পার্বত্য চট্রগ্রামে সহিংসতা বন্ধ ও জাতিগত নির্মল প্রতিরোধে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে জুম্মা পিপলস নেটওয়ার্কের প্রতিবাদ সমাবেশ
মতিয়ার চৌধুরী
সত্যবাণী
লন্ডনঃ বাংলাদেশের পার্বত্য চট্রগ্রামে আদিবাসী জনগোষ্টী গুলোকে জাতিগত ভাবে নির্মূল করার চক্রান্ত এবং সাম্প্রতিক সহিংতার প্রতিবাদে জুম্মা পিপলস নেটওয়ার্ক ইউকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল, ব্রিটিশ মানবাধিকার সংগঠন সারভাইভাল ও ফ্রেন্ডস অব চিটাগাং হিলটেক্ট (সিটিএইচ) সহ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে শান্তিপূর্ন প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। ব্রিটেনে বসবাসরত আদিবাসী ডায়াসপারা কমিউনিটির শতাধিক নারী-পুরুষ শিশু ব্রিটেনের বিভিন্ন শহর থেকে এসে এই সমাবেশে যোগ দেয়। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং সাধারন ব্রিটিশ নাগরিকরাও।
শনিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৪ লন্ডন সময় দুপুর ১টা ত্রিশ থেকে বিকেল তিনটা পযর্ন্ত শান্তিপূর্ন এই প্রতিবাদ সমাবেশে কয়েক শত মানুষ অংশ নেয়। এছাড়াও তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করে সমাবেশে যোগদেয় ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর স্যাকুলার বাংলাদেশ, ইউকে এবং ইউরোপসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন।
জুম্মা পিপলস নেটওয়ার্ক ইউকে বাংলাদেশে চলমান মানবিক সংকট নিরসন ও অদিবাসী নিধন বন্ধে ব্রিটিশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার ষ্টারমার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়ে আদিবাসী নেতৃবৃন্দ বলেন যুগ যুগ ধরে বাংলদেশের আদিবাসীরা অত্যাচিারিত হয়ে আসছে। ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আদিবাসীদের উপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেছে কয়েকগুন। আদিবাসীদের জন্মভূমি ও বসত ভিটে থেকে উচ্ছেদ করতে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তরবর্তি কালীন সরকার গভীর ষঢ়যন্ত্র করছে। আদিবাসীদের উপর বাঙ্গালী সেটেলারদের হামলা লুটপাট ও সেনাবাহিনীর অত্যাচারে আদিবাসীরা আতংকে দিন কাটোচ্ছে। এযাবত ১০ জনেরও বেশী আদিবাসীকে হত্যা করেছে সেটেলার বাঙালীরা প্রতিদিনই আদিবাসীদের বাড়ী ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্টানে হামলা হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিনা কারনে আদিবাসীদের হয়রানি করছে।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে এযাবত সেটেলার বাঙ্গালী ও সেনাবাহিনী মিলিয়ে শতাধিক আদিবাসী সম্প্রদয়ের বাড়ী ও দোকান আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। চারজন নীরিহ আদিবাসীকে প্রকাশ্যে হত্যা করেছে। সেটেলার বাঙ্গালীদের হামলায় ৫০ জনেরও বেশী আদিবাসী নারী পুরুষ আহত হয়েছেন। জোরপূর্ব আদিবাসী নারীদের সেনাবাহিনী ও সেটেলার বাঙ্গালীরা র্যাপ করছে। প্রতিদিনই আদিবাসী নারীরা ধর্ষনের শিকার হচ্ছে।
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খাগড়াছড়ি এবং দিঘিনালা, ২০ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটি ১ অক্টোবর খাগড়া ছড়িতে বাঙ্গালী সেটেলারা আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাড়ী-ঘর ব্যবসা প্রতিষ্টান ধর্মীয় উপাষনালয়ে হামলা করে আদিবাসীদের বসতঘর ব্যবসা প্রতিষ্টান লুটপাটের পর আগুনে পড়িয়ে দিয়েছে। এসব হামলায় শত শত আদিবাসী নারী পুরুষ আহত হয়েছেন।
১৯৮০ সাল থেকে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করতে শুরু হয় অভিযান। কোন সরকারই আদিবাসীদের সাথে ন্যায্য আচরন করেনি। প্রতিদিনই আদিবাসীরা সেটেলার বাঙ্গালীদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। বর্তমান অন্তরবর্তি কালীণ সরকারের সময় সবচাইতে অনিরাদ অবস্থায় রয়েছে আদিবাসীরা। বর্তমান সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে বাঙ্গালী সেটেলাররা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই বাঙ্গালী সেটেলাররা আদিবাসীদের বাড়ী ঘরে হামলা করছে।
১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তি চুক্তি আজও বাস্তবায়িত হয়নি। কোন কারণ ছাড়াই সেনাবাহিনী নীরিহ আদিবাসীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। সমাবেশ শেষে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একটিস্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারক লিপিতে আদিবাসীদের জানমাল রক্ষায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।অুনুষ্টিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুব্রত চাকমা, অভি বড়ুয়া, পবন বড়ুয়া, আশু চাকমা, রেগা চাকমা, জেসি চাকমা,,আনন্দ ভিক্ষু, ভান্তে সুমনশ্রী, জুনসান চাকমা, নিপুন চাকমা, রোমানা হাসেম, এন্ডু পিলিপ, মিঃ মাইকেল প্রমুখ।