সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ ‘তিন চেয়ারে’ বসছেন কারা?

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সিলেটের আলোচিত ৩টি প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন আসন্ন। এরমধ্যে রয়েছে সিলেট জেলা পরিষদ, সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। প্রথম দু’টিতে সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এই ৩ প্রতিষ্ঠান নিয়ে বর্তমানে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সিলেটের সুধীসমাজে চলছে জোর আলোচনা। কারা বসছেন গুরুত্বপূর্ণ এই ৩ চেয়ারে? কাদের হাতে যাচ্ছে তিন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব। তা নিয়ে সিলেট জুড়ে চলছে আলোচনা-পর্যালোচনা।

স্থানীয় এক তরুণ সাংবাদিক সম্প্রতি অনুসন্ধান করে জানান, আ’লীগ সরকার ক্ষমতাসীন থাকায় সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ আসন্ন নির্বাচনগুলোতে দলীয় নেতাদের এগিয়ে রাখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এই ৩ প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থীরাই এগিয়ে। কারণ, বর্তমান সরকারের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে দলীয় নেতাদের প্রয়োজন মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সুধীসমাজ।সুত্রমতে, সিলেট সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর মেয়র ছিলেন আ’লীগের প্রভাবশালী নেতা ‘জনতার মেয়র’ খ্যাত বদর উদ্দিন আহমদ। সিসিকের সর্বশেষ নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী’র কাছে তিনি পরাজিত হলে আ’লীগের হাতছাড়া হয় গুরুত্বপূর্ণ এই চেয়ার।জেলা পরিষদের সর্বশেষ নির্বাচন ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী লুৎফুর রহমান বিজয়ী হন। ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ মৃত্যুবরণ করলে চেয়ারটি খালি হয়ে যায়। পরে প্যানেল চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। জেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হলে তাকে প্রশাসকের দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই থেকে তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন।
সর্বশেষ, সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইনের খসড়া গত ২২ আগস্ট সোমবার মন্ত্রীসভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে খুব শিগগির এই আইনের চুড়ান্ত কার্যক্রম শেষে চেয়ারম্যান নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রাজনৈতিক নেতাদের মধ্য থেকে দেয়া হবে নাকি কোন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা হবেন এ নিয়েও চলছে কানাঘুষা।

এদিকে, সিলেট জেলা পরিষদ, সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ এই ৩ প্রতিষ্ঠানে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌঁড়ে ঘুরেফিরে যাদের নাম আলোচনায় আসছে তারা হচ্ছেন, জেলা আ’লীগ সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, নগর আ’লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সহ-সভাপতি আসাদ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আহমদ শিপলু। তাঁদের মধ্যে কোন ৩ জন গুরুত্বপূর্ণ এই ৩ চেয়ারে বসবেন তা সময়ই বলে দেবে।এছাড়াও সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ এই তিন প্রতিষ্ঠানে আ’লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন কোন চমক দেখাতে পারেন বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। সেক্ষেত্রে সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব নজিবুর রহমানের নামও উঠে আসছে আলোচনায়। নজিবুর রহমান সরকারের উচ্চপদস্থ একজন চৌকষ কর্মকর্তা হিসেবে প্রশাসনে খ্যাতি অর্জন করেছেন। প্রশাসনে তাঁকে স্মার্ট ও ডিজিটালাইজড্ কর্মকর্তা হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো। রাজনৈতিক মহলে তেমন আলোচনা না থাকলেও বিশেষজ্ঞ মহলে আরো যাঁদের নাম আলোচনায় রয়েছে, তাদের মধ্যে আছেন ‘কুট্টি সিলেটি’ হিসেবে পরিচিত সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন ও বিগত সাধারণ নির্বাচনকালীন সময়ে বিএনপি থেকে আ’লীগে যোগ দেয়া প্রবীণ ব্যক্তিত্ব, বিএনপি সরকারের আমলে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী। যদিও তারা উভয়েই অত্যন্ত বয়স্ক কিন্তু অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বলে সকল মহলে গ্রহণযোগ্য।তবে সব কথার শেষ কথা হলো, অন্য নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষগুলো যেভাবে গঠন করা হয়েছে, সরকারের তরফে সিলেটের ক্ষেত্রেও সেরকম করা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়? সময়ের অপেক্ষায় সিলেটবাসী।

You might also like