অবশেষে শাল্লার ধর্ষণ মামলার সেই চেয়ারম্যান মেম্বার গ্রেফতার

চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী

সিলেট থেকেঃ সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় কিশোরী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু ও একই ইউপি’র ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার দেবব্রত দাস মাতবরকে জেলা সদর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে সুনামগঞ্জ শহর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ধর্ষণ মামলার আসামী হওয়া সত্ত্বে¡ও জেলা পরিষদ প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে গণসংযোগ করছিলেন চেয়ারম্যান নান্টু।
সুত্র জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জ জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন তার ভাই জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী খায়রুল কবির রুমেনের স্বপক্ষে শাল্লায় নির্বাচনী জনসংযোগে আসেন। ওইদিন কিশোরী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু জামিন ছাড়া পুলিশ প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজনৈতিক প্রভাবে ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমনের সাথে উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে জনসংযোগ এবং তার ইউপি অফিসে মতবিনিময় সভায় আয়োজন করেন। এ সময় নির্যাতিতা কিশোরীর ভাই শাল্লা থানার ওসিকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবগত করলেও ওসি আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেননি। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিকেলেই পালিয়ে যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু। এরপরেই নড়েচড়ে বসে থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে শাল্লা থানার ওসি মোঃ আমিনুল জানান, মামলার প্রধান ২ আসামী বার বার স্থান পরিবর্তন করছিলো। শুক্রবার বিকেলে তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের মলয় দাশ নামের এক যুবকের সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওই কিশোরীর। পরে ওই যুবক বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে গত ২৯ জানুয়ারি ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করে ভুক্তভোগী কিশোরী। ওই মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হয়ে অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি নেন সেই যুবক। পরে বিষয়টি জেনে ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে ওই কিশোরী ওই যুবকের বাড়িতে অবস্থান নেন। ওই যুবকের পরিবার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টুকে জানান। কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ ওই যুবকের বাড়ি গিয়ে বিষয়টি সমঝোতা করে দেয়ার কথা বলে ওই কিশোরীকে রাতেই বাড়ি পাঠিয়ে দেন। পরদিন সকালে তাকে সালিশের কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নেন।
ভুক্তভোগী কিশোরীর অভিযোগ, ইউপি অফিসের একটি কক্ষে তাকে চেয়ারম্যান নান্টু ও তার পরিষদের মেম্বার দেবব্রত দাস মাতব্বর মিলে ধর্ষণ করেন। পরে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের হয়ে ওই কিশোরী প্রাণভয়ে থানায় আশ্রয় নেন। এ ব্যাপারে তিনি ৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।

You might also like