পুর্ব শক্রতার জেরে সিলেটের এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত

সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ পুর্ব শত্রুতার জেরে সিলেট নগরির টিভি গেইট এলাকায় ছাত্রলীগের দু’ গ্রুপের সংঘর্ষে এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। ২০ নভেম্বর সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নগরির বালুচরস্থ টিভি গেইট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ছাত্রলীগ কর্মীর নাম আরিফ। তিনি শাহী ঈদগাহ টিভি গেইট এলাকার ফটিক মিয়ার পুত্র।
এ ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। নগরির পৃথক স্থান থেকে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)’র উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ। আটককৃতরা হলেন বাচ্চু মিয়ার পুত্র রনি (২১) ও কামাল মিয়ার পুত্র মামুন মজুমদার (২৮)।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১৩ অক্টোবর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিরণ মাহমুদ নিপু ও বর্তমান সভাপতি নাজমুল ইসলামের নিয়ন্ত্রণাধীন নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। ওইদিনের ঘটনার জেরেই ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ খুন হতে পারেন বলে সুত্রটি মনে করছে।
তবে অপর একটি সুত্র জানিয়েছে, ২০ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২টায় পুর্ব বিরোধের জেরে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নিপু ও বর্তমান সভাপতি নাজমুলের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আরিফ নামের ওই যুবক মারাত্মক আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এদিকে, নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক নিহত ছাত্রলীগ কর্মীর এক বন্ধু  জানান, ওই ঘটনায় নিহত ছাত্রলীগ কর্মীর মা বাদী হয়ে আজ থানায় অভিযোগ দেয়ার কথা ছিলো। এমন খবরে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপু গ্রুপের কর্মীরা আতঙ্ক ছড়াতে আরিফকে তার বাসার সামনে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরিফ। তিনি জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল গ্রুপের সক্রিয় কর্মী বলে জানা গেছে।
নিহতের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য বলরাম। তিনি জানান, নগরির বালুচর এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় আহত একজন রাত দেড়টার দিকে এমএজি ওসমানী হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
এদিকে এ ঘটনায় আটক রনি ও মামুন, তারা দু’জনেই জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপু গ্রুপের কর্মী।
এদিকে, গতকাল ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় ময়নাতদন্ত শেষে ছাত্রলীগ কর্মী আরিফের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাদ আসর নামাজে জানাজা শেষে লাশ নগরির মানিকপীর (র.)কবরস্তানে দাফন করা হয়েছে।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম গণমাধ্যম কর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, শরীরের গুরুত্বপূর্ণ, স্পর্শকাতর স্থানে প্রচন্ড আঘাত এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই আরিফের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে তিনি একথাগুলো বলেন।
তিনি বলেন, নিহত আরিফের শরীরে ২৩টি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ণ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ২০টি আঘাত নতুন এবং ৩টি আঘাত ২/৩ দিন আগের। এতে মনে হচ্ছে ২/৩দিন আগেও তাকে মারা হয়েছিল, সেখানে ৩টি মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, যা ব্যান্ডেজ করা ছিল বলে ডা. ইসলাম জানান।

You might also like