ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৬ লেনের কাজ ডিসেম্বরে শুরু হচ্ছে

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ আগামী ডিসেম্বরে শুরু হবে ২১০ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে ৬ লেনে রূপান্তরের কাজ। ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকার এ প্রকল্পের প্রথম প্যাকেজের ২ লটের ঠিকাদার নিয়োগে সোমবার চুক্তি সই হয়েছে।
রাজধানীর একটি হোটেলে সড়ক পরিবহন সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)’র প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ৪৮ মাসে ঢাকার কাঁচপুর থেকে নরসিংদী বিসিক পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো।ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়ক ২ লেনের অর্থাৎ মূল সড়ক ২৩ ফুট প্রশস্ত। তা ৪ লেনে উন্নীত হবে। ধীরগতির যান চলাচলের জন্য দুই পাশে থাকবে ১৮ ফুট প্রশস্ত আলাদা সার্ভিস লেন। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মতো প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত হবে না মহাসড়কটি। গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও বাজার এলাকায় পৌনে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৩টি ফ্লাইওভার এবং ওভারপাস থাকবে। ৩টি ইন্টারচেঞ্জ, ৫টি রেল ওভারপাস, ৬৯টি সেতু, ১০টি আন্ডারপাসও নির্মাণ করা হবে।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সম্প্রসারণের পরিকল্পনা এক দশক আগের। ১০ হাজার ৩৭০ কোটি টাকায় সড়কটি ৪ লেনে উন্নীতকরণে ২০১৫ সালে চায়না হারবারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকও সই হয়েছিল। ব্যয় বাড়াতে প্রতিষ্ঠানটি সেই সময়কার সচিবকে ঘুষ দিতে চেষ্টা করলে, চীনা ঠিকাদারকে বাদ দেয় সরকার।৬ টি প্যাকেজে ১৩ টি লটে হবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ। প্রকল্প পরিচালক একেএম ফজলুল করিম বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরে প্রথম প্যাকেজের কাজ শুরু হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্যাকেজের ৪ টি লটের ক্রয় প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটিতে (সিসিজিপি) উত্থাপনে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তৃতীয় প্যাকেজের চুক্তি এ বছরেই হবে। আগামী জুনের মধ্যে বাকি প্যাকেজের চুক্তি সই হবে। দরপত্র প্রক্রিয়া পিছিয়ে থাকায় ষষ্ঠ প্যাকেজের ১২টি লটের ঠিকাদার নিয়োগে বিলম্ব হতে পারে।২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকারের অনুমোদন পাওয়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রকল্পের কাজ, ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে সম্পন্নের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে ২২ মাসে মাত্র ১টি প্যাকেজের ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে। বাকি কাজ ৪ বছরে সম্পন্ন হবে কী না সংশয় রয়েছে।ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক। বাকি ৩ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা জোগান দেবে বাংলাদেশ। ডিপিপি অনুযায়ী, গত অর্থবছরে প্রকল্পটিতে দুই হাজার ৯০২ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকার কথা ছিল। কিন্তু সাড়ে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে খরচ হয় মাত্র সাড়ে ১২ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে ৩ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা প্রয়োজন হলেও বরাদ্দ মাত্র ১ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ১ শতাংশেরও কম।চুক্তি অনুযায়ী, কাঁচপুর মোড় থেকে চানপাড়া পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়ক ৯২৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকায় সম্প্রসারণ করবে চীনের লংজিয়ান রোড এন্ড ব্রিজ কোম্পানি এবং বাংলাদেশের ম্যাপ ইনফ্রাস্ট্রাকচারের যৌথ উদ্যোগ (জেভি)। চীনের ঝেংঝু সিটি হাইওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন লিঃ এবং ম্যাপ ইনফ্রাস্ট্রাকচার জেভি ১ হাজার ৩৯৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকায় চানপাড়া থেকে নরসিংদী বিসিক এলাকা পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণ করবে।