নির্মূল কমিটির আলোচনায় স্পীকার: ‘৭২-এর সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের সম্পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেছিল’
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গত ৩২ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর সংবিধানের মূল চেতনা পুনঃপ্রবর্তনের জন্য আন্দোলন করছে।নির্মূল কমিটি প্রতি বছর ৪ নবেম্বর ‘সংবিধান দিবস’ পালন করে। এ বছর বিশেষ কারণে নির্মূল কমিটি ৪ নবেম্বরের পরিবর্তে ৫ নবেম্বর ‘সংবিধান দিবস’-এর অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। আজ ৫ নবেম্বর (২০২৩), বিকেল ৩টায় ৫২তম সংবিধান দিবস উপলক্ষে নির্মূল কমিটির উদ্যোগে সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে ‘১৯৭২-এর সংবিধান: বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের দর্পণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি।আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদান করেন মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল এডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান এডভোকেট মো. মোখলেসুর রহমান বাদল, পোল্যান্ড-এর নেভার এগেইনের সভাপতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. রাফাল প্যানকোভস্কি এবং নেভার এগেইনের সদস্য মানবাধিকার নেতা নাটালিয়া সিনায়েভা প্যানকোভস্কা। সভা সঞ্চালনা করেন এডভোকেট আজহার উদ্দিন ভূঁইয়া।
সভার প্রধান অতিথি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ’৭২-এর সংবিধনের পটভূমি বর্ণনা করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় গণপরিষদ কর্তৃক ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর সংবিধান প্রণয়ন ও গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর কার্যকর হয়। যা সংসদীয় গণতন্ত্র এবং সাংবিধানের প্রতি বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় অঙ্গীকারের সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ। জাতির পিতা সংবিধানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন বিধায় তাঁর নির্দেশনায় গণপরিষদ এক বছরেরও কম সময়ে একটি অসাধারণ সংবিধান প্রণয়ন করতে সক্ষম হয়েছিল। ইতিহাসে আমরা দেখতে পাই, অন্যান্য দেশগুলি সংবিধান প্রণয়ন করতে বহু বছর সময় নিয়েছে।মাননীয় স্পীকার আরো বলেন, ‘১৯৭২ সালের বাংলাদেশের সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের সম্পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর একটি ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে তিনি এই সংবিধান রচনা করেছিলেন। সংবিদানের তৃতীয় ভাগে রয়েছে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি যেখানে বঙ্গবন্ধুর দর্শন স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। সেখানে নারী-পুরুষ, শিক্ষা-দীক্ষা, অধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে। সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ এবং তাদের মতামত ছাড়া কোন কিছুই করা সম্ভব নয় এটা বুঝেই বঙ্গবন্ধু সংবিধান রচনা করেছেন।’
নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘৩০ লক্ষ শহীদের আত্মদান এবং প্রায় ৫ লক্ষ মা-বোনের চরম ত্যাগের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদানকারী তাঁর সহযোগীরা জাতিকে যে সংবিধান উপহার দিয়েছেন সেটি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান হিসেবে স্বীকৃত। এই সংবিধানে রাষ্ট্রের চার মূলনীতি হিসেবে গৃহীত হয়েছে- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ; যা ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূর্ত রূপ। এই চার নীতি অন্য অনেক আধুনিক রাষ্ট্রের সংবিধানে থাকলেও ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে লেখা ১৯৭২-এর ৪ নবেম্বর গৃহীত বাংলাদেশের মূল সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিকে নিশ্চিত করার জন্য ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কারণ মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশে যাবতীয় গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল ধর্মের দোহাই দিয়ে। শুধুু ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে নয়, বর্তমানে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বে ইসলামের নামে যে ভয়াবহ সন্ত্রাস ও হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হচ্ছে তার আদর্শিক প্রণোদনা হচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর ‘মওদুদিবাদ’, তথা ‘ধর্মের নামে রাজনীতি’। জামায়াত ’৭১-এ যেভাবে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধসহ মানবতাবিরোধী যাবতীয় অপরাধকে ইসলামের নামে বৈধতা দিয়েছিলÑ তারা এবং তাদের দেশী-বিদেশী সহযোগীরা এখন নির্বাচন বানচালের জন্যও তাই করছে, যে কারণে জামায়াত গং-এর সন্ত্রাসী রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের কোনও বিকল্প নেই।মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘’৭২-এর সংবিধানের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো স্পষ্ট মুদ্রণ দ্বারা ধর্ম নিরপেক্ষতার নিশ্চয়তা। পৃথিবীর অনেক দেশেই ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে থাকে বাস্তবতায়। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানের ১২