কিংবদন্তি নৃত্যসম্রাজ্ঞী অমলা শঙ্কর না ফেরার দেশে

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

বিনোদনঃ উপমহাদেশের নৃত্যশিল্পের একটি যুগের অবসান হলো।মারা গেলেন কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী অমলা শঙ্কর।শুক্রবার (২৪ জুলাই) কলকাতায় নিজের বাড়িতে ঘুমের মধ্যেই পরলোকে পাড়ি জমান এই শিল্পী।তার বয়স হয়েছিল ১০১ বছর।ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়,বার্ধক্যজনিত কারণেই অমলার মৃত্যু হয়েছে। ২৭ জুন পরিবারের সঙ্গে বিখ্যাত এই নৃত্যশিল্পী জন্মদিন পালন করেন।

অমলা শঙ্করের প্রয়াণের খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান তার নাতনি শ্রীনন্দা শঙ্কর। তিনি লেখেন, ১০১ বছর বয়সে আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন ঠাম্মা।গত মাসেই তার জন্মদিন পালন করেছিলাম আমরা।খুব অস্থির বোধ করছি, কারণ মুম্বাই থেকে কলকাতা যাওয়ার বিমান চলছে না। তার আত্মার শান্তি কামনা করি। একটা যুগের অবসান হলো। ঠাম্মা, তোমাকে খুব ভালোবাসি।সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ।অমলা শঙ্কর ভারতীয় নৃত্যজগতের প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব উদয় শঙ্করের স্ত্রী। কালজয়ী সেতার বাদক রবি শঙ্কর তার দেবর। উদয়-অমলার দুই সন্তান প্রয়াত সুরকার আনন্দ শঙ্কর ও অভিনেত্রী-নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্কর।১৯১৯ সালের ২৭ জুন বাংলাদেশের যশোরে জন্ম অমলা শঙ্করের। শৈশবেই প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটে তার। ১৯৩১ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে প্যারিসের ইন্টারন্যাশনাল কলোনিয়াল এগজিবিশনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেখানেই স্বামী ও গুরু উদয় শঙ্করের সঙ্গে আলাপ ফ্রক পরিহিতা অমলার। এর পরেই উদয়ের কাছে তালিম নিতে শুরু করেন। উদয়ের নাচের দলের সঙ্গে দেশ-বিদেশে ঘুরে অনুষ্ঠান করেন তিনি।

১৯৪২ সালে উদয়কে বিয়ে করেন অমলা। একাধিক সাক্ষাৎকারে অমলা জানান, এক রাতে হঠাৎই তার ঘরে এসে বিয়ের প্রস্তাব দেন উদয় শঙ্কর। ঘটনার আকস্মিকতায় কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। বিয়ের পর আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে উদয়-অমলা জুটি। বিশ্বের বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী জুটিদের মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠেন তারা।উদয় শঙ্কর পরিচালিত ছবি ‘কল্পনা’য় উমার চরিত্রে অমলার নৃত্যাভিনয় দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়। কান চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয় এই ছবি। সেই সময় ওই উৎসবে অংশ নেওয়া কনিষ্ঠতম তারকা ছিলেন অমলা শঙ্কর। এর ৮১ বছর পর ২০১২ সালে ফের কান চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দেন তিনি।২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার অমলা শঙ্করকে বঙ্গবিভূষণ পুরস্কারে সম্মানিত করে। শেষবার তাকে মঞ্চে দেখা গিয়েছিল ওই বছরই। ৯২ বছর বয়সে ‘সীতা স্বয়ম্ভর’ ও ‘মিসিং ইউ’ নৃত্যনাট্যে অভিনয় করেন তিনি।

You might also like