শপিংমল ও দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ১৪ দলের
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের শপিংমল, বিপনিবিতান ও দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোট।শুক্রবার ১৪ দলের পক্ষ থেকে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, চলতি মাসে দেশে করোনার ত্রাস বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এমনিতেই সাধারণ মানুষ নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হচ্ছে। তাদের ঘরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর যদি শপিংমল, বিপনিবিতান ও দোকানপাট খুলে দেয়া হয়, তাহলে মানুষকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আইন মানতে কঠিন হয়ে পড়বে। তাই এখন এই ধরনের একটি সিদ্ধান্তে করোনাভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
১৪ দলের যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান ও বাসদের রেজাউর রশীদ খান।
যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আসন্ন পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। জীবিকার প্রয়োজনে এই সিদ্ধান্ত হলেও করোনাভাইরাসের কারণে জনজীবন এখন বিপন্ন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা এখন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে, মানুষকে ঘরে রাখতে ও স্বাস্থ্য বিধি মানতে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে প্রাণঘাতি এই ভাইরাস সারা দেশে সংক্রমিত হয়েছে বলে সবাই জানে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোট-বড় ব্যবসায়ী, দোকানকারসহ অনেকের জন্য আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন, যেটি বাস্তবায়নের পথে। সারা বছর যারা কম বেশি ব্যবসা করেছেন তারা এই কয়টি মাস দোকান কর্মচারীসহ নিজেদের আর্থিক সুরক্ষা করতে পারবে না-এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। এই দুঃসময়ে যার যার অবস্থান থেকে সরকারকে সহায়তা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এবারের ঈদ কোন উৎসব নয়। মহাদুর্যোগের সময় ঈদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানটি ছাড়া কোন আনন্দ উৎসবের কিছু নেই। বরং দেশের বিত্তশালীরা ঈদের খরচটুকু দরিদ্র কর্মহীন মানুষের মাঝে বিতরণ ও সাহায্য করতে পারেন। দোকান মালিক সমিতিকে আমরা অনুরোধ করবো- সাময়িকভাবে আপনারা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা শপিংমল, পিংক সিটি, নিউ মার্কেট, বায়তুল মোকাররম, গাউছিয়া, চন্দ্রিমা মার্কেট বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়ার এসব দোকান মালিকদের প্রতি ধন্যবাদ জানান ১৪ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ।তারা বলেন, এখন শুধুমাত্র ব্যবসা করার সময় না; বরং যেসব মালিকদের সামার্থ আছে তারা তাদের কর্মচারীদের এ সময় সহায়তা করে পাশে থাকুন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা যথাযথ মেনে কেনাকাটা করা খুবই কষ্টকর বিষয়। সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে সাময়িকভাবে ত্যাগ স্বীকার করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন। সেই আহ্বানে সবার সাড়া দেয়া উচিত।