পদত্যাগ করবেন না সুলতান মনসুর সিদ্ধান্ত জানাবেন মোকাব্বির
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ ১০ ডিসেম্বর শনিবার রাজধানীর গোলাপবাগে অনুষ্ঠিত বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন দলটির এমপিরা। কথামতো পরদিন বিএনপি’র ৫ এমপি স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। অন্য ২ এমপি উপস্থিত হতে পারেননি। তাদের পক্ষে পদত্যাগপত্র জমা দেয়া হয়। তাদের একজন বিদেশে থাকায় তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি স্পিকার। ৬ এমপি’র পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে রোববারই গেজেট প্রকাশ করেছে সংসদ সচিবালয়।রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র ৭ এমপি’র পদত্যাগকে যদিও আ’লীগের নেতারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলে দাবি করছেন, কিন্তু এই ঘটনাটি এখন দেশজুড়ে আলোচিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে গঠিত ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’র অন্য যে প্রার্থীরা জোটের, মূলত মাঠে বিএনপি’র সমর্থন নিয়ে জয়ী হয়েছিলেন তারাও সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন কিনা তা নিয়ে জনমনে রয়েছে ব্যাপক কৌতূহল।
ওই নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ধানের শীষ প্রতীক (বিএনপি’র দলীয় প্রতীক) নিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। এখন বিএনপি’র এমপিদের পদত্যাগের পর নিজের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমি তো বিএনপি করি না। কিন্তু, আপনারা তো একই জোটে ছিলেন বলতেই তিনি বললেন, ঐক্যফ্রন্ট এখন নাই। এটা ৪ বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। সেটা ছিল ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে, স্বাধীনতার সংবিধানের ভিত্তিতে। সেই ঐক্যফ্রন্টে আমি ছিলাম ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রতিনিধি। বিএনপি এসে ওই ঐক্যফ্রন্টে যোগদান করেছিল। আমি যেমন ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেছিলাম। সেখানে গণফোরাম ছিল, অন্য দলও ছিল। কাজেই আমাদের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। পদত্যাগের বিষয়টি এখন নতুন করে আলোচনায় আসছে স্মরণ করিয়ে দিতেই সুলতান মনসুর বলেন, বিএনপি যারা করে, তারা তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি তো আর বিএনপি করি না। আপনি বিএনপি না করলেও আপনারা তো আ’লীগের জোটেও নেই?
আমি তো সেটা বলছি না। কিন্তু, আমি জাতির জনকের রাজনৈতিক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক কর্মী। সেই আলোকেই বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই। কাজেই জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না। বিএনপি’র এমপিরা পদত্যাগের আগে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেছিলেন কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, আমার সঙ্গে শপথ অনুষ্ঠানের পর…ওই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও নাই। তাদের কারও সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগও নাই।বিএনপি’র সঙ্গে যোগাযোগ নেই বা পদত্যাগের আগে দলটির পক্ষ থেকে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি বলে জানালেন দলীয় প্রতীক ‘উদীয়মান সূর্য’ নিয়ে জয়ী গণফোরাম নেতা মোকাব্বির খানও।এই মুহূর্তে নিজ নির্বাচনী আসনে সিলেট-২ এ অবস্থানরত মোকাব্বির খান জানান, তিনি নিয়মিত এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। পদত্যাগ করার প্রশ্ন এলে তাকে যারা ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন তাদের বিষয়টি মাথায় রাখবেন বলেও জানান। এর পাশাপাশি নিজ দল এবং জাতীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে পদত্যাগ করবেন কি করবেন না- সে সিদ্ধান্ত নেবেন। কবে নাগাদ বিষয়টি স্পষ্ট করবেন জানতে চাইলে বললেন, খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবো এবং আমার অবস্থান স্পষ্ট করবো।ওদিকে, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মভূমি বগুড়ার গাবতলী এলাকা (বগুড়া-৭) থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম বাবলু বিভিন্ন গণ্যমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিএনপি থেকে পদত্যাগের প্রস্তাব দিলে তিনি বিবেচনা করবেন।