পেকুয়ায় লবণমাঠ দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ১৬

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

কক্সবাজার: কক্সবাজারের পেকুয়ায় ১১ একর লবণমাঠ দখলে নিতে প্রতিপক্ষের ছোঁড়া গুলিতে কলেজ ও মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থীসহ ১৬ জন আহত হয়েছেন।এদের মধ্যে ৮ জন নারী রয়েছেন।সোমবার (২৪ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের পূর্ব উজানটিয়া রুপালী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।গুলিবিদ্ধরা হলেন- রুপালী বাজার এলাকার নুরুন্নবীর মেয়ে ও পেকুয়া শহিদ জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজের ছাত্রী আফরোজা (১৮), তার মা মিনা আক্তার (৪৫), নুরুচ্ছফার মেয়ে ও উজানটিয়া এএস সিনিয়র মাদ্রাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী কাসফা (১৮), ছেলে কফিল উদ্দিন (২২), জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী জেয়াসমিন আক্তার (৩০), মৃত আবুল কাসেমের ছেলে আমজাদ (২২), হাসান আলীর ছেলে বেলাল উদ্দিন (৩২), তার ভাই ছরওয়ার (৩০), বারেকের স্ত্রী রীনা আক্তার (৩০), পেঠানের স্ত্রী কুলসুমা (৩৫), মৃত গুরামিয়ার পুত্র আহমদ হোসেন (৭৭), আহমদ নবীর স্ত্রী বুলু আক্তার (৩০), আহমদ ছবির স্ত্রী হামিদা বেগম (৪০), হাকিম আলীর পুত্র তৌহিদ (৩৫), মৃত আলী হোসেনের পুত্র আবুল কালাম (৮০) ও মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র হাসান আলী (৬০)।

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক আমজাদ, হামিদা বেগম, হাসান আলী ও কফিল উদ্দিনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১১ একর লবণমাঠ নিয়ে রুপালী বাজার এলাকার কালা মিয়া, খুইল্যা মিয়া ও আলী হোসেন গংদের সঙ্গে একই ইউপির মালেক পাড়ার জাফর আলম, আবু তাহের, মনির আহমদ ও আরিফ আহমদ গংদের বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি দুপক্ষের বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তের পর একটি পক্ষ ওই জমি দখলের পায়তারা শুরু করে। ঘটনার দিন সকালে একদল অস্ত্রধারী লোক এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে রুপালী বাজার পাড়ায় হাবিব উল্লাহ বাপের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এসময় অস্ত্রধারীর ছোঁড়াগুলিতে অন্তত ১৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এমনকি সন্ত্রাসীরা এনজিও কর্মী আবিদের বাড়ি আগুন দিয়ে জালিয়ে দেয়। পরে খবর পেয়ে এলাকার লোকজন জড়ো হতে থাকলে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি ছুটতে ছুটতে পালিয়ে যায়। তারা অন্তত ১৫ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে।

আহতদের স্বজন আহমদ ছবি ও রোহেনা আক্তার বলেন, সকালে মালেক পাড়ার সাইফুল, সুমন, আবু সুফিয়ান, জাবেদ, জায়েদ, সায়েদ, আরাফাত, লিমন, ফরহাদ, লুৎফর, নেওয়াজ, ওয়াহিদসহ ২০ থেকে ৩০ জনের অস্ত্রধারী দুদিক থেকে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে। গুলি ছুটতে ছুটতে তারা আমাদের বাড়িতে চলে আসে। এ সময় আমাদের ওপরও গুলি করে। গুলির আঘাতে আমরা ১৬ জন আহত হই। সন্ত্রাসীরা যখন গুলি ছুটতে ছুটতে বাড়ির দিকে আসছিল তখন বিদ্যুৎ চলে যায়। এ সময় চারটি সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। যতক্ষণ তান্ডব চালায় ততক্ষণ বিদ্যুৎ ছিল না। তবে সন্ত্রাসীরা যাওয়ার পরই বিদ্যুৎ আসে।তারা অভিযোগ করেন, আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলেও কোনো রকম সহযোগিতা পায়নি।এদিকে সকালে অস্ত্রধারীদের প্রকাশ্যে তান্ডব ও বন্দুক হাতে নিয়ে গুলি ছোঁড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখে মাস্ক পরিহিত কয়েকজন অস্ত্রধারীরা প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ছে।পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সূত্র: যুগান্তর

You might also like