ভাষা সৈনিক আহমদ রফিককে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার আহ্বান

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের বিভিন্ন ঘটনার সাক্ষী তিনি।মুক্তমনা সাহিত্য ও সংস্কৃতি ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি তিনি একাধারে কবি,প্রবন্ধকার ও গবেষক।কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিষয়ে গবেষণা তার বিশেষ কৃতিত্ব।টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে রবীন্দ্রাচার্য উপাধিতে ভূষিত করে। ব্যক্তিজীবনে একজন চিকিৎসক হলেও সেই ভাষাসংগ্রামী,লেখক,বুদ্ধিজীবী আহমদ রফিক অসুস্থ অবস্থায় বর্তমানে অসহায় জীবন যাপন করছেন।

সম্প্রতি তার ৯৩তম জন্মদিন উপলক্ষে এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আইন চেয়েছেন।এই দাবির সঙ্গে তার বর্তমান অবস্থার সম্পৃক্ততা অনুভব করে বিচলিত বোধ করছেন দেশের সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিত্বরা।এ অবস্থায় ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিককে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানিয়েছেন ১৮ জন লেখক-কবি।মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান। পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানে আহ্বানকারী ১৮ লেখক হলেন- শোয়াইব জিবরান, ওবায়েদ আকাশ, আহমাদ মোস্তফা কামাল, রাজীব নূর, শাহনাজ মুন্নী, লোপা মমতাজ, জোবাইদা নাসরিন, কবির হুমায়ূন, আলফ্রেড খোকন, শামীম রেজা, রেজা ঘটক, আফরোজা সোমা, পিয়াস মজিদ, মোজাফফর হোসেন, সাইমন জাকারিয়া, স্বকৃত নোমান, শাহেদ কায়েস ও সরকার আমিন।

বিবৃতিতে তারা জানান, আহমদ রফিক তার জমানো ২০ লাখ টাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাস্ট করে খরচ করেছেন। তার সন্তানাদি নেই, একা মানুষ।এখন প্রবল আর্থিক কষ্টে পড়েছেন। খুব সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আইন চেয়েছেন। আমরা তাঁর এই দাবির সঙ্গে তার বর্তমান অবস্থার সম্পৃক্ততা অনুভব করে বিচলিত বোধ করছেন। তারা বলেন, ভাষাসংগ্রামী, লেখক, বুদ্ধিজীবী আহমদ রফিক অসুস্থ অবস্থায় অসহায় জীবন যাপন করছেন। তিনি আমাদের মহান মনীষী। ভাষা আন্দোলনে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেছেন। বাঙালির প্রতিটি আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সৃষ্টিশীল লেখা ও গবেষণা ছাড়াও তিনি জাতীয় ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন। বাংলাভাষা, বাংলা সাহিত্যে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি একাধারে কবি, কথাশিল্পী, সাহিত্য-সমাজ-রাজনীতি-বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ে বহু গ্রন্থের লেখক, তিনি রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য।

বিবৃতিতে বলা হয়, পেশায় তিনি একজন ডাক্তার ছিলেন। জীবনভর দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। রবীন্দ্র চর্চা কেন্দ্র ট্রাস্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি। তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশ পদক পেয়েছেন। এ ছাড়াও কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধিতে ভূষিত করেছে।বিবৃতিদাতারা বলেন, তিনি অত্যন্ত আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ, কোনো অবস্থাতেই ব্যক্তি মানুষের দান-খয়রাত গ্রহণ করতে একেবারেই প্রস্তুত নন। রাষ্ট্রীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য এই মানুষটিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে অনেক লেখকের কল্যাণে এগিয়ে এসেছেন। তাই আহমদ রফিককে এককালীন ৩০ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করে তার বাকি জীবনটাকে শান্তিপূর্ণ এবং মর্যাদাপূর্ণ করে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এই ১৮ লেখক ও কবি।

You might also like