‘গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ মোকাবেলায় চাই আরও সাংবাদিকতা’
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও, সেইস্বাধীন দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য সব সময়ই সংগ্রাম করতেহয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে দেশের গণমাধ্যম আরও বেশিচ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধে হয়েছে নানা আয়োজন। তবে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ মোকাবেলার মোক্ষম জবাব হচ্ছে আরওবেশি সাংবাদিকতা। যত বাধাই আসুক সাংবাদিকতার কাজটাঠিকঠাক চালিয়ে যেতে হবে সাংবাদিকদের। বাংলাদেশের স্বাধীনতারসুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবেরআয়োজনের মুল বার্তা ছিলো এটাই।
পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের আয়োজনে নভেম্বরমাসব্যাপী চলছে ‘মুক্তি ও স্বাধীনতা নাট্য উৎসব’। বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য উদযাপনের এ আয়োজনটি সাধারণত ‘এ সিজনঅব বাংলা ড্রামা’ নামে পরিচিত। তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতারসুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে এবার ওই ভিন্ন নামকরণ। এ উৎসবে গত ৯ নভেম্বর মঙ্গলবার লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবেরআয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ ওয়ার অব ইন্ডিপেনডেন্স: রোলঅব মিডিয়া ইন দ্য ইউকে + প্রেস ফ্রিডম ইন বাংলাদেশ’(বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম: যুক্তরাজ্যে গণমাধ্যমের ভূমিকা এবংবাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা) শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিকপরিবেশনা। অনুষ্ঠিত হয় কুইনমেরি ইউনিভার্সিটির আর্টস ওয়ানভবনের পিন্টার স্টুডিওতে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার চিত্র তুলে ধরেনবিবিসি বাংলার সাবেক প্রযোজক উদয় শঙ্কর দাশ। তাঁর আলোচনায়উঠে আসে বাংলাদেশে মুক্ত সাংবাদিকতার পথে বাধা ও চ্যালেঞ্জেরইতিহাস। তাঁর আলোচনার মুল বার্তা ছিলো– যত বাধাই আসুক, সাংবাদিকদের সাংবাদিকতার কাজটি চালিয়ে যেতে হবে। এটাইসাংবাদিকতার মুক্তির সঠিক সংগ্রাম। এর আগে বাংলাদেশেরমুক্তিযুদ্ধের সময়ে ব্রিটিশ সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েআলোচনা উপস্থাপন করেন ই-সাউথ এশিয়ার সম্পাদক বুলবুলহাসান। তাঁর আলোচনা থেকে উঠে আসে বাংলাদেশের মানুষেরমুক্তির সংগ্রামে বিশ্ববাসীর সমর্থন আদায়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যমেরভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশেরঅগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন চ্যানেল এস-এর হেড অবপ্রোগ্রাম ফারহান মাসুদ খান। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেজিডিপি, মাথাপিছু আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, শিক্ষার হার, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চমৎকার অগ্রগতিঅর্জন করেছে। তবে দুর্নীতি মোকাবেলা, মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতকরা এবং গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকরণে চ্যালেঞ্জ এখনও দেশের কাঙ্খিতঅগ্রগতির পথে বাধা হয়ে রয়েছে।
অনুষ্ঠানে ছিলো লং টেবিল এটিকুয়েট। এতে বাংলাদেশেরগণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকতার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েখোলামেলা মন্তব্যে অংশ নেন ১২ জন আলোচক। এদের মধ্যেছিলেন– লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এমদাদুল হকচৌধুরী, বিবিসি’র সাবেক সাংবাদিক উদয় শঙ্কর দাশ, এশিয়ানএইজ-এর সাবেক সম্পাদক বদরুল আহসান, সাপ্তাহিক সুরমারসম্পাদক শামসুল আলম লিটন, সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রধানসম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল আহমদ, চ্যানেল এস-এর হেড অব নিউজফারহান মাসুদ খান, ই-সাউথ এশিয়ার সম্পাদক বুলবুল হাসান, যমুনা টিভির মাহফুজ মিশু এবং লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের নির্বাহীসদস্য নাজমুল ইসলাম ও সালেহ আহমদ।
লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুবায়েরেরপরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাবেরপ্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, সমাপনী ধন্যবাদ জ্ঞাপনকরে বক্তব্য রাখেন ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক চৌধুরী। অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ববধানে ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটসকাউন্সিলের আর্টস অফিসার কাজী রুকসানা বেগম।
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে শরু হয় অনুষ্ঠান। এতে আলোচনার বিরতিতে দেশাত্ববোধক গান পরিবেশন করেন রুপিআমীন, মোস্তফা কামাল মিলন ও পাপ্পু।