন ক্রেডিট লাভকারী ৭০০০ এরও বেশি বাসিন্দাকে দেয়া হবে আর্থিক সহায়তা। এছাড়া যে সকল পরিবারের শিশুরা এখনো প্রাইমারী স্কুলে যায় না, অথচ হেলদি স্টার্ট ভাউচার পায় তেমন ২০০০ পরিবারের জন্যও এই প্যাকেজে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
কাউন্সিলের হাউজিং সাপোর্ট ফান্ডের বরাদ্দ থেকে এই গ্রুপগুলোকে ১০০ পাউন্ড করে ৯৪১০টি গ্র্যান্ট পেমেন্ট বা অনুদান প্রদান করা হবে। সবমিলিয়ে রিলিফ প্যাকেজের আর্থিক পরিমাণ দাঁড়াবে সর্বমোট ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন পাউন্ড।জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সংকট মোকাবেলায় বাসিন্দাদের সহযোগিতা করতে কাউন্সিলের সর্বশেষ অফার হচ্ছে নতুন এই রিলিফ প্যাকেজ। এছাড়াও এরই মধ্যে আরও যেসকল পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাসিন্দাদের ওপর থেকে আর্থিক চাপ কিছুটা কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে কাউন্সিল ট্যাক্স রিডাকশন স্কিম, রেসিডেন্টস্ সাপোর্ট স্কিম, ১১ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের জন্য সার্বজনীন ফ্রি স্কুল মিলস্, স্কুলের পোশাক কিনতে আর্থিক অনুদান প্রদান, নিম্ন-আয়ের পরিবারগুলোর ছেলেমেয়েদের জন্য হলিডে এক্টিভিটিজ অর্থাৎ স্কুল বন্ধকালীন সময়ে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা, স্থানীয় ফুড ব্যাংকগুলোকে সহযোগিতা করে যাওয়া এবং স্থানীয় ভিত্তিক পরামর্শ সেবা সমূহ ও দারিদ্র্য বিমোচন আউটরীচ টিমের জন্য তহবিল প্রদান।

রিলিফ প্যাকেজ থেকে অনুদান পাওয়ার উপযুক্ত পরিবারগুলোর সাথে কাউন্সিলের পক্ষ থেকে অথবা শিশুদের স্কুলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হবে।উল্লেখ্য, যে পরিবারের বাচ্চারা ফ্রি স্কুল মিলস্ অর্থাৎ বিনামূল্যে স্কুলে খাবার পাওয়ার যোগ্য নয়, অথচ পরিবারগুলো দারিদ্র্যের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, তাদেরকে চিহ্নিত করতে কাউন্সিল বারার স্কুলগুলোর সাথে কাজ করছে। এমন প্রায় ২ হাজার পরিবারকেও ১০০ পাউন্ড করে অনুদান দেওয়া হবে।জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক চাপের মুখোমুখি হওয়া পরিবারগুলোর সহায়তায় গৃহিত এই আর্থিক অনুদান প্রকল্প সম্পর্কে মন্তব্যকালে নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সংকট টাওয়ার হ্যামলেটসের জনগণের ওপর মারাত্মক আঘাত হেনেছে। পরিস্থিতি দিনকে দিন অবনতির দিকেই যাচ্ছে।তিনি বলেন, যদিও এটি সরকারেরই সমাধান করা উচিত, কিন্তু তাই বলে আমরা আর অপেক্ষা করতে পারি না। বারার জনসাধারণের এটা জেনে আশ্বস্ত হওয়া উচিত যে, তাদের পক্ষে একজন মেয়র এবং একটি কাউন্সিল রয়েছে এবং এ কারণেই আর্থিক চাপে পড়ে সবচেয়ে বেশি সংকটে যারা রয়েছেন, তাদের জন্য আমরা অতিরিক্ত তহবিল বরাদ্দ রাখছি।
মেয়র বলেন, ‘যারা আর্থিক সংকটের সাথে লড়াই করছেন, তাদের সহায়তার জন্য নেয়া সকল পদক্ষেপের শীর্ষে রয়েছে নতুন এই রিলিফ প্যাকেজ। এরই মধ্যে আরো যেসকল পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে কাউন্সিলের কর হ্রাস, আমাদের রেসিডেন্ট সাপোর্ট স্কিম, প্রাথমিক স্কুলে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ, স্কুল ইউনিফর্মের জন্য অনুদান প্রদান এবং আমাদের গ্রীষ্মকালীন ইভেন্ট কর্মসূচির অংশ হিসেবে কম বয়সীদের জন্য বিনামূল্যে শত শত কর্মসূচি আয়োজন ও খাবার—দাবারের ব্যবস্থা করা।মেয়র লুৎফুর রহমান আরো বলেন, চলমান আর্থিক সংকট মোকাবেলায় আমরা নতুন নতুন উপায় খুঁজে বের করে আমাদের বাসিন্দাদের সহায়তা করে যাবো।কাউন্সিলের সম্পদ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সংক্রান্ত কেবিনেট মেম্বার কাউন্সিলর সাইয়েদ আহমেদ বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে নিম্ন আয়ের লোকজন এবং পরিবারগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারের তরফে কিছু সহায়তার প্রস্তাব দেয়ার মাধ্যমে এই সংকটকে স্বীকার করে নেয়া হলেও সেই সহায়তা মোটেই যথেষ্ট নয়।তিনি বলেন, “কিছু না করাটা সহজ কোন বিকল্প হতে পারে না। তাই আমরা এই অতিরিক্ত সহায়তা প্রদান করছি, যা সংকটের প্রভাব এবং পরিবারের বাজেটের ওপর ক্রমবর্ধমান আর্থিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে। আমরা জানি যে আরও অনেক কিছু করা দরকার এবং এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে আমাদের বাসিন্দাদের সহযোগিতা করার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাব।”

You might also like