সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণ চলছে
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
সিলেট ও রাজশাহী: সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বুধবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের এবং রাজশাহী সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।এদিকে, দুই সিটিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সিসিটিভির মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনের কার্যক্রম মনিটর করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছে। মাঠে আরও রয়েছেন নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা।
সিলেট সিটি নির্বাচন
সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের বলেন, ‘সবকটি কেন্দ্রে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। নিরাপত্তায় কাজ করছে ১০ প্লাটুন বিজিবি। রয়েছে র্যাব ও পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স। প্রতিটি কেন্দ্রে আনসার সদস্যের পাশাপাশি আছে পুলিশ। এ ছাড়াও ৪২টি ওয়ার্ডের জন্য ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট যেকোনো অপরাধের তাৎক্ষণিক বিচারকাজ সম্পন্নের জন্য মাঠে রয়েছেন ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. ইলিয়াস শরিফ বলেছেন, ‘প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। কেউ কোনও বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। সেইসঙ্গে কোনও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নির্বিঘ্নে আপনারা (ভোটার) ভোট দিতে আসুন। আপনাদের নিরাপত্তায় আছে পুলিশ। এ জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন করতে নগরীতে কাজ করছে প্রায় দুই হাজার ৬০০ পুলিশ সদস্য। মাঠে রয়েছেন ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৪২ ওয়ার্ডে ৪২ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।’
এই সিটিতে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন হচ্ছে। আট মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত নজরুল ইসলাম বাবুলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৫৪ হাজার ৩৬০ এবং নারী দুই লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৭ জন। মেয়র পদে আট, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭৩ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।মেয়র পদে আট প্রার্থী হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা); জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙ্গল); ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা); জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু (ঘোড়া); মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট); মো. শাহজাহান মিয়া (বাস) ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ)।
রাজশাহী সিটি নির্বাচন
রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই আমরা। ভোটগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন ৩ হাজার ৬১৪ জন কর্মকর্তা। ভোটকেন্দ্রগুলোতে স্থাপন করা হয়েছে এক হাজার ৫৬০টি সিসি ক্যামেরা। ইভিএম মেশিন রয়েছে এক হাজার ৭৩০টি। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী চার জন। সাধারণ ৩০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১২ জন এবং সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৬ জন। তবে সাধারণ ওয়ার্ডের একটিতে কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।নির্বাচনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার আনিসুর রহমান বলেছেন, ‘শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে অতীতের যেকোনও নির্বাচনের চেয়ে এবারের রাজশাহী সিটি নির্বাচন হবে একটি মডেল স্বরূপ। ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা করার কোনও সুযোগ নেই।রাজশাহী সিটিতে ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন এবং নারী ১ লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন, হিজড়া ৬ জন। ভোটকেন্দ্র ১৫৫টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ১৫৩টি।মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা); জাতীয় পার্টির মো. সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল); ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. মুরশিদ আলম (হাতপাখা) এবং জাকের পার্টির মো. লতিফ আনোয়ার (গোলাপ ফুল)। এ ছাড়া ১০টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৪৬ জন এবং ৩০টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।