বহুমাত্রিক সংকটে পর্তুগাল প্রবাসীরা
শাহ মো:তানভীর
সত্যবাণী
পর্তুগাল থেকে: দশ লাখ টাকা খরচ করে এক বছর আগে পোলেন্ড এসেছিলেন নোয়াখালীর শহিদুল ইসলাম ,একই সময়ে সিলেটের সোহেল আহমদ গিয়েছিলেন মাল্টাতে ৷ দেশ ভিন্ন হলেও দুজনেই পরিবারের ভাগ্য ফেরানোর আশা করেছিলেন৷ আশার আলোও দেখছিলেন তারা৷ শোনেছিলেন ইউরোপের স্বপ্নযাত্রায় ইমিগ্রেন্টদের খুব সহজ একটি দরজা পর্তুগাল ,সহজেই পর্তুগালে বসবাসের অনুমতি পাওয়া যায় তাই দুজনই পর্তুগালে পাড়ি জমান।-কিন্তু কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে পর্তুগাল এসে এখন মহা বিপদে পড়েছেন দুজনই আলাপকালে দুজনই জানান এখন তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ৷
বারবার বলছিলেন কীভাবে সামনের দিনগুলোতে চলবেন সেই দুশ্চিন্তায় আছেন ৷
শুধু সোহেল মিয়া বা শহিদুল ইসলাম নন, করোনা পরিস্থিতির কারণে হাজারো বাংলাদেশিএকই দুশ্চিন্তায় আছেন৷ কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে,আবার কবে তারা কাজে যোগ দিতে পারবেন বা আদৗ পারবেন কী না জানেন না৷ তবে আশার কথা হলো বর্তমান জরুরি অবস্তা এবং লকডাউনের ফলে করোনা পরিস্তিতি বেশ উন্নতির দিকে।দৈনিক সংক্রমন এবং মৃতের সংখ্যা নিম্নগামী ।পর্তুগালের পর্যটনমন্ত্রী রিতা মার্কেস আশা করেছেন, মে মাসের প্রথম দিকেই পর্তুগালের পর্যটনশিল্প পুরোপুরি প্রাণ ফিরে পাবে। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ আশাবাদ ব্যাক্ত করে তিনি ।
পর্তুগালের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামসুল ইসলাম মনে করেন সংকটময় এই সময়ে শুধু পর্তুগালে নয় যে দেশেই বাংলাদেশ দূতাবাস রয়েছে দূতাবাসের উচিত সংকটময় এই সময়ে প্রবাসীদের পাশে থাকা ৷ কারণ এক কোটিরও বেশি প্রবাসী রাষ্ট্রকে শুধু দিয়েই যাচ্ছেন, সেই তুলনায় তাদের প্রাপ্তি নেই বললেই চলে৷ করোনার এই সংকটময় সময়ে পাশে থেকে সহায়তার আহব্বান জানান তিনি ।বাংলাদেশ দূতাবাস প্রধান আব্দূল্লাহ আল রাজির সাথে আলাপ কালে তিনি জানান আমরা বাংলাদেশ দূতাবাস লকডাউন এর প্রথমদিকে প্রায় আটশ বাংলাদেশী ভাইদেরকে এক মাসের খাদ্য সহায়তা দিয়েছি ।জরুরি অবস্তা এবং লকডাউনের মধ্যে ও আমরা আমাদের দূতাবাস সেবা অব্যাহত রেখেছি ।
বাংলাদেশ জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর ২০২০ সালের হিসেব বলছে বিশ্বে এখন এক কোটি ৩০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক বৈধভাবে কাজ নিয়ে বিভিন্ন দেশে বাস করছেন৷ শিক্ষার্থী, দক্ষ কর্মী এবং অবৈধ শ্রমিকদের সংখ্যার তো কোনো হিসেবই নেই৷ ফলে ধরে নেয়া যায় এ সংখ্যা দুই কোটির কাছাকাছি হতে পারে৷ তবে সংকটময় এই সময়ে রাষ্ট্রসহ সবার প্রবাসীদের পাশে থাকাটা জরুরী৷ কারণ এক কোটিরও বেশি প্রবাসী রাষ্ট্রকে শুধু দিয়েই যাচ্ছেন,সেই তুলনায় তাদের প্রাপ্তি নেই বললেই চলে৷ করোনার এই সংকটময় সময়ে পাশে থেকে ঋণশোধ করার চেষ্টা করতে পারে বাংলাদেশ৷