ছাতকে অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিকের অপসারনের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি কলেজের অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক এর অপসারনের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে স্থানীয় গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্টে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের বি,এ ১ম বর্ষের শিক্ষার্র্থী মো. আলী আশরাফ।লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার ০৫ জানুয়ারী ২০২৩ইং তারিখে ক্লাস করার উদ্দেশ্যে কলেজে যান অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মো: রেজা। শ্রেণী কক্ষে শিক্ষক না থাকায় সে নিচে নেমে আসে। শিক্ষককে নিয়ে আসার জন্য সে অফিস কক্ষের দিকে এগিয়ে যায়। এসময় কলেজের অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক এর সাথে রেজার দেখা হয়। তিনি রেজার কাছে জানতে চান সে কোথায় যাচ্ছে। রেজা জানান, স্যার কে নিয়ে আসার জন্য অফিসে যাচ্ছি। এসময় অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক রেজাকে বলেন তোমার হাটা চলার ধরন তো ভালো না। একথার জের ধরে অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক অন্যান্য শিক্ষকদের ডেকে নিয়ে এসে রেজাকে বেধরক মারপিঠ করে আহত করা হয়। রেজাকে নির্যাতন করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। কিন্ত গর্ভর্নিংবডি ও এলাকাবাসীর তোয়াক্কা না করে অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক থানা পুলিশকে ডেকে এনে জোরপূর্বক রেজাকে পুলিশকে সোপর্দ করেন। খবর পেয়ে কলেজ শিক্ষার্থীরা রেজার উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে ও তার মুক্তির দাবীতে এবং অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিকের অপসারণের দাবীতে গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্ট এলাকায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেন। এরপর গর্ভনিং বডির সদস্য, এলাকাবাসী ও থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে রেজাকে মুক্তি দেওয়া হলে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা সাময়িক প্রত্যাহার করেন।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, সম্প্রতি আব্দুল হক স্মৃতি কলেজের ৫০বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান উদযাপন করা হয়েছে। কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, মহান মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক লুৎফুর রহমান সরকুমকে নিয়ে ওই অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ না করে চরম ভাবে অবমাননা করা হয়েছে। ৫০বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরা প্রবাস থেকে অন্তত ১০ হাজার টাকা করে ফি দিয়ে যোগদানের জন্য ফরম পূরণ করেছেন। এই অনুষ্টানকে কেন্দ্র করে অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক প্রায় ২ কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেন। তিনি যোগদানের পর থেকে এলাকাবাসীকে নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কলেজের আয়-ব্যয়ের হিসাব এমনকি সম্প্রতি কলেজের ৫০বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করেন নাই। সংবাদ সম্মেলনে কলেজ শিক্ষার্থী মো: রেজাকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক সহ সকল শিক্ষকদের অপসারণের দাবী জানানো হয়। দাবীকে আরো জোড়ালো করার কথা উল্লেখ করে বেশকিছু কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়। ০৮ই জানুয়ারী রোজ রবিবার, মুখে কালো কাপড় বেধে অবস্থান কর্মসূচী, ০৯ই জানুয়ারী রোজ সোমবার, বিক্ষোভ মিছিল ও সর্বদলীয় ছাত্র ধর্মঘট, ১২ই জানুয়ারী রোজ বৃহস্পতিবার, মানব বন্ধন কর্মসূচী। এবং দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ড. দিপু মনি, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক এমপি সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সু-দৃষ্টি কামনা করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কলেজের বি,এস,এস ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী ইমদাদুল হক ইমন, ৩য় বর্ষেও শিক্ষার্থী সুহেল আহমদ, এইচ,এস,সি ফল প্রার্থী সুহেল আহমদ প্রমুখ।