খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শাহাবুদ্দিন আর নেই
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক শাহাবুদ্দিন আহমেদ (৮২) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।শুক্রবার (২ জুলাই) দিবাগত রাত ৩টায় বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে ঢাকার এভারকেয়ার হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্লা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান,ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বড় জামে মসজিদে বাদ জোহর জানাজা শেষে মরহুমকে দাফন করা হবে।শাহাবুদ্দিন আহমদ ১৯৩৯ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক বাড়ি ঢাকার মানিকগঞ্জে। বাবার চাকরির সুবাধে খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে লেখাপড়া করেন।সর্বশেষ শিক্ষা জীবন দৌলতপুর সরকারি বিএল কলেজ।তিনি ১৯৬২ সালে শরীফ কমিশন রিপোর্ট বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন।পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
শিক্ষা জীবন শেষে তৎকালীন রূপসা থানার বেলফুলিয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফাতিমা উচ্চ বিদ্যালয় এবং চালনা পোর্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময় শিক্ষকতা করেন।১৯৬৫ সালে খুলনার স্থানীয় ওয়েভ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত হন। ৪৪ বছরের পেশাগত জীবনে সাপ্তাহিক হলিডে, বাংলাদেশ টাইমস, দি ডেইলি টেলিগ্রাফ, ডেইলি ফিন্যানসিয়াল এক্সপ্রেস ও ডেইলি ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন।ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায় ১৩ বছর দায়িত্ব পালন শেষে বার্ধক্যজনিত কারণে ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকতা থেকে অবসর নেন।১৯৭০-৭১ সালে করাচির প্রভাবশালী দৈনিক ডন পত্রিকার খুলনাস্থ প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি ১৯৮০, ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালে অবিভক্ত খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি, ১৯৮৫-৮৬, ১৯৯২-৯৩, ১৯৯৫-৯৬, ১৯৯৯-২০০০ সালে খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৭৫ সালে বাকশালে যোগদান প্রশ্নে স্থানীয় সাংবাদিকদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হতে পারেননি। তিনি তার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। একমাত্র তিনিই বাকশালে যোগদান করেননি। স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের আপাদকালীন সাহায্যের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে নিখুঁত সংবাদ পরিবেশনে তিনি খুলনার সাংবাদিক অঙ্গনে আজও দৃৃষ্টান্ত।বানান ও বাক্য গঠনে তিনি যত্নবান ছিলেন। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান এবং বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকায় ২০০৮ সালে সাদা মনের মানুষ হিসেবে জেলা প্রশাসন থেকে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হন। চিরকুমার এই সাংবাদিক মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকার বসুন্ধরায় এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় অবসর জীবনযাপন করেন।তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম জাহিদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্লাসহ কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দ।এই গুণী সাংবাদিকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক গাজী আলাউদ্দিন আহমদ।