পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে সাগরকন্যার দেশ পর্তুগাল

শাহ মোহাম্মদ তানভীর
সত্যবাণী

পর্তুগাল: ইউরোপের মধ্যে পর্যটকদের আকর্ষণীয় একটি দেশ পর্তুগাল।আটলান্টিক সাগর ঘেঁষে দেশটির অবস্থান। ফলে দেশটিতে রয়েছে বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত তাই দেশটিকে অনেকেই ‘আটলান্টিক পারের রূপসী কন্যা’ বলে ডাকেন ।বর্তমানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় পর্তুগালের করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় পর্যটকদের পদভারে মুখরিত পর্তুগালের বিস্তীর্ণ সৈকত গুলো ।
শুধু মাত্র ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট আর কোয়ারেন্টিন মুক্ত ভ্রমনের ফলে বর্তমানে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে গ্রীষ্মের ছুটি কাটাতে পর্যটকদের আগমন চোখে পড়ার মতো ।বিশে^র অন্যান্য দেশের তুলনায় পর্তুগালের করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভিবিক হওয়ায় ইউরোপের সেরা গন্তব্য ওয়েবসাইটের ব্যবহারকারীরা পর্তুগালকে তাদের প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিয়েছেন।  পর্তুগালে পর্যটকদের পচ্ছেন্দের কয়েকটি শহরের বিবরন তুলে ধরা হল ।

লিসবন : পর্যটকদের পচ্ছন্দের প্রথমেই রয়েছে পর্তুগালের রাজধানী পর্যটকদের জনপ্রিয় শহর লিসবন এর যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত আধুনিক এবং উন্নতমানের। প্রত্যেকটি শহরের মতো এখানে রয়েছে পর্তুগালের কয়েকটি বিখ্যাত সৈকত। তার মধ্যে কারকাভিলাস, কোস্তাকাপারিকা এবং লিসবন শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০ কি.মি দূর সেতুবাল শহরের ট্রয়া সৈকত অন্যতম। ইউরোপের শেষ সীমান্ত কাবোদারোকা এ শহরেই অবস্থিত। কাবোদারোকা থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিলেই গন্তব্য স্বপ্নের দেশ আমেরিকার নিউইয়র্ক শহর।

পর্তু: পর্তুকে বলা হয় বন্দরনগরী। শহরটি ওয়াইন এর জন্য বিখ্যাত। রাতে শহরটিতে শৌখিন মৎস্য শিকারিরা বড়শি দিয়ে মাছ ধরে। যে কেউ চাইলেই মাছ ধরতে পারে না। কারণ এখানকার মিউনিসিপাল থেকে অনুমতি নিয়ে বাৎসরিক একটা ফি পরিশোধ করতে হয়। সৈকতগুলোর মধ্যে প্রায়া দি কারনাইরো, প্রায়া দোমল, প্রায়া ক্যাসেলো দি কেজো, মাতোসিনো, লেসা দিপালমেইরা, মিরামার, প্রায়া দি ফিজেলাস, প্রায়া দিগ্রানজা, এসপিনো অন্যতম। তাছাড়া পর্তুশহরের অ্যারোকা পৌরসভায় উন্মুক্ত করা হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু। যেটির দৈর্ঘ্য ৫১৬ মিটার এবং উচ্চতা ১৭৫ মিটার।

আলগার্ভ: বাণিজ্যিক শহর আলগার্ভ লিসবন থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে। পর্তুগালের দীর্ঘতম সৈকতগুলো এ শহরেই অবস্থিত। শহরটি বসবাসের জন্য অনেক ব্যয়বহুল। কারণ শহরটি গল্ফ রিসোর্ট, হোটেল, মোটেলের জন্য বিখ্যাত। দীর্ঘতম সৈকতগুলোর মধ্যে প্রায়া দি ডোনাআনা, প্রায়া দোকামিলো, প্রায়া দামারিনহা, প্রায়া দাফালোজিয়া এবং প্রায়া দা রোকা অন্যতম। তাছাড়া সাগরের সৌন্দর্য যে কাউকেই বিমোহিত করে তুলবে। স্থানটি পর্তুগালে শেষ সীমান্ত হিসেবেও জনপ্রিয় এবং চিহ্নিত।

মাদাইরা: ১৫০০ শতাব্দীতে মাদাইরা পর্তুগালের কলোনি হিসেবে যুক্ত হয়। শহরটি স্থানীয় ওয়াইনের জন্য খুবদ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এ শহরের দর্শনীয় স্হান গুলির মধ্যে ঐতিহাসিক পুরাতন কাঠের গীর্জা, ওয়াইনের পার্ক, আকর্ষণীয় নির্জন বন, উঁচু পাহাড়, নুড়ি পাথর বিছানো সৈকত এবং নীল রংয়ের সাগর। তাছাড়া বর্তমান ফুটবল দুনিয়ার বিশ্বসেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর যাদুঘর এবং জন্মস্থান এ শহরেই। সৈকতগুলোর মধ্যে কেলেটা, মাকিকো, প্রাইনহা এবং সেসাল খুবই নামকরা এবং জনপ্রিয়।

আজোর্স দ্বীপ: পর্তুগালের সবচেয়ে বড় দ্বীপ টি আজোর্স। কয়েকটা ছোটছোট দ্বীপ নিয়ে এ দ্বীপ গঠিত। ফ্লোরস দ্বীপ, তেরসেইরা দ্বীপ, সাওমৃগেল দ্বীপ, পর্তুসান্তে দ্বীপ, সাওজর্জ দ্বীপ, ফায়াল দ্বীপ, পিকো দ্বীপ। আজোর্স ভ্রমণের জন্য এক প্রাকৃতিক নৈসর্গিক স্হান, যেখানে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম বিমান এবং জাহাজ। এখানে আছে প্রায়া দিভিটুরিয়া, সমুদ্র সৈকত, ফিশিং গ্রাম, ভিনুদ্যা ভের্দ, আগ্নেয়গিরী, ডলফিন ও তিমি মাছ দেখার জন্য নির্দিষ্ট দ্বীপ, হাইকিং, গুহা, কলম্বাসের প্রাক্তন বাড়ি এবং টাউন হল।সৈকতগুলোর মধ্যে সান্তা বারবারা, আগুয়াদি আলতো, কেলোয়রা, সিলভেইরা, বিসকইটস, রিবেইরা কুইন্তা, সাও লরেন্সা, মস্তাইরস এবং কেন্তো দা আরেইয়া অন্যতম।

You might also like