বাঙালি সম্প্রাদায়ের কাছে শিক্ষাকে সহজলভ্য করার চেষ্টা, এমবিই খেতাব পেলেন সৈয়দ সামাদ আলী
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
সান্ডারল্যান্ড: নিজ সম্প্রদায়ের কাছে শিক্ষাকে সহজলভ্য করতে অবদান রাখায় রাজা চার্লসের প্রথম নববর্ষ সম্মাননা এমবিই খেতাবে ভূষিত হয়েছেন নর্থ ইষ্টের সান্ডারল্যান্ডের অধিবাসী বাঙালি বংশোদ্ভূত সৈয়দ সামাদ আলী।
বাংলাদেশের সুনামগন্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলাধীন সৈয়দপুর গ্রামের সন্তান ৫০ বছর বয়সী সৈয়দ আলী বর্তমানে সান্থডারল্যান্ড শহরের থর্নহীল এবং সাউথমুর একাডেমিতে কাজ করছেন, যেখানে তিনি শহরের শিশুদের বাংলা শেখান।
মূলত শহরের বাঙালি সম্প্রদায়ের শিশুদের এবং বিশেষ করে তাদের পিতামাতার জন্য শিক্ষাকে সহজলভ্য করতে সহায়তা করার জন্য তাঁকে এমবিই সম্মাননার জন্য মনোনীত করা হয়।
সান্ডারল্যান্ডের হাই বার্নেসে বসবাসকারী সৈয়দ আলী এর আগে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে তার নিজস্ব বাংলা পাঠ্য বই তৈরি করলে জিসিএসই ভাষা শেখানোর তার এই কাজ ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্বীকৃত হয়। এই কাজে উৎসাহী হয়ে সামাদ আলী ও তার ছাত্রদের গত বছর নর্থ ইষ্ট উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান উৎসব কর্তৃপক্ষ।
এমবিই সম্মাননা প্রাপ্তীতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ২৩ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে সান্ডারল্যান্ডে চলে আসা সৈয়দ সামাদ আলী বলেন, “আমি এই সম্মান পেয়ে গর্বিত। এই সম্মাননা শুধু আমার নয়, সান্ডারল্যান্ড শহরের পুরো বাঙালি কমিউনিটির। পুরো কমিউনিটি এতে গর্বিত।”
তিনি বলেন, “আমি চাই না সুবিধাবঞ্চিত শিশু বা ভাষা প্রতিবন্ধকতা আছে এমন কেউ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হোক, আর তাই আমার এই চেষ্টা”।
সৈয়দ সামাদ আলীর কাজের একটি মূল ক্ষেত্র হল বাঙালি সম্প্রদায়ের পিতামাতা এবং শিশুদের পরিবারকে সহায়তা করা। এর মধ্যে রয়েছে পিতামাতার অনুবাদক হিসাবে কাজ করা, সপ্তাহান্তে কমিউনিটি ভাষা ক্লাসে শিক্ষাদান এবং ব্রিটিশ শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে অপরিচিত অভিভাবকদের সহায়তা করার জন্য শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদের সাথে কাজ করা।
সৈয়দ বলেন, “বর্তমান প্রজন্মের জন্য ইংরেজি তাদের প্রথম ভাষা, কিন্তু এটি বাবা-মা এবং দাদা-দাদিদের ক্ষেত্রে নয়, যাদের প্রায় ৫০ শতাংশ পুরোপুরি ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে পারেন না।”
উল্লেখ্য, সৈয়দ সামাদ আলী বৃটেনে আসার পূর্বে ক্রীড়ামোদী ও শিক্ষানুরাগী হিসাবে দক্ষতার সাথে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। সিলেট এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে আই এ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (তৎকালীন) থেকে অনার্স ও মাষ্টার্স ডিগ্রী শেষ করে সিলেটের একটি বেসরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেন তিনি। তিনি ঐতিহ্যবাহী সৈয়দ পুর সাধারণ পাঠাগারের উপ-পরিচালক গ্রন্থ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ক্রীড়ামোদী হিসাবে পরিচিতি ও দক্ষতার জন্য তৎকালীন এমসি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে “আলী- তাহমীম” পরিষদে ক্রীড়া সম্পাদক পদে নির্বাচন করেন।