মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানির প্রবণতা কমে গেছে: অর্থমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, শুল্ক ব্যবস্থাপনা আধুনিক হওয়ায় মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির প্রবণতা এখন কমে এসেছে। তবে শুল্ক পদ্ধতিকে আরও আধুনিকায়নে বন্দরগুলোতে স্ক্যানার মেশিনের সংখ্যা বাড়ানো জরুরি।রাজধানীর সেগুন বাগিচায় রাজস্ব ভবন সভাকক্ষে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনার ও ডব্লিউসিও সার্টিফিকেট অব মেরিট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী সেমিনারে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হন।জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো.রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, এনবিআরের সদস্য খন্দকার মুহাম্মদ আমিনুর রহমান, মো. আলমগীর হোসেন, আব্দুল মান্নান সিকদার ও মাসুদ সাদিক বক্তব্য রাখেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনবিআরের সদস্য (কাস্টমস নীতি ও আইসিটি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া।অর্থমন্ত্রী বলেন, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য অধিক নিরাপদ ও ব্যবসা সহজীকরণে বন্দরের শুল্ক ব্যবস্থাকে পুরোপুরি অটোমেশন করা জরুরি। তাহলে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে কেউ পন্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ পাবে না। কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস যাছাই করা সহজ হবে।তিনি বলেন, শিপমেন্টগুলোতে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ঘোষণা যদি ঠিকমত যাছাই করা যায়, তাহলে রাজস্ব আয় যেমন বাড়বে তেমনি ব্যবসার পরিবেশ আরও সহজ হবে। একইসাথে সামগ্রিক অর্থনীতি লাভবান হবে।

মুস্তফা কামাল বলেন, শুল্ক কর্তৃপক্ষ বা এনবিআর আগের চেয়ে অনেক বেশি ব্যবসাবান্ধব। তবে কোভিড মহামারি মোকাবেলায় সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে রাজস্ব কর্মকর্তাদের আরও বেশি আন্তরিক হওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।তিনি জানান, রাজস্ব আহরণের পাশাপাশি ব্যবসা সহজীকরণের কাজ এনবিআর করে যাচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে শুল্ক ও ভ্যাট কর্তৃপক্ষ নিরবিচ্ছন্নভাবে সেবা প্রদান করে সরবরাহ কাঠামো ঠিক রেখেছে। যেটা এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে দরকার ছিল। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সচল রাখতে শুল্ক কর্তৃপক্ষ কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাবে কর জিডিপির অনুপাত কত, তার সঠিক হিসাব নির্ণয় করতে এনবিআর সরকারি প্রকল্পগুলোতে যে কর, ভ্যাট বা শুল্ক ডিউটি অব্যাহতি দিচ্ছে সেটা জানার দরকার। সরকারি প্রকল্পে অব্যাহতি দেয়া রাজস্বের পরিমাণ রেকর্ড থাকলে,কত টাকার কর ছাড় দেয়া হলো সেটা যেমন জানা থাকবে। পাশাপাশি অব্যাহতি না দিলে মোট রাজস্বের পরিমাণ কত দাঁড়াতো সেটাও জানা যাবে।

অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, বৈশ্বিক বড় বড় কোম্পানিতে যারা স্থানীয়ভাবে পরিবেশকের দায়িত্ব পালন করছে, তাদের আর্থিক লেনদেনের সকল ডকুমেন্টস চালানভিত্তিতে হলে ইনফরমাল ইকোনমির অনেক কিছু ফরমাল ইকোনমিতে চলে আসবে। পাশাপাশি রাজস্ব আয়ও বেড়ে যাবে।এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, করোনাকালীন সময়ে পণ্যের সরবরাহ কাঠামো সচল ও পণ্য মূল্য স্বাভাবিক রাখতে কাস্টমস ও ভ্যাট কার্যক্রম একদিনের জন্যও বন্ধ রাখা হয়নি। সাহস নিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী সাত রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মরনোত্তর ডব্লিউসিও সার্টিফিকেট অব মেরিট প্রদান করায় হয়। এছাড়া আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বিশেষ অবদান রাখায় এনবিআরের দশ কর্মকর্তা এবং তিন প্রতিষ্ঠান ঢাকা ও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস এবং বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশকে (বিএমএ) ডব্লিউসিও সার্টিফিকেট অব মেরিট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিম সনদ বিতরণ করেন।

You might also like