‘বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে রেজুলেশন পাশ একটি বড় ঘটনা’

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর ভাষন দেয়ার দিন ২৫ সেপ্টেম্বরকে নিউইয়র্ক স্টেটের আইন পরিষদ কর্তৃক ‘বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে’ রেজুলেশন পাশ নিঃসন্দেহে একটি বড় ঘটনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আমেরিকার মূলধারায় শ্রদ্ধা জানাবার এই উদ্যোগ প্রাতস্মরণীয় হয়ে থাকবে।তিনি শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইর্য়কের জ্যাকসন হাইটসে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। নিউইয়র্ক স্টেট ২০১৯ সাল থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ হিসেবে পালন করে আসছে। এর মধ্যদিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য অগ্রসর জাতির ইমিগ্র্যান্টদের সঙ্গে উজ্জ্বল পঙ্ক্তিভুক্ত হয় বাংলাদেশিরাও। এর আগে নিউইয়র্ক রাজ্যের সিনেটে একটি সেশনে আলোচনার পর আইন পরিষদে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বছর তৃতীয় বারের মত সিনেটের আইন পরিষদ কর্তৃক নবায়ন হয়।

যুক্তরাষ্ট্র নিউইর্য়কে শনিবার বিকেলে জ্যাকসন হাইটেসের জুইশ সেন্টারে দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরে এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মুক্তধারা। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। মূল প্রবন্ধ পাঠক করবেন জাতিসংঘে কর্মরত বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. নজরুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ডাঃ জিয়াউদ্দীন আহমেদ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন যখন জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন সেসময় কিভাবে বঙ্গবন্ধুর জাতিসংঘে প্রদত্ত ভাষণের ভিডিও উদ্ধার করেন তার বর্ণনা দেন। এছাড়া তিনি বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।নজরুল ইসলাম তাঁর লিখিত প্রবন্ধে ঐতিহাসিক ২৫ সেপ্টেম্বরের গুরুত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে নিউইয়র্ক স্টেট-এর মত বাংলাদেশেও জাতীয় সংসদে বিল এনে ‘ইমিগ্রান্ট ডে’ ঘোষণার দাবি জানান। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক স্টেট কর্তৃক দিনটির তাৎপর্য বিবেচনা করে যেভাবে মুক্তধারা ভিন্ন একটি দেশে বাংলাদেশী ইমিগ্রান্ট ডে আইন পাশ করিয়েছেন তা অভূতপূর্ব ঘটনা। তিনি বলেন, ২৫ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা ও বাঙালিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছিলেন। তাই বাংলাদেশী অভিবাসী দিবস হিসেবে এর চেয়ে ভালো দিন আর কি হতে পারে?

নিউইয়র্ক সময় সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশী ইমিগ্রান্ট ডের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর বাংলা ভাষণ, সিনেটে রেজুলেশন পাশ, এই বিষয়ে ড. আনিসুজ্জামান, আবুল মাল আব্দুল মুহিত, এ এইচ মাহমুদ আলির প্রতিক্রিয়া, কংগ্রেস ওম্যান গ্রেস মেং ও সিনেটে বিল উত্থাপনকারী সিনেটর স্ট্যাভেস্কির বক্তব্য স্থান পায়।স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তধারা নিউইয়র্ক এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি বিশ্বজিত সাহা। তিনি তাঁর বক্তব্যে কোভিড এর মধ্যেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ইউনাইটেড স্টেট পোস্টাল সার্ভিস কর্তৃক স্মারক ডাকচিহ্ন প্রকাশ, নিউইয়র্ক স্টেট কর্তৃক ১৭ মার্চকে ‘বঙ্গবন্ধু ডে’ ঘোষণাসহ আমেরিকায় বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের উদ্যোগে শিশু-কিশোর মেলার কথা তুলে ধরেন।

সভাপতির বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ডাঃ জিয়াউদ্দীন আহমেদ দিনটির গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি মুক্তধারা নিউইয়র্ক কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১০০ ছবি প্রদর্শনের কথা বলেন।প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে ডাঃ জিয়াউদ্দীন আহমেদ মুক্তধারার পক্ষ থেকে নিউইয়র্ক স্টেট কর্তৃক ২০২১ সালে পাশকৃত বাংলাদেশী ইমিগ্রান্ট ডে রেজুলেশনটি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। নতুন প্রজন্মের শিল্পী জারিন মাইশার নেতৃত্বে আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত ও তাজুল ইমামের নেতৃত্বে সমবেত কন্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ক্লারা রোজারিও।

You might also like