চোখ জুড়ানো সমুদ্র সৈকত পর্তুগালের আলগার্ভ

শাহ মোহাম্মদ তানভীর
সত্যবাণী

পর্তুগাল: ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা পৃথিবীর নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়ান।তাদের কাছে যদি জানতে চান সমুদ্র না পাহাড়, তাদের কোনটি ভালো লাগে। বেশিরভাগের কাছ থেকেই আপনি উত্তর পাবেন সমুদ্র। অবাক হওয়ার কিছুই নেই।সমুদ্র কার না ভালো লাগে।তেমনি ইউরোপের সেরা সমুদ্র সৈকত গুলোর মধ্যে পর্যটকদের অন্যতম পছন্দ পর্তুগালের আলগার্ভ সমুদ্র সৈকত।বাণিজ্যিক শহর আলগার্ভ পর্তুগালের রাজধানী লিসবন থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে।পর্তুগালের দীর্ঘতম সৈকতগুলো এ শহরেই অবস্থিত।শহরটি বসবাসের জন্য অনেক ব্যয়বহুল।কারণ শহরটি গল্ফ রিসোর্ট, হোটেল, মোটেলের জন্য বিখ্যাত। দীর্ঘতম সৈকতগুলোর মধ্যে প্রায়া দি ডোনাআনা,প্রায়া দোকামিলো, প্রায়া দামারিনহা, প্রায়া দাফালোজিয়া এবং প্রায়া দা রোকা অন্যতম। তাছাড়া সাগরের সৌন্দর্য যে কাউকেই বিমোহিত করে তুলবে। স্থানটি পর্তুগালে শেষ সীমান্ত হিসেবেও জনপ্রিয় এবং চিহ্নিত।

আলগার্ভে বসবাস করেন প্রবাসী বাংলাদেশি সোলেমান হোসেন। তিনি ইলাহা তাবিরা নামক দ্বীপের কাছে একটি পর্তুগিজ রেস্টুরেন্টে কাজ করেন সমকালের সাথে আলাপকালে তিনি জানান আলগার্ভের সৈকতগুলো তাকে বিমহিত করে ।ইউরোপের চোখ জোড়ানো সৈকতগুলোর মধ্যেআ লগার্ভের সৈকতগুলো অন্যতম।তিনি বলেন গ্রীষ্মকালে এ শহরের দ্বীপে জনমানুষে ভরপুর থাকে।

এদিকে গত (২২ অক্টোবর) ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ড পর্যটন খাতে ২০২১ সালে ইউরোপের সেরা হিসেবে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।এ অ্যাওয়ার্ডটি ট্যুরিজমের অস্কার হিসেবে পরিচিত।শুধু মাত্র পর্যটন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য এ পুরস্কার দেওয়া হয় ।এ বছর পর্তুগালের পর্যটন নগরী আলগার্ভকে ইউরোপের প্রধান সমুদ্র সৈকত এবং পর্তুগালের সাগরকন্যা আছোরেস দ্বীপ প্রধান রোমাঞ্চকর ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে স্বীকৃত পেয়েছে।শুধু তাই নয় পর্তুগালে আনাচকানাচে ছড়িয়ে আছে চোখজুড়ানো,মনভরানো সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় সব স্থান।

নিম্নে পর্তুগালে পর্যটক প্রিয় কিছু স্থানের নাম তুলে ধরা হলো….
লিসবন: পর্যটকদের জনপ্রিয় শহর লিসবন এর যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত আধুনিক এবং উন্নতমানের। প্রত্যেকটি শহরের মতো এখানে রয়েছে পর্তুগালের কয়েকটি বিখ্যাত সৈকত।তার মধ্যে কারকাভিলাস, কোস্তাকাপারিকা এবং লিসবন শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০ কি.মি দূর সেতুবাল শহরের ট্রয়া সৈকত অন্যতম। ইউরোপের শেষ সীমান্ত কাবোদারোকা এ শহরেই অবস্থিত।কাবোদারোকা থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিলেই গন্তব্য স্বপ্নের দেশ আমেরিকার নিউইয়র্ক শহর।
পর্তু: পর্তুকে বলা হয় বন্দরনগরী। শহরটি ওয়াইন এর জন্য বিখ্যাত। রাতে শহরটিতে শৌখিন মৎস্য শিকারিরা বড়শি দিয়ে মাছ ধরে। যে কেউ চাইলেই মাছ ধরতে পারে না। কারণ এখানকার মিউনিসিপাল থেকে অনুমতি নিয়ে বাৎসরিক একটা ফি পরিশোধ করতে হয়। সৈকতগুলোর মধ্যে প্রায়া দি কারনাইরো, প্রায়া দোমল, প্রায়া ক্যাসেলো দি কেজো, মাতোসিনো, লেসা দিপালমেইরা, মিরামার, প্রায়া দি ফিজেলাস, প্রায়া দিগ্রানজা, এসপিনো অন্যতম। তাছাড়া পর্তুশহরের অ্যারোকা পৌরসভায় উন্মুক্ত করা হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু। যেটির দৈর্ঘ্য ৫১৬ মিটার এবং উচ্চতা ১৭৫ মিটার।

মাদাইরা: ১৫০০ শতাব্দীতে মাদাইরা পর্তুগালের কলোনি হিসেবে যুক্ত হয়। শহরটি স্থানীয় ওয়াইনের জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এ শহরের দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে ঐতিহাসিক পুরাতন কাঠের গীর্জা, ওয়াইনের পার্ক, আকর্ষণীয় নির্জন বন, উঁচু পাহাড়, নুড়ি পাথর বিছানো সৈকত এবং নীল রংয়ের সাগর। তাছাড়া বর্তমান ফুটবল দুনিয়ার বিশ্বসেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর যাদুঘর এবং জন্মস্থান এ শহরেই। সৈকতগুলোর মধ্যে কেলেটা, মাকিকো, প্রাইনহা এবং সেসাল খুবই নামকরা এবং জনপ্রিয়।

আজোর্স দ্বীপ: পর্তুগালের সবচেয়ে বড় দ্বীপ টি আজোর্স। কয়েকটা ছোটছোট দ্বীপ নিয়ে এ দ্বীপ গঠিত। ফ্লোরস দ্বীপ, তেরসেইরা দ্বীপ, সাওমৃগেল দ্বীপ, পর্তুসান্তো দ্বীপ, সাওজর্জ দ্বীপ, ফায়াল দ্বীপ, পিকো দ্বীপ। আজোর্স ভ্রমণের জন্য এক প্রাকৃতিক নৈসর্গিক স্হান, যেখানে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম বিমান এবং জাহাজ। এখানে আছে প্রায়া দিভিটুরিয়া, সমুদ্র সৈকত, ফিশিং গ্রাম, ভিনুদ্যা ভের্দ, আগ্নেয়গিরী, ডলফিন ও তিমি মাছ দেখার জন্য নির্দিষ্ট দ্বীপ, হাইকিং, গুহা, কলম্বাসের প্রাক্তন বাড়ি এবং টাউন হল। সৈকতগুলোর মধ্যে সান্তা বারবারা, আগুয়াদি আলতো, কেলোয়রা, সিলভেইরা, বিসকইটস, রিবেইরা কুইন্তা,সাও লরেন্সা, মস্তাইরস এবং কেন্তো দা আরেইয়া অন্যতম।

You might also like