বৃষ্টির পানিতে বন্দী হবিগঞ্জে ত্রিমুখি সংকট
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ টানা ২ দিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার দূর্ভোগ, সেই সাথে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্কে বিপর্যয়। সব মিলিয়ে ত্রিমুখি সংকটে দিন কাটছে হবিগঞ্জ শহরবাসীর। সাধারণ মানুষ বলছেন-বিগত কয়েক বছরে এমন ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়নি তাদের।
হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানান, হবিগঞ্জে গেল কয়েকদিন ধরে কখনো মাঝারি, আবার কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। শুক্রবার ভোররাত থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়। ফলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। শহরের শায়েস্তানগরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে ও জেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে প্রধান সড়কে হাঁটুপানির সৃষ্টি হয়।
এছাড়া পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের পাড়া-মহল্লার প্রায় ৯০ শতাংশ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে নষ্ট হচ্ছে মুল্যবান জিনিসপত্র।
সেই সাথে হাঁটুপানি জমেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয়, সার্কিট হাউজ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বাসভবন, ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয়, সদর মডেল থানাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তরে।
শহরের ইনাতাবাদ এলাকার বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান বলেন, বাসায় বাজার-সদায় নেই। কাল ভোর থেকে বৃষ্টির কারণে বাসা থেকে বের হতে পারছিলাম না। এখন বের হয়েও পড়েছি সমস্যায়। রিকসা পাচ্ছি না, পেলেও ২০ টাকার ভাড়া চাচ্ছে ৭০ টাকা। আবার রাস্তা তলিয়ে যাওয়ার কারণে পায়ে হেঁটেও যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
শ্যামলী এলাকার বাসিন্দা মুরাদ চৌধুরী বলেন, বাসার ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। বৃষ্টির পানির সাথে ড্রেনের সকল ময়লা প্রবেশ করে পুরো বাসায় এখন দু্র্গন্ধ।
মোবাইল পার্টস ব্যবসায়ী নেহার সরকার বলেন, ভোর থেকে বিদ্যুৎ নেই। সকাল থেকে চলে গেছে নেটওয়ার্ক। সারাদিন ধরে ইন্টারনেটে নেই, কল বা এসএমএস করা যাচ্ছে না। যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ দরকারেও কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, হবিগঞ্জ শহর দিন দিন বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। অল্প বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এর মুল কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ন। পানি নিষ্কাশনের পুকুর ও জলাশয়গুলো ভরাট করে ফেলা হয়েছে। পুরাতন খোয়াই নদী দখল ও দুষণে নাজেহাল। যে কারণে এই জলাবদ্ধতা। শুধু ড্রেন নির্মাণ করলে হবে না। ড্রেনের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের জায়গা থাকতে হবে। এ জন্য দখল হওয়া পুকুর ও পুরাতন খোয়াই নদী উদ্ধার করে খনন ও সংরক্ষণ করতে হবে।
পৌর মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন, রাত থেকেই প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে পানি নিষ্কাশনের জন্য পৌরসভার কর্মীরা কাজ করছেন। বৃষ্টি কমলে দ্রুত পানি নেমে যাবে।