শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রতিমন্ত্রীত্ব পাওয়ায় সিলেট জুড়ে আনন্দ-উল্লাস
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট অফিসঃ অলটাইম রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত,সিলেট জেলা আ’লীগ সভাপতি, সিলেট-২ (ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ) আসনের এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন। এ খবরে গোটা সিলেটসহ তাঁর নির্বাচনী এলাকায় বইছে আনন্দের বন্যা।
বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা জানান, শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার খবর পেয়ে ওসমানীনগর উপজেলা ও ১ পৌরসভাসহ বিশ্বনাথ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগণের মাঝে দেখা দিয়েছে আনন্দ, উচ্ছ্বাস।
এক দশক পর সিলেট-২ আসনে ডুবন্ত নৌকা ভাসিয়েছেন শফিকুর রহমান চৌধুরী। গত ৭ জানুয়ারি রোববার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে তিনি ৭৮ হাজার ৩৮৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
অন্য এমপিদের সঙ্গে ১০ জানুয়ারি বুধবার সকালে শপথ গ্রহণ করেন শফিক চৌধুরীও। শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি পেলেন সুখবর। মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন এই নিরলস রাজনীতিবিদ।
বুধবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শফিক চৌধুরী মন্ত্রী হচ্ছেন-এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব নতুন মন্ত্রী শপথ নিতে যাচ্ছেন সে তালিকায় শফিক চৌধুরীর নাম থাকায় দলীয় নেতাকর্মীসহ ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ উপজেলার সাধারণ জনতার মাঝে উৎফুল্লতা দেখা যায়। পরে নতুন মন্ত্রিসভার নামের তালিকায় তার নাম বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হওয়ায় এ আসনের সর্বস্তরের মানুষ আনন্দের জোয়ারে ভাসছে। প্রতিমন্ত্রী করায় দলীয় সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন শফিকুর রহমান চৌধুরী।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ফোন পেয়েছেন উল্লেখ করে শফিকুর রহমান চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে ‘কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হবে, তা এখনো জানানো হয়নি। ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে প্রথমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়াবেন। এরপর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথ পড়াবেন। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দফতর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
এরআগে ২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সে সময়ের প্রভাবশালী নেতা এম. ইলিয়াস আলীকে হারিয়ে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন তিনি। শফিকুর রহমান চৌধুরী ‘কামব্যাক’ করায় ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথের আ’লীগ নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। সেই আনন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে তিনিও নিজেকে মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেবেন বলে এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন।
বুধবার এমপি হিসেবে শপথ গ্রহণের পর শফিকুর রহমান চৌধুরী এক প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রথমেই জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা, তিনি আমাকে নৌকা না দিলে বিজয় আসতো না। দীর্ঘ ১০ বছর আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষ উন্নয়নবঞ্চিত ছিলেন নৌকার প্রার্থী না থাকায়। তবে এবার নৌকা ফিরে আসায় বিশ্বনাথ-ওসমানীনগরবাসীর কাঙ্খিত উন্নয়ন হবে। স্থানীয় নেতাকর্মী নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী ৫ বছর নিবিষ্টচিত্তে আমি মানুষের জন্য কাজ করে যাবো।’
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ওসমানীনগরের বাসিন্দা, যুক্তরাজ্য আ’ লীগের জনসংযোগ সম্পাদক রবিন পাল বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী আদর্শের সৎ, কর্মঠ ও জনপ্রিয় এ নেতা তৃণমূল নেতাকর্মীদের সুখ-দুঃখের ভাগীদার। শফিক চৌধুরী সবপর্যায়ের নেতাকর্মীদের আস্থা ও ভরসার প্রতীক এবং শেষ ঠিকানায় পরিণত হয়েছেন। দীর্ঘকাল ধরে দলের প্রতি তিনি সর্বস্ব দিয়ে তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ততা অর্জন করেছেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্য আ’লীগে কাজ করা শফিকুর রহমান চৌধুরী ইউরোপের বর্ণাঢ্য ও বিলাসী জীবনের মায়া ত্যাগ করে ২০০৮ সালে সিলেটের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। এ বছরেরই ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে এমপি নির্বাচিত হয়ে বাজিমাত করেন। স্থানীয় রাজনীতিতে বিশ্বস্ত নেতা হয়ে উঠায় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা তাঁকে মূল্যায়ন করে সিলেট জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করেন। পরে জেলা আ’লীগের সভাপতির দায়িত্বও পান তিনি।
দেশে স্থিতিশীল হওয়ার পর থেকেই দলীয় নেতাকর্মী, সব শ্রেণী-পেশা এবং সাধারণ মানুষের জন্য শফিক চৌধুরীর দরজা সবসময় উন্মুক্ত ছিলো। যে কারণে তিনি ‘সিলেটে চব্বিশ ঘন্টার রাজনীতিবিদ’ হিসেবে সুখ্যাতি পান। তিনি ‘ক্লিন’ ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন।