হাউজ অব কমন্সে দোলযাত্রা ও গৌর পূর্ণিমা উদযাপিত
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: এই প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ পার্লামেন্ট হাউজ অব কমন্সে হলি (দোলযাত্রা) ও গৌর পূর্ণিমা উদযাপিত হল। গত ২১শে মার্চ বৃহস্পতিবার লন্ডন সময় দুপুর দুটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত হাউজ অব কমন্সের কমিটি রুমে ইষ্টহ্যাম আসনের লেবার দলীয় এমপি স্যার ষ্টীফেন টিমস্ ও ইলিং-সাউথ হল আসলেবার দলীয় এমপি বীরেন্দ্র শর্মার যৌথ স্পন্সরশীপ ও পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ হিন্দু অ্যাসোসিয়েশন ইউকে সনাতন ধর্মীয় রীতি অনুসারে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য-আ্যায়ারল্যান্ড ও লাইব্রেরীয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এইচ.ই. মিস সাইদা মুনা তাসনিম।
বাংলাদেশ হিন্দু অ্যাসোসিয়েশন ইউকের প্রেসিডেন্ট প্রশান্ত দত্ত পুরকায়স্থ বিইএম এর সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সেক্রেটারী সুজিত কুমার চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সংগঠনের গোড়াপত্তন ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ও আদর্শ উদ্দেশ্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র লিগ্যাল কাউন্সেল রাজেন পাল এবং ব্রিটিশ প্রজন্মের বাঙ্গালী ইউ-সি-এল এর ছাত্রী মৌলিকা সোম ও কেমব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সুমেদ দেবারা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাঙালীর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্বলিত একটি ব্যতিক্রমধর্মী ডকুমেন্টারী প্রদর্শন করে কৃষ্ণ শীল। সংগঠনের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মহামায়া শীল ও কৃষ্ণ শীল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
অনুষ্ঠানের হোষ্ট বীরেন্দ্র শর্মা এমপি বলেন, হিন্দু ধর্ম সেবা শান্তি ও সম্প্রীতির বিশ্বাসী। তিনি বলেন, বর্তমানে গ্রেট ব্রিটেনে তিন মিলিয়নেরও বেশী সনাতন ধর্মের অনুসারী রয়েছেন, সকলেই বাংলাদেশ-পাকিস্তান ও ভারত থেকে আগত। তিনি তরুণ-তরুণীদের সাহসের সাথে এগুনোর আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, এই দেশ আমাদের সকলের, সকল ধর্মের সমান অধিকার ব্রিটিশ সমাজ সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী আমাদের সকলকে সাস্প্রদায়িকতার উর্ধে থাকতে হবে।
স্যার ষ্টীফেন টিমস্ এমপি বলেন, ভালবাসা ও শান্তির উৎসব হলি আয়োজনে অংশ নিতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি। তিনি তার পক্ষ থেকে সব ধরেনের সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করেন।
হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, হাউজ অব কমন্সে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি চর্চা এবং নতুন প্রজন্মের উচ্চমানের উপস্থাপনা সত্যিই একটি ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন তার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ তারই কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার স্বাধীনতার চারটি মূল নীতি বজায় রেখে সব
ধর্মের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট প্রশান্ত দত্ত পুরকায়স্থ বিইএম উপস্থিত সুধী ও আগত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশ হাইকমিশনে পরিচয় পর্বের সূত্র ধরে বাংলাদেশ হিন্দু অ্যসোসিয়েশন ইউকে আজ ২৩ বছর পর হাউজ অব কমন্সে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও ব্রিটিশ এমপিদের কাছ থেকে যথাযথ স্বীকৃতি পেলো। তিনি বলেন, আমাদের শেকড়ের সাথে নবপ্রজন্মের যোগসূত্র স্থাপনে নিরলসভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ হিন্দু অ্যাসোসিয়েশন ইউকে। তিনি আগত সকলকে সংগঠনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।
ব্রিটেনের বিভিন্ন শহর থেকে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল সংখ্যক ব্রিটিশ বাংলাদেশী এই হলি উৎসবে অংশ নেন।
সভাপতি প্রশান্ত দত্ত পুরকায়স্থের আহ্বানে উপস্থিত এম পি স্যার ষ্টীফেন টিমস্ ও বীরেন্দ্র শর্মা দুজনই প্রতিবছর হলি উৎসবসহ অন্যান্য চ্যারিটি কাজে সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করেন। সংগঠনে ব্রিটিশ প্রজন্মের শিল্পীদের নিয়ে নাটক, নৃত্য ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয় ।