ধানে মাজরা পোকার আক্রমণে কৃষককূল দিশেহারা
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ হবিগঞ্জের মাধবপুরে আমন ধানের ক্ষেতে ব্যাপকভাবে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। মাজরা পোকা দমনে ব্যর্থ হওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পোকা দমন বা নিধনে উপজেলা কৃষি অফিসের কোনো ধরণের সহায়তা পাচ্ছেন না বলে কৃষকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
মাধবপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ মৌসুমে উপজেলার প্রায় ১২ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদ হয়েছে।
মাধবপুর থেকে সংবাদদাতা জানান, উপজেলার মাধবপুর পৌরসভা, বহরা, আদাঐর, আন্দিউড়া, জগদীশপুর,নোয়াপাড়া ইউনিয়নের খড়কী, হালোপাড়া, বুল্লা, রামপুর আলাকপুর, মিঠাপুকুর, বেজুড়াসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় সব জমির আমন ধানের গাছে ব্যাপকভাবে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে।
মাজরা পোকার আক্রমণের কারণে অধিকাংশ ধান গাছের পাতা মরে হলুদ রং ধারণ করেছে। কোনো কোনো জমির ধানগাছ প্রায় পাতাশূন্য মাটিতে মিশে যাচ্ছে। মাজরা দমনে কৃষকেরা বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো ধরণের সুফল পাচ্ছেন না।
আলাকপুর গ্রামের কৃষক নানু মিয়া বলেন, এ বছর তিনি প্রায় ৫ বিঘা জমিতে ব্রি-৩৩ জাতের আমন ধান চাষ করেছেন। তারসহ গ্রামের অধিকাংশ কৃষকের জমিতে ব্যাপকভাবে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। পোকা দমনের জন্য প্রায় সব কৃষক দানাদার ও তরলজাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করছেন, কিন্তু কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না মাজরার আক্রমণ।
একই গ্রামের কৃষক চমক মিয়া অভিযোগ করেন, তাঁরা ধান নিয়ে চরম বিপদে থাকলেও উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কেউ তাদের খোঁজ-খবর নেননি।
একই অভিযোগ করে কৃষক ফরুক মিয়া বলেন, তাদের গ্রামে ফসলের দেখভালের জন্য যাকে দায়িত্ব দেয়া আছে, বেশিরভাগ কৃষক তাকে চেনেন-ই না। এ কারণে পোকা দমনে তারা কোনো সাহায্য ও সহযোগিতা পাচ্ছেন না।
আলাকপুর গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর মিয়া জানান, মাঠে আমন ধানের গাছে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে। ওষুধ বিক্রেতাদের পরামর্শে ফুরাডান, ভিরতাগো কিংবা আলটিমা প্লাস দিয়েও কোন উপকার পাচ্ছি না। পোকা দমন করা না গেলে ধানের ফলনে বড় ধরণের প্রভাব পড়বে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান জানান, যেসব এলাকায় আমন ধানক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমণের কথা বলা হচ্ছে, সেই এলাকার কিছু কৃষক বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। ওই এলাকায় কৃষি অফিস থেকে দ্রুত অফিসার পাঠিয়ে মাজরা দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। উপজেলায় মোট কৃষি ব্লক আছে ৩৬টি কিন্তু অফিসার আছে মাত্র ২৩ জন। অফিসার স্বল্পতার কারণে আমরা কাঙ্খিত সেবা দিতে পারছি না।