ডিসেম্বর থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে বোয়িং বন্ধ সিলেট-ঢাকা রুটে বিমানের টিকেট সংকটঃ মূল্যও চড়া

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ টিকেট সংকটের পাশাপাশি চড়া মূল্যের কারণে সিলেট-ঢাকা রুটের বিমানযাত্রীরা অনেকটাই বিপাকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিমানের বোয়িং-এ করে গত প্রায় এক মাসের অধিক সময় ধরে অভ্যন্তরীণ (ডমেস্টিক) রুটের যাত্রী পরিবহন বন্ধ রয়েছে। যে কারণে সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই সুযোগে বিমানের পাশাপাশি বেসরকারি বিমান অপারেটরগুলোও তাদের টিকেটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।বাংলাদেশ বিমানের জেলা ব্যবস্থাপক মনসুর আহমদ ভুইয়া গণমাধ্যমকে জানান, বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ওসমানীতে আসা ফ্লাইটগুলো ইতোপূর্বে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী পরিবহন করতো। কিন্তু, গত ১ ডিসেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইটগুলো ডমেস্টিক ফ্লাইটের যাত্রীদের পরিবহন করছে না। এ কারণে এ রুটে টিকেটের কিছুটা ক্রাইসিস (সংকট) চলছে। দামও আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। বোয়িং-এ যাত্রী পরিবহন করা গেলে এ সংকট থাকবে না বলে মন্তব্য এ বিমান কর্মকর্তার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানের অন্য একটি সূত্র জানায়, প্রতি সপ্তাহে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিলেট-হিথ্রো ৪টি, সিলেট-ম্যানচেষ্টার ৩টিসহ দুবাই-শারজাহ-জেদ্দা মিলিয়ে মোট ১৫টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অপারেট হয়। ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত এসব ফ্লাইটে অভ্যন্তরীণ রুটের প্রায় ৫ হাজার যাত্রী অপারেট করা যেতো। প্রতিটি বোয়িংয়ের ধারণ ক্ষমতা ছিল প্রায় সাড়ে ৩ শ’র ওপরে। কিন্তু, বর্তমানে ড্যাশ-৮ ও এটিআরসহ যেসব ফøাইট অপারেট হচ্ছে-সেগুলোর যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৬০-৬৫ জন। যে কারণে এ রুটে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।বিমান ও ট্রাভেল এজেন্সী সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বর্তমানে সিলেট-ঢাকা রুটে বাংলাদেশ বিমান ছাড়াও ইউ-এস বাংলা ও নভোএয়ারের ফ্লাইট চলাচল করছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন এ রুটে ১০/১২টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল করলেও এর মাধ্যমে যাত্রীদের টিকেটের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি ও সিপার এয়ার সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী খন্দকার সিপার আহমদ জানান, সিলেট-ঢাকা বিমান রুটে টিকেটের চাহিদা ব্যাপক। যাত্রীদের চাহিদা বিবেচনায় এ রুটে শিগগির বোয়িং চালু করা জরুরী বলে তার মন্তব্য।হজ্জ্ব এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সিলেট চ্যাপ্টারের সভাপতি জহিরুল কবির চৌধুরী শীরু জানান, এবার দেশে প্রবাসীদের ব্যাপক আগমনের কারণে অভ্যন্তরীণ রুটে টিকেটের কিছুটা সংকট চলছে। এ রুটে ফ্লাইট পরিচালনাকারী অপারেটরগুলোর ৮০ পার্সেন্ট টিকেট বুকড্ হয়ে গেলে বাকি ২০ পার্সেন্ট টিকেটের প্রাইস আপ (দাম বৃদ্ধি) হয়ে যাচ্ছে। পিক টাইমের কারণে টিকেটের ক্রাইসিস বলে তার মন্তব্য। এ রুটে ডমেস্টিক ফ্লাইট বৃদ্ধি তারও দাবি।এ রুটের যাত্রী সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক আবাসন ব্যবসায়ী মুহাম্মদ মুনতাসির আলী জানান, তিনি নিয়মিত এ রুটে চলাচল করেন। কিন্তু, প্রায়শ টিকেটের সংকট লেগে থাকে। এ সংকট উত্তরণে সংশ্লিষ্ট সকলের পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী বলে তিনি মন্তব্য করেন।সম্প্রতি ওসমানী বিমানবন্দরে আয়োজিত গণশুনানীতে মি: শাফি নামের এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী যাত্রী জানান, ঢাকা থেকে বিমানের এক ফ্লাইটের একটি টিকেট সম্প্রতি তাকে ১০ হাজার টাকা মূল্যে কিনতে হয়েছে। একই অনুষ্ঠানে অনলাইন পোর্টাল দৈনিক সিলেট সম্পাদক কবি মুহিত চৌধুরীও বিমানের টিকেটের উচ্চমূল্যের বিষয়ে আলোকপাত করেন। এছাড়া, সিলেট চেম্বারের উদ্যোগে আয়োজিত সিলেটের আঞ্চলিক উন্নয়ন নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে বিমানের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচিত হয়। প্রসঙ্গত, বর্তমানে সিলেট থেকে ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে বিমানের ফ্লাইট অপারেট হচ্ছে।

You might also like