শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯৪ তম জন্মবার্ষিকী

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ ৩১ বছর আগে শহীদজননী জাহানারা ইমাম ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের যে নাগরিক আন্দোলনের সূচনা করেছেন বহু ঘাত প্রতিঘাত অতিক্রম করে তা আজ বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলেও আমাদের আরও দীর্ঘ, কঠিন ও বিপদসঙ্কুল পথ অতিক্রম করতে হবে। মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার অন্ধকার যেভাবে সমাজ ও রাজনীতিকে গ্রাস করেছে সেখান থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করতে হলে এগিয়ে আসতে হবে তরুণ প্রজন্মকে, যেভাবে তরুণরা অংশগ্রহণ করেছে এবং নেতৃত্ব দিয়েছে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনে, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে এবং ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে।’

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদজননী জাহানারা ইমামের ত্যাগ দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ উদাহরণ। ১৯৭১ সালে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র শফি ইমাম রুমী দেশের মুক্তিসংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন এবং বেশ কিছু সফল গেরিলা অপারেশনের পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানিদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। জাহানারা ইমাম ছিলেন ব্যক্তিত্বময়ী। আবার একজন সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে মানুষের মনোজগতে তিনি ঠাঁই করে নিয়েছেন। তিনি একাধারে শহীদজননী, লেখিকা, শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনের নেত্রী। সংসার জীবন এবং লেখক জীবনের পাশাপাশি সাংবাদিকতার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। কলাম লিখতেন দৈনিক বাংলায়। তার একাত্তরের দিনগুলি শুধুই স্মৃতিচারণা নয়, ইতিহাসের অসামান্য দলিল।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শহীদজননী জাহানারা ইমাম যে আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন, তার প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত বিজয় এখনো আসেনি। এখনও যুদ্ধাপরাধীদের প্রধান দল জামায়াতে ইসলামীর বিচার হয়নি। রাজাকার, আলবদর, আলশামস-এর মতো ঘাতক বাহিনীর বিচার হয়নি।পাকিস্তানি জেনারেলদেরও বিচার হয়নি। স্বাধীনতাবিরোধী গণহত্যাকারী ও মৌলবাদীদের দল এখনও রাজনীতিতে সক্রিয়। স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রাজনৈতিক ও আদশর্গত ভাবে পরাজিত করার মাধ্যমেই আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে।’

You might also like