জামালগঞ্জে ছোট ভাইয়ের কিল-ঘুষিতে বড় ভাই নিহতঃ ২জন আটক

সিলেট অফিস 
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার পল্লীতে মায়ের নামে আড়াই কেদার বোরো জমির দখল না ছাড়তে ভাইয়ে-ভাইয়ে সংঘর্ষে ছোট ভাইয়ের কিল-ঘুষিতে বড় ভাই নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম মো. হাফিজ উল্লা (৩০)। তিনি উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের কলকৎখাঁ গ্রামের মৃত রাশেদ উল্লাহ‘র ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে, গত ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টায়।
জামালগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, কলকতখাঁ গ্রামের মৃত রাশেদ উল্লাহ ও তাঁর স্ত্রী মালেকা বেগমের ৫ ছেলে রয়েছে। তবে সবাই বিয়ে-শাদি করে পৃথকভাবে সংসার পরিচালনা করে আসছিলেন। পিতা রাশেদ উল্লাহ মৃত্যুর আগে সহধর্মিনী মালেকা বেগমের নামে আড়াই কেদার জমি দলিল করে লিখে দেন। পিতা মারা যাওয়ার পর মাতা ৫ ছেলের মধ্যে কনিষ্ট ছেলে রায়হান মিয়া ও জ্যেষ্ঠ ছেলে ওসমানের ঘরে বসবাস করছিলেন। বেশ কিছুদিন রায়হান ও ওসমান মায়ের ভরণপোষন করার একপর্যায়ে তাদের মাকে তারা ঘর থেকে বের করে দেয়। এ পর্যায়ে মালেকার অপর ৩ সন্তান মো. হাফিজ উল্লাহ, শাহজাহান ও লোকমান পর্যায়ক্রমে তাদের মাকে ভরণপোষন করার অঙ্গীকার করে। প্রথমে ৪নং ছেলে হাফিজ উল্লাহ মাকে তার ঘরে আশ্রয় দেন। এ নিয়ে রায়হান ও ওসমানের দখলে থাকা তাদের মায়ের জমি অপর ৩ ভাই হাফিজ, শাহজাহান ও লোকমান ফেরত দিতে বললে শুরু হয় ভাইদের মধ্যে দ্বন্ধ।
এ নিয়ে গ্রামের সালিশ বৈঠকে উভয়পক্ষকে উপস্থিত হতে সালিশ ব্যক্তিত্বরা নির্দেশ দিলেও রায়হান গংরা সালিশে উপস্থিত না হয়ে উল্টো ভাই হাফিজ গংদের প্রতি ক্ষিপ্ত হন। এই সালিশ বৈঠকের জেরে গতকাল ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার রাতে হাফিজ, শাহাজাহান ও লোকমানের সাথে অপর ২ ভাই ওসমান ও রায়হান এবং একই গ্রামের রায়হানের সমন্ধি আব্দুল লতিফ ও শ্যালক আবু সায়েম মিলে মারামারি শুরু করে। এ সময় রায়হান ও তার শ্বশুড়বাড়ির আত্মীয়রা মিলে হাফিজ উল্লাহকে কিল-ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে মাটিতে ফেলে দেয়। খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজন ও পাড়ার লোকজন হাফিজকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে রাস্তায় তার মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে জামালগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রায়হানের সমন্ধি আব্দুল লতিফ ও শ্যালক আবু সায়েমকে আটক করে। পরে পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ব্যাপারে ভীমখালি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য আখতার হোসেন জানান, মা যখন যে সন্তানের সাথে থাকবেন মায়ের সেই জমিটুকু সেই সন্তানের অধীনে থাকবে এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু রায়হান ও ওসমান তাদের মায়ের সম্পত্তি ছেড়ে দিতে নারাজ। এ নিয়ে তাদের মা মালেকা বেগম গ্রামে সালিশ বৈঠক ডাকায় তার ২ ছেলে রায়হান ও ওসমান ক্ষিপ্ত হয়ে রায়হান তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ডেকে এনে তার বড়ভাই হাফিজ উল্ল্যাহ‘র উপর হামলা চালায় এবং তাদের এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষিতে হাফিজ গুরুতর আহত হন এবং হাসপাতালে যাওয়ার পথে রাস্তায় তিনি মারা যান। তিনি বিষয়টি সঠিক তদন্তসাপেক্ষ দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি প্রশাসনের নিকট দাবি জানান।
জামালগঞ্জ থানার ওসি দিলীপ কুমার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।

You might also like