স্পেনে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত
কবির আল মাহমুদ
সত্যবাণী
মাদ্রিদ,স্পেন থেকেঃ স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে যথাযথ মর্যাদার মধ্যে দিয়ে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে। এই দিন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা আত্মার অপবিত্রতা ও কলুষতা থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য তিন মাসব্যাপী নির্জন আশ্রমে বাস শেষে প্রবারণা পূর্ণিমার মাধ্যমে লোকারণ্যে ফিরে আসেন। একে আশ্বিনী পূর্ণিমাও বলা হয়।বিশেষ এই দিবস উপলক্ষে গত রবিবার (৩১অক্টোবর) বাংলাদেশ বৌদ্ধ একতা সংঘ স্পেনের উদ্যোগে মাদ্রিদের বাংলাদেশ এসোসিয়েশন হলে দিনব্যাপী ছিল নানা আয়োজন। বুদ্ধ ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর বৌদ্ধপূজা, প্রসাদ বিতরণ, প্রার্থনা, কোমলমতি শিশু -কিশোরদের ত্রিপিটক পাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মোমবাতি ও প্রদীপ প্রজ্বলন ধর্মীয় নির্দেশনা প্রদানসহ বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করা হয়।
দুপুরে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় সভায় পুন্যার্থীদের উদ্দেশে ধর্মদেশনা দেন ফ্রান্সের বুদ্ধগয়া প্রজ্ঞাবিহার আন্তর্জাতিক ধ্যান কেন্দ্রের উপাধাক্ষ কল্যাণরত্ন থেরো মহোদয়। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ একতা সংঘ স্পেনের সভাপতি বিপল্পব বড়ূয়া। বাংলাদেশ বৌদ্ধ একতা সংঘ স্পেনের সাধারণ সম্পাদক বিপুল বড়ূয়ার সঞ্চালনায় পুণ্যার্থীদের পক্ষে পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ একতা সংঘ স্পেনের সভাপতি বিপল্পব বড়ূয়া। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিশ্ব শান্তির জন্য সমবেত প্রার্থনা এবং বক্তব্য দেন আদর্শন বড়ূয়া, জিদেন বড়ূয়া, সজন বড়ূয়া, সুমন বড়ূয়া (সালু), সজল বড়ূয়া, সঞ্জয় বড়ূয়া(আদেশ), বিপ্লব বড়ূয়া, অপু বড়ূয়া, সন্তোষ বড়ূয়া, সুমন বড়ূয়া, রিপন বড়ূয়া, বিপুল বড়ূয়া, রিমন বড়ূয়া, মিটু বড়ূয়া, সেতু বড়ূয়া, কানন বড়ূয়া, সুচন্দা বড়ূয়া, হিমা বড়ূয়া, শর্মি বড়ূয়া, সোনিয়া বড়ূয়া(সুস্মিতা), রুম্পা বড়ূয়া, শতাব্দী বড়ূয়া, ডেজী বড়ূয়া, সুবর্ণা বড়ূয়া, ঋতুপর্ণা বড়ূয়া এবং বৌদ্ধধর্মাবলম্বী প্রবাসী বাংলাদেশি আরো অনেকেই পুণ্যার্থী উপস্থিত ছিলেন।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ বৌদ্ধ একতা সংঘ স্পেনের সভাপতি বিপল্পব বড়ূয়া প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব উল্লেখ করে তিনি এই উৎসবের দিনে সরকারী ছুটি গোষণার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানান।প্রবারণা পূর্ণিমায় আসা পুণ্যার্থীরা জানান, পৃথিবীতে সকল মানুষ যেন শান্তিতে একসঙ্গে বসবাস করতে পারে। যার যার ধর্ম সঠিকভাবে পালন করতে পারে এবং বিশ্ব যেন মহামারি করোনা থেকে মুক্তি পায় সেই প্রার্থনা করেন।উল্লেখ্য, আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভের পর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস পালন শেষে প্রবারণা উৎসব পালিত হয়। প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকে এক মাস প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে শুরু হয় দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান উৎসব।