ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্মরণে ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশীজের শোক সভা ও দোয়া মাহফিল
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: গত ১৬ই এপ্রিল রবিবার রাত সাড়ে ১২টার সময় প্রবাসী বাংলাদেশীদের আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশীজের উদ্যোগে বীর মুক্তিযাদ্ধা ও গণ স্বাস্হ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্মরণে এক শোক সভা ও দোয়া মাহফিল ভারচুয়েলী অনুষ্ঠিত হয় ।সংগঠণের সভাপতি ডঃ হাসনাত এম হোসেইন এমবিইর সভাপতিত্বে ও সহ সভাপতি হাসান মাহমুদের ( কানাডা) পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বর্নাঢ্য জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন -সাবেক কাউন্সিলার ও ডেপুটি চেয়ার ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ, কমিউনিটি নেতা মাহতাব মিয়া, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সাবেক উপদেষ্টা মোখলেছ চৌধুরী, এডভোকেট হালিম বেপারী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও কবি সৈয়দ নাদির আজিজ দারাজ, কমিউনিটি নেতা এম এ লতিফ জেপি, ডঃ এম এ আজিজ, অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল কাদের সালেহ, সাবেক জিপি ডঃ হোসনে আরা হক, একাউন্টেন্ট এম এ রকিব, বিশিষ্ট সাংবাদিক এম সি রুমেল আহমদ, বিশিষ্ট লেখিকা অধ্যাপিকা রেহেনা রহমান, প্রফেসর ডঃ জাকিয়া শহীদ, সাংবাদিক কে এম আবুতাহের চৌধুরী, বিশিষ্ট সমাজসেবী সুহেল খান, সাংবাদিক ও শিক্ষক শওকত মাহমুদ টিপু, বিশিষ্ট ক্রিকেটার সৈয়দ সায়েম ও ইন্জিনিয়ার কায়সুল হক প্রমুখ ।
অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওত করেন মাওলানা রফিক আহমদ রফিক ।
সভায় বক্তারা -বাংলাদেশের কিংবদন্তী ও ক্ষণজন্মা বুদ্ধিজীবি ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন । তারা বলেন – বাংলাদেশের ইতিহাসে ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরল কর্ম ও নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ।
বিশিষ্ট লেখক হাসান মাহমুদ বলেন -তিনি ছিলেন অশুদ্ধ সমাজের বিশুদ্ধ পুরুষ।সততা ও সরলতা ছিল তাঁর জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট ।তিনি ঔষধ নীতির একটি গাড়ি দিয়ে গেছেন ।ঔষধ নীতি বাস্তবায়ন করে ওষুধের দাম কমার ব্যবস্থা করেছিলেন ।
মোখলেছ চৌধুরী বলেন -তিনি ছিলেন জীবন্ত কিংবদন্তী ও হিরো ।গরীব মানুষের জন্য তিনি বিস্ময়কর প্রতিষ্ঠান গণ স্বাস্হ্য কেন্দ্র রেখে গেছেন ।তিনি বিভিন্ন সরকারের আমলে স্বাস্হ্য মন্ত্রী ও স্বাস্হ্য উপদেষ্টার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ।মুক্তিযুদ্ধ ও গণস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান বাঙালী জাতি স্মরণ রাখবে ।
মাহতাব মিয়া বলেন -তিনি ছিলেন নিরহংকারী ,অতিথিপরায়ন ও সহজ সরল একজন মানুষ।তাঁর প্রতিষ্ঠিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাইলোসিস সেন্টারে একই সাথে ১৩০জন লোক ডাইলোসিস করতে পারে ।অল্প খরচে ডাইলোসিসের ব্যবস্থা করে তিনি সাধারন মানুষের বিরাট উপকার করেছেন ।
ব্যারিষ্টার নাজির আহমদ বলেন -ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি ।তিনি ছিলেন জাতির কণ্ঠস্বর ও অসাধারন এক প্রবাদতুল্য মানুষ।তিনি যা বিশ্বাস করেন তাই বলতেন ।তিনি অতি সাধারণভাবে জীবন যাপন করতেন ।এমন ব্যক্তির জন্ম বিলেতে হলে তিনি লর্ড বা স্যার খেতাব পেতেন ।
ডঃ হোসনে আরা হক বলেন -তিনি ছিলেন একজন মহামানব ।তিনি স্বাস্হ্য সেবায় শত শত মহিলাদের কর্মের সংস্থান করেছেন ।তিনি ওষুধ নীতির প্রবর্তক ।বাংলাদেশে ডাক্তারদের নীতিমালা প্রণয়ন দরকার ।একজন রোগীকে এক শ্রেণীর ডাক্তাররা অতিরিক্ত ঔষধ প্রেসক্রাইব করে ও বিভিন্ন পরীক্ষা দিয়ে হয়রানী করে ।
এম এ রকিব বলেন -মুক্তিযাদ্ধাদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ও স্বাস্হ্য সেবায় তাঁর অবদান অতুলনীয় ।তিনি মহিলাদের এমপাওয়ার করেছেন ।
সৈয়দ নাদির আজিজ দারাজ বলেন -হাউজ অব কমন্সে একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসাবে সম্বর্ধনা দিতে পেরে আমরা গর্বিত ।তিনি অতি সহজে পরকে আপন করে নিতে পারতেন ।১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর জেনারেল ওসমানীর হেলিকপ্টারে গুলি বর্ষণের সময় তিনি তাঁর সাথে ছিলেন ।এ রোমাঞ্চকর ঘটনাটি তিনি লণ্ডনে বলে গেছেন ।
সাংবাদিক রুমেল বলেন -জীবিত অবস্থায় আমরা তাঁকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারিনি ।তিনি মানুষকে মূল্যায়ন করতেন ও ভালবাসতেন ।যে কোন টক শোতে তিনি সানন্দ চিত্তে অংশ নিতেন ।
এম এ লতিফ জেপি বলেন -তিনি ছিলেন স্পষ্টভাষী ও গরীবের বন্ধু।দেশ ও জাতির কল্যানে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন ।রাষ্ট্রীয়ভাবে মরহুমকে মূল্যায়ন করা দরকার ।
কে এম আবুতাহের চৌধুরী বলেন -তিনি ছিলেন জাতির বিবেক ও একজন সাহসী পুরুষ ।কোন রক্তচক্ষুকে তিনি ভয় করতেন না ।কোন লোভ লালসার কাছে তিনি মাথা নত করেননি ।
সভার সভাপতি ডঃ হাসনাত এম হোসেন এমবিই বলেন -মুক্তিযুদ্ধ ও গণ মানুষের স্বাস্হ্য সেবায় ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান ইতিহাসের পাতায় অম্লান হয়ে থাকবে ।একজন সৎ ,নিষ্ঠাবান,ত্যাগী ও খাঁটি দেশ প্রেমিক ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী সমাজের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবেন ।বাংলাদেশের ১৮কোটি মানুষ তাঁকে পছন্দ করত ।এমন লোককে বাংলাদেশের আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবেনা ।বাংলাদেশের পাঠ্য পুস্তকে তাঁর অবদান তুলে ধরা দরকার ।
সভায় ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয় ।