দূরদৃষ্টিহীন-অপরিকল্পিত নগরায়নে দূর্ভোগকবলিত নগরবাসী
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ সিলেট নগরির উন্নয়ন যে অপরিকল্পিতভাবে হচ্ছে, তা নিয়ে অভিযোগ অনেক পুরানো। বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি, আলোচনা-সমালোচনা হলেও কুম্ভকর্ণের নিদ্রা আর ভাঙেনি। তারই খেসারত দিচ্ছেন এখন নগরবাসী। সামান্য বৃষ্টিতেই হাবুডুবু খেতে হচ্ছে। দূর্ভোগকবলিত এই অসহায় নগরবাসী কিভাবে মুক্তি পাবে?
গত ৩ দিনের বৃষ্টিতে নগরবাসী হাবুডুবু খাচ্ছেন। রাস্তাঘাট-বাসাবাড়িতে হাঁটু পানি। নগরির হাউজিং এস্টেট, উপশহরের মতো অভিজাত এলাকায় অনেকের ঘরে হাঁটুপানি দেখা গেছে।
মেডিকেল রোড, ওসমানী মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণ, উপশহর, দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোড, স্টেশন রোডের বিভিন্ন সড়কে কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও বা তার উপরে।
এমন দুর্ভোগ ও দুর্যোগের জন্য সচেতন নগরবাসী দায়ী করছেন মহানগরির অপরিকল্পিত উন্নয়নকে। বিশেষ করে সিলেট সিটি করপোরেশনের বাস্তবায়নকৃত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কোনোটাই পরিকল্পিতভাবে করা হয়নি। যা হয়েছে, সবই তাড়াহুড়ো করে যেনোতেনো প্রকারে। আর তারই খেসারত দিতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
তাদের মতে, এবারের আগেও সামান্য বৃষ্টিতে নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। তখন সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী যুক্তি দিতেন, নদীর পানির লেভেল অনেক উপরে চলে এসেছে। ড্রেনের পানি নামতে না পারায় এই জলাবদ্ধতা।
কিন্তু এবার সুরমার পানি কিন্তু অনেক নিচে। তবুও এই জলাবদ্ধতা নিয়ে হতাশ সচেতন নগরবাসী। তারা সমালোচনায় মুখর।
তাদের মতে, সময়মতো প্রকল্পের কাজ না করা, যাচ্ছে তাই রকম ড্রেন তৈরি, ছড়া খাল উদ্ধার ও খনন না করার খেসারত সাধারণ মানুষ দেবে কেন? সরকার প্রচুর টাকা বরাদ্দ দিলেও তার সদ্ব্যবহার করা হয়নি। তাদের দাবি, নগরবাসীর জলজট মুক্তির সঠিক ও কার্যকর উপায় দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে।
এদিকে, সাধারণ মানুষের এমন দুর্ভোগ ও দুর্দশায় সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্টরা কুটনৈতিক কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। এতদিন তাদের বক্তব্য ছিল, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হয়ে গেলে বা কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা আর থাকবে না। এখন তাদের জবাব অন্যরকম। তারা এখনো স্টাডি করছেন।
যেমন প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেছেন, আগে বৃষ্টির পানি মাটি ধারণ করে নিতো। সিলেটে আরবানাইজেশনের কারণে এখন সেই পানি গড়িয়ে নামতে হয়। নগরির বেশিরভাগ পানি ড্রেন দিয়ে নিষ্কাশন হয়। অল্প বৃষ্টিতে নগরির বাসা-বাড়িতে পানির ওঠার বিষয়টি নিয়ে আমরা ফিজিবিলিটি স্টাডি করেছি। এখন নিচু এলাকার পানি নিষ্কাশন করতে হবে। আর সুরমার পানি যাতে প্রবেশ না করে, সেজন্য স্লুইসগেট স্থাপন করতে হবে।
তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, এভাবেই তারা সিলেটবাসীর দুর্ভোগ নিরসনে কাজ করছেন!