পানিবন্দী লাখো মানুষঃ জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
সিলেট অফিস
সত্যবাণী
ভারতের বরাক নদী দিয়ে আসা পাহাড়ী ঢলে জকিগঞ্জের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে ডাইক ভেঙে এক মাসের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে অবনতি হচ্ছে।
২ জুলাই মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ছবড়িয়া, রারাই, বাখরশাল, পৌর এলাকার নরসিংহপুরসহ কয়েকটি এলাকায় ডাইক ভেঙে ও উপচে নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় প্রায় ৮৫টি গ্রামের লাখো মানুষ চরম দুর্ভোগকবলিত হয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী ৩ জুলাই বুধবার বিকেল পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ক্রমশঃ পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জকিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে জকিগঞ্জ পৌর এলাকার একটি অংশসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পরপর ৩বার বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের লোকজনের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বন্যাকবলিত এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ গোরস্তানসহ গ্রামীণ রাস্তাঘাট এবং শেওলা-জকিগঞ্জ সড়কের একটি অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। চলমান পরিস্থিতিতে রান্না করা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, পানিবাহিত রোগবালাই ও গবাদিপশুর খাবার সংকটে চরম দুর্ভোগে বানভাসিরা।
বানভাসিরা জানান, জুন মাসের বন্যায় যে ডাইকগুলো ভেঙে ছিলো ওগুলো ইউপি চেয়ারম্যান মেরামত করলেও আবারও পানি বাড়ার কারণে ভেঙে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সময়মতো ডাইক সংস্কার না করায় একের পর এক বন্যার ধকলে তারা চরম ক্ষতিগ্রস্ত। গৃহপালিত পশুপাখি নিয়েও চরম বিপাকে রয়েছেন।
ছবড়িয়া গ্রামের জীবান উদ্দিন সেতু মিয়া বলেন, ডাইকের পাশে তার বাড়ি ছিলো। পানির স্রোতে ঘর ভেঙে ভেসে গেছে। পরিবার সদস্যদের নিয়ে এখন অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
জকিগঞ্জের ইউএনও আফসানা তাসলিম জানান, এখন পর্যন্ত উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়েছেন। ৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে রয়েছে প্রশাসন। জুন মাসের ৩০ তারিখে প্রতিটি ইউনিয়নে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ওই বরাদ্দ এখন বিতরণ করা হবে। নতুন করে চাহিদা পাঠানো হবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।