বানের পানির কারণে দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের কার্যক্রম ব্যহত

সিলেট অফিস 
সত্যবাণী
তৃতীয় বারের মতো বন্যায় আক্রান্ত পুরো সিলেট। বলা চলে বন্যার কবলে পড়ে শহর গ্রাম একাকার হয়ে গেছে। চলমান বন্যার কবলে পড়ে দক্ষিণ সুরমা সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে কলেজটির একমাত্র প্রবেশপথসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩টি ভবন। প্রায় এক মাস যাবত পানির নিচে তলিয়ে আছে এ কলেজ। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা কীভাবে নেয়া হবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ। এমনকি এই কলেজে ডিগ্রি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল কিন্তু পানির কারণে ডিগ্রি পরীক্ষা কেন্দ্র অন্য কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দক্ষিণ সুরমা থেকে সংবাদদাতা জানান, দক্ষিণ সুরমার ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে রয়েছে হাঁটুসমান পানি। এছাড়াও কলেজের প্রশাসনিক ভবন, শেখ হাসিনা ভবন ও অনার্স ভবনের নিচতলা পানির নিচে রয়েছে। পানির কারণে আভ্যন্তরীণ ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও সরকারি পরীক্ষা কোনমতে পানি ডিঙিয়ে গিয়ে ভবনের দু’তলায় চলমান রেখেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বন্যার কারণে কলেজে ক্লাস কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সামনে পরীক্ষা তাই অফিস কার্যক্রম চালিয়ে যেতেই হচ্ছে। কলেজের শিক্ষক ও অফিস কর্মচারিরা নোংরা পানি মাড়িয়ে প্রতিদিন অফিস করছেন।
প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের এই পানি ডিঙিয়েই কলেজে আসতে হচ্ছে। এ কারণে বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে মেয়ে পরীক্ষার্থীদের। কলেজের প্রধান ফটক থেকে রিকশায় করে ভেতরে যেতে হচ্ছে তাদের। জরুরি কাজে কলেজে আসা শিক্ষার্থীরাও হতাশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। সামনেই পরীক্ষা কিন্তু এই পানির মধ্যে সিট বণ্টন নিয়েও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান।
এছাড়া এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিজের কলেজ ক্যাম্পাস দেখতে এসেও পানি ছাড়া আর যারা দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজে সুযোগ পেয়েছেন তারা কিছুই দেখার পাচ্ছে না।
কলেজে ফরম জমা দিতে আসা শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, গত কয়েকদিন ধরে কলেজে ক্যাম্পাস পানিতে নিমজ্জিত। যাওয়া আসাতে অনেক কষ্ট। আগামী ৯ জুলাই থেকে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়াটাও অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভোগান্তির শিকার একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী জানান, আমাদের জন্য খুব দুর্ভোগের ব্যাপার। কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, প্রয়োজন থাকায় বাধ্য হয়েই সকলকে নোংরা পানি ডিঙিয়ে কলেজে প্রবেশ করতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের উচিত উচু করে বালু দিয়ে যাতায়াতের সুবিধা করে দেয়া।
দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান বলেন, বন্যার কারণে কলেজের প্রধান ফটকসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩টি ভবন পানির নিচে রয়েছে। এজন্য আমরা ক্লাস কার্যক্রম বন্ধ রেখেছি। আগামী আরো কয়েকদিন পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তারপর পরিস্থিতির উন্নতি হলে শ্রেণী কার্যক্রম শুরু করবো। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখবো।
তিনি জানান, ক্লাস কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও পানি ডিঙিয়ে এসে আমরা নিয়মিত অফিস করছি। ২ থেকে ৩ ফুট পানি অতিক্রম করেও আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। যদি বন্যা পরিস্থিতি এভাবে থাকে তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যাবো।

You might also like