লন্ডনে ঢাবি উপাচার্য: বঙ্গবন্ধু স্কলারশিপ আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষকরা বঙ্গবন্ধু স্কলারশিপের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মর্যাদার স্থানে নিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। এই শিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সুযোগ পাচ্ছেন। কমনওয়েলথ স্কলারশিপের আওতায় একজন শিক্ষার্থী যে অর্থমূল্যের বৃত্তি পেয়ে থাকেন সরকার বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী স্কলারশিপেও সম মূল্যের বৃত্তির সুযোগ দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি হিসেবে কাজ করছে বলে জানান উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান। বৃহস্পতিবার লন্ডনের হিলটন প্যাডিংটনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অ্যালামনাইদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে নেত্রীবৃন্দের সাথে বৈঠকে ঢাবি উপাচার্য একথা বলেন।
‘দ্য অ্যাসোসিয়েশন অফ কমনওয়েলথ ইউনিভাসিটিজ’ (এসিইউ) এর কাউন্সিল সভায় যোগ দিতে ২২ নভেম্বর লন্ডনে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উৎসব আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্যই ছিলো, অক্সফোর্ড ও কেইমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগসূত্র স্থাপন করা, বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকের পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও একাত্তর টিভির বিশেষ প্রতিনিধি তানভীর আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের পরিচালনা পরিষদের অপর সদস্য ও থার্ড সেক্টর কনসালটেন্ট বিধান গোস্বামী বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে বসবাসরত যে সকল অ্যালামনাই ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকতার সাথে যুক্ত তাদের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগসূত্র স্থাপনের জন্যই কাজ করে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে। তারই ধারাবাহিকতায় উপাচার্যের যুক্তরাজ্যে আগমন উপলক্ষ্যে লন্ডনের হিলটন প্যাডিংটনে এই বৈঠকের আয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের করতে কাজ করছে বলে আশ্বস্ত করেন উপাচার্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকীকরণের অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ ও বার্মিংহ্যামে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে এমওইউ স্বাক্ষর করেছে বলে জানান উপাচার্য। এ ছাড়াও কানাডা, দক্ষিন আফ্রিকা ও মালয়েশিয়ার একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল শিক্ষক বঙ্গবন্ধু স্কলারশিপ, প্রধানমন্ত্রী স্কলারশিপ ও কমনওয়েলথ স্কলারশিপে যুক্তরাজ্যে অধ্যয়ন ও গবেষণা করছেন তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বায়োমেডিক্যাল ফিজিক্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মামুন রাব্বানী, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসিফ ইমতিয়াজ, মনোবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইশরাত শাহনাজ, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আহমেদ ফয়সল সুমিত, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক একেএম ইফতেখারুল ইসলাম, ওর্য়াল্ড রিলিজিওন এন্ড কালচারের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ দিদারুল ইসলাম, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসের সহকারী অধ্যাপক মোবারক হোসেন সহ অনেকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে’র নেত্রীবৃন্দের সাথে আলাপকালে উপাচার্য বলেন, ২০১৭ সালে প্রথম বারের মতো ‘দ্য অ্যাসোসিয়েশন অফ কমনওয়েলথ ইউনিভাসিটিজ এর কাউন্সিলর নির্বাচিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৮ সালের পর করোনা মহামারীর কারণে এসিইউর সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। চলতি বছর ট্রাস্টিদের বৈঠকে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা যোগ দিয়েছেন। রয়্যাল চাটার্ড দ্বারা পরিচালিত ‘দ্য অ্যাসোসিয়েশন অফ কমনওয়েলথ ইউনিভাসিটিজ এ কমনওয়েলথের প্রায় ৫ শতাধিক শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যপদ রয়েছে। কিভাবে কমনওয়েলথভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জনগণের সেবায় কাজ করতে পারে সেই বিষয়গুলো এবারের আলোচনা গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানালেন উপাচার্য। আধুনিক ও যুগোপযোগী সমাজ নির্মানে বিশ্ববিদ্যালয়কে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেই আলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষ্যসূচি বিন্যাস করা হবে বলে জানিয়েছে ড. আখতারুজ্জামান।
উপাচার্য বলেন, করোনা মহামারীর কঠিন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষায় পিছিয়ে পড়েনি এবং বিশ্ববিদ্যায়কে সেশন জটেও পড়তে হয়নি, বিষয়টিকে কমনওয়েলথের অপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুবই ইতিবাচক ভাবে দেখেছে। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে পারস্পারিক সম্পর্ক তৈরী হলে শিক্ষা, গবেষণা ও প্রযুক্তিগত বিনিময় সহ নানা ক্ষেত্র চিহ্নিত হবে, আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে এমওইউর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিকীকরণের ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ ধরণের ফোরামে অংশগ্রহণ ও বিদেশে অবস্থানরত অ্যালামনাইদের সাথে যোগসূত্র স্থাপনের মাধ্যমে উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌশল ও নীতি দর্শনের আলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেও ঢেলে সাজানোর সুযোগ তৈরী হবে বলে জানান তিনি। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে আগামী ২৭ নভেম্বর উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান দেশে ফেরার কথা রয়েছে।