ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে টেলিকম ফার্মের অর্থ আত্মসাতের তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ নোবেল শান্তি বিজয়ী এবং ক্ষুদ্রঋণ অগ্রগামী মুহাম্মদ ইউনূসের একটি টেলিকম ফার্মে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে। গত ২৮ জুলাই ২০২২ দেশের দুর্নীতি দমন কমিশন এ কথা জানিয়েছে। ২৯ জুলাই গত শুক্রবার নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রবর্তক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি টেলিকম ফার্মে আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশন এই তথ্য জানিয়েছে।ভারতের এএনআই, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা পোস্ট,ও পাকিস্তানের ডেইলি টাইমস পত্রিকায় এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।

ইউনূস (৮২) দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রচেষ্টার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত হয়েছেন, কিন্তু শ্রম বিরোধ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দীর্ঘ দিনের বিরোধের কারণে দেশে তার খ্যাতি কলঙ্কিত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন বলেছে, তারা অর্থনীতিবিদ এবং গ্রামীণ টেলিকম (জিটি) বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘কমিশন গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে কারখানা পরিদর্শন বিভাগের অভিযোগ পর্যালোচনা করেছে এবং তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ টেলিকম বোর্ডের বিরুদ্ধে ২৯ দশমকি ৭৭ বিলিয়ন টাকা লন্ডারিং ও আত্মসাৎ এবং শ্রম কল্যাণ তহবিলের জন্য আরও ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করার অভিযোগ রয়েছে। ইউনূসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের শ্রম আইনে সকল প্রতিষ্ঠানকে কর্মচারীদের পাঁচ শতাংশ লাভের অংশ দিতে হবে। গ্রামীন টেলিকম অসন্তুষ্ট কর্মচারীদের দীর্ঘকাল ধরে চলমান আইনি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিতে সম্মত হওয়ার কয়েক মাস পর তদন্ত শুরু হয়। যারা ১০০ টিরও বেশি মামলা দায়ের করেছিল দাবি করে তারা অর্থপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার। গ্রামীণ টেলিকম বাংলাদেশের বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে বহু বিলিয়ন ডলারের শেয়ারের মালিক। তিনি ১৯৮০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ গ্রামীণ নারীদের ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে বাংলাদেশের চরম দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়তা করার জন্য কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার কাজের জন্য তিনি ২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। কিন্তু বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় সেলিব্রিটি বক্তা হিসেবে তার মর্যাদা থাকা সত্ত্বেও, ইউনূস সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। ২০১১ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। আদালতে তার অপসারণের চ্যালেঞ্জে হেরে যান এবং শেক হাসিনা সরকারের দ্বারা কঠোর সমালোচিত হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে উচ্চ সুদের হারে দরিদ্রদের ‘রক্ত চুষে’ খাওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছিলেন। ড. ইউনূস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা নিয়েও পদ্মা সেতু নির্মাণে বাধাগ্রস্ত করতে বিশ্বব্যাংকের দ্বারস্থ হয়েছেন। এই সেতুর জন্য বিশ্বব্যাংকের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ বাতিলের সিদ্ধান্তের জন্য ইউনূসকে দায়ী করেছেন শেখ হাসিনা। ইউনূস ক্রমাগতভাবে প্রজেক্টে ঋণদাতার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার কথা অস্বীকার করেন। বিশ্ব ব্যাঙক পদ্মা সেতুতে দূর্নীতি হয়েছে অভিযোগ এনে সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করে দিলে প্রধানমন্ত্রী ইস্পাতকঠিন মনোবল নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কয়েক বছর ধরে নির্মান কাজ চলার পর অবশেষে গত ২৫ জুন সেতুটি খুলে দেওয়া হয়েছিল যানবাহন চলাচলের জন্য। শেখ হাসিনা ইউনূসকে ‘নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া উচিত’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।

You might also like