বরাদ্দের টাকা আসছে না আটকে গেছে মনু নদীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ বরাদ্দের টাকা আটকে থাকায় খরস্রোতা মনু নদীর ভাঙন থেকে মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা রক্ষা প্রকল্প কাজের বিভিন্ন পর্যায়ের ২৬টি প্যাকেজের কাজ পুরোটাই বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মনু নদী প্রকল্পের কাজ সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে আগামী বর্ষায় বন্যার আশঙ্কায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন নদীপাড়ের মানুষ।মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা জানান, উজানের পলি বালু নিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে খরস্রোতা মনু নদীর তলদেশ অনেক আগেই ভরাট হয়ে গেছে। দেশের সীমানায় প্রবাহিত ৭২ কিলোমিটার মনু নদী স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছরে একবারও খনন করা হযনি। এতে প্রতি বর্ষায় নদীর পানি ফুলে-ফেঁপে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে জেলা শহরসহ মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া এ ৩ উপজেলায় ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয। তখন শহর গ্রামগঞ্জ পানিতে নিমজ্জিত হয়ে বাড়িঘর ও কোটি কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়।
বছরওয়ারি বন্যার কবল থেকে স্থায়ীভাবে মৌলভীবাজারকে মুক্ত রাখতে ২০২১ সালে ৯৯৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার একটি মেগা প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ ২ বছর ধরে ৫৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। কিন্তু এ পর্যন্ত দেড় বছর সময় পাড়ি দিলেও নদীতীরের কয়েক স্থানে সামান্য কিছু জিও ব্যাগ ড্রাপিং ও ব্লক তৈরির প্রক্রিয়া ছাড়া এ মেগা প্রকল্পের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলেন, বরাদ্দের টাকা না আসায় বাধ্য হয়ে তারা নদী প্রতিরক্ষা কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন। শুধু তাই না-নির্মাণসামগ্রীর দাম আগের চেয়ে অস্বাভাবিক বাড়তে থাকায় তারা বেকায়দায় পড়েছেন।এতে ৭২টি প্যাকেজের মধ্যে ২৬টির কাজ এরই মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি ৪৬টি প্যাকেজের কাজ ঢিলেঢালাভাবে চললেও অর্থের অভাবে যে কোনো সময় তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে নদীশাসনের মূলকাজ জমি অধিগ্রহণ, ৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ কিলোমিটার চর অপসারণ, ৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৬ কিলোমিটার নদীর বাঁধ পুণঃনির্মাণ ও ৫১ কোটি টাকায় আড়াই কিলোমিটার শহর রক্ষা বাঁধে ফ্লাডওয়ালসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো এখনও করা হয়নি। এতে বর্ষায় বন্যা আতঙ্কে আছেন শহরবাসী।পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজনগর উপজেলার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাখিল রায়হান বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক সংকটে কাজে অনীহা দেখাচ্ছে।আর কাজের মেয়াদ বাড়ানোসহ আর্থিক বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর কথা বললেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান।পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, বন্যার স্থায়ী সমাধানে ৯৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও দেড় বছরে এ পর্যন্ত মাত্র ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।