যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতাকে র্যাবের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল এলাকাবাসী
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
সিলেট: যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতাকে গতকাল সোমবার রাতে সিলেট নগরে আটক করে র্যাব। এ সময় এলাকার লোকজন র্যাবের গাড়ি আটকে ওই দুজনকে ছাড়িয়ে নেন। গরের মেজরটিলা জাহানপুর এলাকায় গতকাল রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ন এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, র্যাব সদস্যরা সাদাপোশাকে এসে ওই দুজনকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং গুলি ছুড়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।
এ বিষয়ে র্যাব-৯–এর সহকারী পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মশিহুর রহমান সোহেল বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে র্যাব সদস্যরা সোমবার রাতে মেজরটিলা জাহানপুরে গিয়েছিলেন। আটক ব্যক্তিদের কাছে অবৈধ অস্ত্র থাকার তথ্য ছিল। তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। একপর্যায়ে ডাকাত দল হানা দিয়েছে বলে এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে র্যাবের গাড়ি আটকে দেন; আটক ব্যক্তিদের ছাড়িয়ে নেন।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ সম্পর্কে মশিহুর রহমান বলেন, সব নিয়ম মেনেই তারা অভিযানে গিয়েছিলেন। র্যাব সদস্যরা পোশাকধারী ছিলেন। আর যারা সিভিল পোশাকে ছিলেন, তাদের আইডি কার্ড সঙ্গে ছিল। সেখানে কোনো গুলি করার ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে ওই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের মেজরটিলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় তারা আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শনাক্ত করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান তারা। পরে বিকেল পৌনে চারটার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যান।স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল দুপুরে জাহানপুর এলাকায় একটি জায়গা দখলের চেষ্টা করা হয়। এ সময় দখলকারীদের প্রতিহত করেন স্থানীয় লোকজন। এতে ভূমিকা রেখেছিলেন সিলেট সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম। এর জের ধরেই রাতে সাইফুল ইসলামকে আটক করতে আসে র্যাব।
সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, জায়গা দখলে ব্যর্থ হয়ে একটি পক্ষ র্যাব সদস্যদের টাকার বিনিময়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে। র্যাব সদস্যরা তার বাসায় অবৈধ অস্ত্র রয়েছে জানিয়ে ঘরে ঢুকে সব আসবাব তছনছ করেন। তবে তার বাসা থেকে কোনো অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এ সময় তার বড় ভাই সুয়েদুল ইসলাম ও মামা জাকির হোসেনকে মারধর করা হয়েছে। এ সময় সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুরুল হক (মাসুম) ও সিলেট জেলা যুবদলের সদস্য হারুনুর রশীদকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছিল র্যাব। তখন স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে এলাকায় মাইকিং করে তাদের ছাড়িয়ে নিয়েছেন।সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্যসচিব জসিম উদ্দিন, জেলা যুবদলের সহসভাপতি কবির উদ্দিন, আব্দুল মালেক, জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি এনামুল কবির সোহেল, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য বেলাল আহমেদ, হেলাল আহমদ, এমরান আহমদ, জেলা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আলীম উদ্দিন, আব্দুল মান্নান মনা, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক সিহাব উদ্দিন, সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল ইসলাম বলেন, র্যাব সদস্যরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের লোকজনের পক্ষ নিয়ে নিরপরাধ লোকজনকে হয়রানি এবং মারধর করেছেন। মারধর ও হয়রানির শিকার হয়েছেন জাতীয়তাবাদী পরিবারের কয়েকজন সদস্য। এর প্রতিবাদে ও ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত র্যাব সদস্যদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।