রক্ষা পেলেন ঢাবির ৪৬ শিক্ষার্থী পরিবহন শ্রমিকদের ছুঁড়া ঢিলে আহত ২ মালনীছড়ায় বিআরটিসির বাসে অগ্নিকা
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ সিলেটের মালনীছড়া চা-বাগান সংলগ্ন রাস্তায় আগুনে পুড়ে গেছে বিআরটিসি’র একটি বাস। অগ্নিকান্ডে বাসটি পুড়ে গেলেও অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন বাসে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬ শিক্ষার্থীসহ বাসের চালক ও হেলপার। ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাত পৌণে ৯টার দিকে সিলেট-এয়ারপোর্ট সড়কের মালনীছড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পরিবহন ধর্মঘট চলাকালে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৭ জন ছাত্র বিআরটিসির ২টি এসি বাসে বিছানাকান্দি ঘুরতে যান। সন্ধ্যায় ফেরার পথে ৪৬ জন ছাত্রকে বহনকারী বাসটি সালুটিকর এলাকায় পৌছামাত্র পেছন থেকে শ্রমিকরা ধাওয়া করেন। এ সময় বাসের পেছনে একটি ঢিল ছোঁড়া হয়। এতে বাসের পেছনের বামপাশের প্লাস ভেঙে ২ ছাত্র আহত হন।
খোঁজ নিয়ে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পরিবহণ শ্রমিকদের কর্মসূচি চলাকালে গাড়ির পেছনে ঢিল ছোঁড়া হলে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে চালক দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে আসার পথে বাসের হেডলাইট বন্ধ হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক হেলপার নেমে দেখতে পান ধোয়া উড়ছে। আতঙ্কিত চালক ও শিক্ষার্থীরা নামতেই বাসে আগুন ধরে যায়।পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত ১১ টায় বিকল্প ব্যবস্থায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশ শিক্ষার্থীদের দরগাহ গেইটস্থ হোটেল গ্র্যান্ড মোস্তফায় পৌছে দেয়।বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে এয়ারপোর্ট থানার ওসি খান মোহাম্মদ মাঈনুল জাকির গণমাধ্যমকে বলেন, ২টি বাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২য় বর্ষের ৯৭ জন যাত্রী বিছানাকান্দি বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে একটি বাসে ঢিল ছোঁড়া হলে গ্লাস ভেঙে ২ ছাত্র আহত হন। চালক বাসটি নিয়ে সিলেট ক্যাডেট কলেজে এসে অবস্থান করে। সেখান থেকে ছেড়ে শহরে আসার পথে মালনীছড়া এলাকায় হেডলাইট বন্ধ হয়ে যায়। গাড়ি বন্ধ করে যান্ত্রিক ত্রুটি খুঁজতে গিয়ে হেলপার দেখতে পান ধোঁয়া বেরোচ্ছে। তা দেখে চালকসহ যাত্রীরা নেমে পড়তেই বাসে আগুন ধরে যায়। গাড়িটি সিলেট আসার পথে বেশ কয়েকবার ধর্মঘট পালনকারীদের সামনে পড়ে বলেও জানান তিনি। শিক্ষার্থীদের বহন করা গাড়িতে ঢিল ছোড়ার কথা ও আহতের বিষয়টিও তিনি জানান।ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. বেলাল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল তাৎক্ষণিক পৌঁছে বাসের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুন কি কারণে লেগেছে সেটি খতিয়ে দেখছেন তারা।
উল্লেখ্য, ৫ দফা দাবিতে মঙ্গলবার দিনভর সিলেটে পরিবহণ শ্রমিকদের কর্মবিরতি পালিত হয়। কিন্তু কর্মবিরতির ঘোষণা দিলেও কর্মসূচি চলাকালে পরিবহন শ্রমিকরা মারমুখী অবস্থায় লাঠিসোটা নিয়ে সড়কে অবস্থান করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেন। তারা সড়কে সকল ধরণের যানবাহন চলাচল প্রতিহত করেন তারা। যা কর্মসূচির সাথে মানানসই নয় বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন। তাদের অদূরদর্শীতায় সাধারণ মানুষ ও দূর-দূরান্তের বিশেষ করে দেশের অন্য প্রান্তের যাত্রীরা হয়রানির শিকার হন। দিনভর দুর্ভোগের পর রাতে প্রশাসনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক সমঝোতা হলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে হয়।