পাকিস্তানে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার আত্মীয় কর্তৃক হিন্দু পরিবারকে মারপিট ও হত্যার হুমকী
মতিয়ার চৌধুরী
সত্যবাণী
লন্ডনঃ সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে জন্ম নেয়া পাকিস্তানে হিন্দু ধর্মালম্বীরা কোন দিনই শান্তিতে নেই। পাকিস্তান জন্মের পর থেকে ক্রমাগতভাবে অন্যান্য ধর্মের মানুষ উগ্রপিন্থী মুসলিমদের দ্বারা হয়রারিন শিকার হয়ে আসছে। শুধু হিন্দু-বৌদ্ধ বা শিখ ধর্মালম্বীরাই নয় । সংখ্যালঘু শিয়া এবং আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতিনিয়ত নিরযাতিত হয়ে আসছে। পাকিস্তানের উগ্রবাদীরা মনে করে পাকিস্তানে ওয়াহাবী মতাদর্শের মুসলিম ছাড়া আর কারো বসবাসের অধিকার নেই। পাকিস্তানের সরকারও মাইনরিটি সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। জোর করে হিন্দু মহিলাদের মুসলিমদের সাথে বিবাহ দেয়া কোন নতুন ঘটনা নয়। পাকিস্তান ভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংগঠনের তথ্য মতে ২০০৭ থেকে এযাবত ১১৭জন হিন্দু যুবতীকে জোর করে মুসলিমদের সাথে বিবাহ দেয়া হয়েছে। জোর করে অন্যান্য ধর্মালমবীদের সম্পদ দখলের ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে পাকিস্তানে। পাকিস্তানের ভিন্নধর্মালম্বীরা নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। এনিয়ে বিশ্বগণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় সংবাদ প্রকাশ হলেও সরকারীভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা বিধানে কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। সাম্প্রতিক একটি ঘটনা বিশ্বব্যাপী নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পাকিস্তানের একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার আত্মীয় দ্বারা একটি হিন্দু পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে। পরিবারটিকে হত্যার হুমকী দেয়া হচ্ছে প্রকাশ্যে। পাকিস্তানের প্রভাব শালী দৈনিক ’’ডন’’ এবং কাশ্মির নিউজ ও এক্সপ্রেস টিউবিনের খবরে জানা যায় গেল রবিবার সন্ধ্যায় একজন প্রভাবশালী রাজনীতিকের আত্মীয় এবং তার সহযোগীরা একটি হিন্দু পরিবারকে আক্রমণ করেছে যখন পরিবারটি তার গাড়িকে ওভারটেক করার চেষ্টা করেছিল, দেশটির স্থানীয় মিডিয়া সোমবার পাকিস্তান পুলিশের বরাত দিয়ে তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়, ওই এলাকার একটি মন্দির রাহারকি সাহেব থেকে ফেরার সময় মিরপুর মাথেলো থানার রেমিটের মধ্যে ঘোটকির কাছে একটি রেস্তোরাঁয় তাদের উপর হামলা করা হয়। ওই পরিবারের একজন আত্মীয় বলেছেন যে তারা একটি রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করার পরে এই ঘটনা ঘটে।স্থানীয় রাজনীতিকের চাচাতো ভাই, শমসের হিন্দুপরিবারের গাড়িকে বারবার ওভারটেক করতে ব্যর্থ হয়ে ওই পরিবারের গাগাড়িকে অনুষরণ করে, এই গাড়িটি নিদৃষ্ট স্থানে থামলে তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এই হামলা থেকে রেহাই পায়নি শিশু এবং মহিলারাও। মিডিয়ার সাথে কথা বলার সময়, একজন পুলিশ অফিসার বলেন, “স্পষ্টতই, পরিবারের গাড়িটি যখন হাইওয়েতে পিটাফির গাড়িকে ওভারটেক করে, তখন একজন শিশু একটি আইসক্রিমের মোড়ক বাইরে ফেলে দেয়৷ , যা পিটাফির ভিগো গাড়ির উইন্ডশিল্ডে আঘাত করেছিল এবং তিনি বিরক্ত হয়েছিলেন যে পরিবারটি থামেনি এবং দ্রুত চলে যায়।“পরিবারের খোঁজ করে প্রায় এক ডজন পুরুষ রেস্টুরেন্টে পৌঁছে। তারা গাড়িটি ভাঙচুর করে এবং গাড়িতে উপস্থিত অজয় কুমারকে পিঠিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করে। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এমএনএ খেল দাস কোহিস্তানি বলেছেন, হামলাকারীরা মহিলাদের সাথেও খারাপ ব্যবহার করেছে।”সিন্ধু পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে। একজন মানবাধিকার কর্মী জানান এই আশ্বাস কোন দিনই আলোর মুখ দেখবেনা।