লন্ডনে ‘আমার ব্র্যাক-জীবন’ এর প্রকাশনা অনুষ্ঠান: গ্রন্থটি বাংলাদেশের ৪২ বছরের উন্নয়ন অগ্রগতিতে ব্র্যাক ও লেখক জীবনের অনন্য দলিল

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

লন্ডনঃ শিক্ষাবিদ আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী এমন একজন কর্মবীর, যার গবেষণা কাজ বিশ্বনন্দিত এবং তাঁর কর্মধারা মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ার কাজে অনন্য ভূমিকা রেখেছে।আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষক, শিক্ষাবিদ ও উন্নয়নকর্মী ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরীর আলোচিত গ্রন্থ ‘আমার ব্র্যাক-জীবন’ নিয়ে গত ১৪ জুন বুধবার আপাসেন কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আলোচকরা এমন মন্তব্য করেন।
স্বনামধন্য চ্যারিটি সংস্থা আপাসেন-এর প্রধান নির্বাহী মাহমুদ হাসান এমবিইর সভাপতিত্বে ‘ইউকে ট্যুর অ্যান্ড রোড শো’ শীর্ষক এই গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তাঁর ব্র্যাক জীবন ও ব্র্যাকের বিস্তারিত কর্মপন্থা নিয়ে কথা বলেছেন বইটির লেখক অধ্যাপক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী।বক্তৃতাপর্বে লেখক তাঁর দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের টুকরো স্মৃতি ও সংগ্রামের কথাগুলো আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে তুলে ধরেন। এ সময় বইটির বিষয়বস্ত নিয়ে লিখিত দীর্ঘ আলোচনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক হামিদ মোহাম্মদ।

ব্র্যাকের সাথে দীর্ঘদিন কাজকরা নানা অভিজ্ঞতা ও শেখা নিয়ে গ্রন্থের সূত্র ধরেই বক্তব্য রাখেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও কথাসাহিত্যিক ড. শাহাদুজ্জামান।তিনি অত্যন্ত বিনয়ের সাথে ঋণ স্বীকার করে বলেন, আমার কর্মজীবনে আহমদ মোশতাক রাজার অনুপ্রেরণা, কাজে নিবিষ্ট হওয়া, মানুষের কল্যাণে নিবেদিত হওয়া এবং আজকের শাহাদুজ্জামান হওয়ার পেছনে সব অবদান আহমদ মোশতাক রাজার। তিনি জনস্বাস্থ্য বিষয়ে শিক্ষকতা করছেন সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে। শাহাদুজ্জামান বলেন, এটাও তাঁর শেখানো ও অনুপ্রেরণার জগত। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ আব্দুর রাকীব, সাবেক বিসিএ সভাপতি কামাল ইয়াকুব, লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাব সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য আনসার আহমদ উল্লাহ, ক্রয়ডনের সাবেক সিভিক মেয়র কাউন্সিলর শেরওয়ান চৌধুরী, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার সাবেক সভাপতি সৈয়দ এনামুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাসন ও সাংবাদিক মতিয়ার চৌধুরী।

বক্তারা বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে নিয়ে ব্র্যাকের নিরবিচ্ছিন্ন পথচলা, জনস্বার্থে ডায়রিয়ার ‘ওরসেলাইন এক মুঠো গুড় ও এক চিমটি লবণ এবং এক গ্লাস পানি’ তত্ত্ব সারা বাংলাদেশে দেওয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে জনস্বাস্থ্য ও ইনফরমেটিকস বিভাগ স্থাপন, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা, ‘ল্যানসেট’ পত্রিকায় বাংলাদেশ সিরিজ প্রকাশ এই সবকিছুই মোশতাক রাজা চৌধুরীকে অনন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

অন্যদিকে, আহমদ মোশতাক রাজা বিশ্বের স্বনামধন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থায় লোভনীয় চাকরি পেয়েও বাংলাদেশের মায়ায় ছুটে আসেন এবং সমগ্র জীবন ব্যয় করেন বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে। এ মানুষকে দেশ ও জনগণ ভুলবে না। তার এমন দেশপ্রেমের জন্য অভিবাদন জানাই বলেন বক্তারা।মোশতাক রাজা চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে ব্র্যাকে প্রথম যোগদান থেকে শুরু করে দেশব্যাপী বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ এবং বিশ্বমাত্রিক বিভিন্ন সেমিনারে গবেষণাপত্র উপস্থাপনসহ নানা অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। বাংলাদেশের হতদরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়নে উন্নয়নসহযোগী হিসাবে ব্যাকের সম্পৃক্তা এবং নিজের কর্ম সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য,তত্ত্ব-উপাত্ত তুলে ধরেন। আলোচনা শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন সুধীজনের মধ্যে শেরওয়ান চৌধুরী, আনসার আহমদ উল্লাহ, অধ্যাপক আসাদ উদ্দিন, সাংবাদিক বুলবুল হাসান, সৈয়দ জাফর, সাংবাদিক মো. আবদুস সাত্তার, নজরুল ইসলাম বাসন, মনির আহমদ, শাহ মাহমুদ হাসান সিদ্দিক, আবু সাঈদ মাহমুদ বাবলা। আরো উপস্থিত ছিলেন রেইনবোর কর্ণধার মোস্তফা কামাল, লেখক ময়নূর রহমান বাবুল, মিসেস জামিলা হাসান, মিসেস রাশেদা কামাল ও বাচিকশিল্পী মুনিরা পারভীনসহ আরো অনেকে। এ ছাড়াও লেখকের সম্মানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশনেন কণ্ঠশিল্পী রীপা রাকীব, মোস্তফা কামাল মিলন, কবি নজরুলের কবিতা আবৃত্তি করেন নিলুফার চৌধুরী। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আপাসেনের কর্ণধার বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ হাসান এমবিই। তিনিও প্রশ্নোত্তর পর্বে বেশ কয়েকটি আনুসঙ্গিক প্রশ্নের উত্তর দেন।

You might also like