ঘূর্ণিঝড় আম্পান: ১২ জনের মৃত্যু
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
বাংলাদেশঃ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে দেশে ১২ জনের মৃত্যুর কথা জানা গেলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১০ জন মৃতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে এ তথ্য জানানো হয়।কন্ট্রোল রুম জানায়, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে প্রাথমিকভাবে বুধবার পর্যন্ত ১০ জন মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় জানা গেছে। এছাড়া বেসরকারিভাবে সাত জেলায় ১২ জনের মৃতের খবর পাওয়া গেছে।এরমধ্যে পিরোজপুর ও যাশোরে তিনজন করে, পটুয়াখালীতে দুইজন এবং ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, ভোলা ও বরগুনায় একজন করে মারা গেছেন। মারা যাওয়া অনেকেই ঝড়ে গাছ বা ঘর চাপা পড়েন।
আম্পান কিছুটা তেজ হারিয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রূপে বুধবার দুপুরের পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানে।পরে রাতে এ ঝড় প্রবেশ করে বাংলাদেশে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ১২ জন নিহত হয়েছে শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ে।ঝড়ের মধ্যে প্রবল বাতাসে বহু গাছপালা ভেঙে পড়ে, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন উপকূলের ১০ লাখের বেশি গ্রাহক।ঝড়ের মধ্যে বুধবার রাত ১০টার পর যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে এক মা ও তার শিশু কন্যার মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন-খ্যান্ত বেগম (৪৫) ও মেয়ে রাবেয়া (১৩)।এদিকে রাত ১১টার দিকে শার্শায় ঝড়ের মধ্যে গাছ চাপা পড়ে একজনের মুত্যু হয়েছে।উপজেলার বাগআচড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর টেংরা এলাকায় মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মুক্তার আলি। বয়স৬৫ বছর।
আম্পানে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় দুজন এবং ইন্দুরকানী উপজেলায় একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ওই তিনজন হলেন- মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের গিলাবাদ গ্রামের মজিদ মোল্লার ছেলে শাহজাহান মোল্লা (৫৫) ও আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের ধুপতি গ্রামে মুজাহার বেপারীর স্ত্রী গোলেনুর বেগম (৭০) এবং ইন্দুরকানী উপজেলার উমিদপুর এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে শাহ আলম (৫০)।
ঝিনাইদহে রাতে ঝড়ের মধ্যে ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। রাত ১০টার পর সদর উপজেলায় হলিধানী গ্রামে একটি গাছ ভেঙে ঘরের ওপর পড়ে নাদিরা বেগমের (৫৫) মৃত্যু হয়।ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সাতক্ষীরা সদরে গাছ ভেঙে পড়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম পরিচয় জানা যায়নি।আম্পানের প্রভাবে পটুয়াখালীতে গাছ পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) এক সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
গলাচিপা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, বুধবার সন্ধ্যায় গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি এলাকায় ঝড়ে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে ছয় বছরের শিশু রাসেদ নিহত হয়েছে।রাসেদের মাও আহত হন।ভোলার চরফ্যাশনে ঝড়ে গাছ চাপা পড়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার প্রধান সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।তার নাম ছিদ্দিক ফকির। বয়স ৭০।বরগুনার সদর উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্র যাওয়ার পথে শহীদুল ইসলাম নামে এক রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী ‘অসুস্থ হয়ে’মারা গেছেন। হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বৃষ্টি ঝড়িয়ে ক্রমান্বয়ে আরও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে সতর্ক সংকেত কমিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে।