চিকিৎসক না থাকায় চালু হচ্ছে না সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আইসিইউ

সত্যবাণী

সিলেট অফিসঃ সুনামগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)-এর সবকিছু প্রস্তুত হলেও চিকিৎসকের অভাবে এটি চালু হচ্ছে না। ফলে আইসিইউ সেবার জন্য জেলাবাসীকে যেতে হয় বিভাগীয় শহর সিলেটে। এতে একদিকে যেমন অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে একই সঙ্গে ভোগান্তিরও শেষ নেই।

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, জেলার ২৬ লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল। গুরুতর আহত কিংবা অসুস্থ রোগীদের জন্য হাসপাতালটিতে নেই কোনো ভালো চিকিৎসা। ডাক্তারসহ হৃদরোগের ন্যূনতম চিকিৎসা নেই এখানে। সামান্য কিছু হলেই রোগী নিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় সিলেটে।

তাই ১০ শয্যাবিশিষ্ট আইসিইউ ইউনিট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের ৮ম তলায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয় আইসিইউ ইউনিট। এটি জেলার প্রথম ও একমাত্র আইসিইউ ইউনিট। দু’মাস আগেই বিছানা, মনিটর, অক্সিজেন লাইনসহ সকল যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ শেষ করেছে গণপূর্ত বিভাগ। নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি স্থাপন শেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সবকিছু হস্তান্তরও করে দিয়েছে তারা।

গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের জন্য আমাদের সব কাজ শেষ করে ইতোমধ্যেই আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে দিয়েছি। এখন তারা তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারবেন। নির্মাণকাজ শেষ করে যে টাকা অবশিষ্ট ছিল তাও আমরা ফেরত দিয়ে দিয়েছি।

আইসিইউ ইউনিট হস্তান্তর করা হলেও ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় শুরু হচ্ছে না এর কার্যক্রম। তালাবদ্ধ আইসিইউ ইউনিটে পড়ে আছে কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। যার কারণে বিশেষায়িত এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলাবাসী। চিকিৎসার অভাবে মারাও যাচ্ছেন অনেকে।

জেলা কৃষকলীগ সভাপতি আব্দুল কাদির শান্তি মিয়া বলেন, সুনামগঞ্জ হাওর এলাকার মানুষের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতাল চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল। কিন্তু এটা শুধু নামে ২৫০ শয্যা, কাজে না। আমার স্ত্রীর হার্টে সমস্যার জন্য আইসিইউ প্রয়োজন ছিল। সুনামগঞ্জে না থাকায় সিলেটে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। সিলেট-সুনামগঞ্জের দৌড়াদৌড়িতে তিনি মারা যান। সিলেট সবাই যেতে পারবে না, এটা ব্যয়বহুল। আমরা চাই দ্রুত আইসিইউ ইউনিট চালু করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করা হোক।

মজনু মিয়া বলেন, আমাদের হাসপাতাল নানান সমস্যায় জর্জরিত। তার মধ্যে বড় সমস্যা আইসিইউয়ের। সরকার আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে আইসিইউ নির্মাণ করলেও তার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে না। এটা চালু হলে সুনামগঞ্জের মানুষের চিকিৎসা সেবায় অনেক উপকার হবে।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক) ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকার দেশের প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। তার মধ্যে একটি আমাদের হাসপাতাল। ইতোমধ্যে যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে কার্যক্রম শুরু হচ্ছে না। আমরা এই ইউনিটের কার্যক্রম শুরু করার জন্য পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ দিতে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। আশা করছি জনবল নিয়োগের মাধ্যমে শিগগরিই চালু করা যাবে।

You might also like