পল্লবী থানায় বিস্ফোরণ: আইএসের দায় স্বীকার
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ঢাকাঃ রাজধানীর পল্লবী থানা কম্পাউন্ডের ভেতরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।বুধবার (২৯ জুলাই) রাতে সাইট ইন্টেলিজেন্স তাদের টুইটার ও নিজস্ব ওয়েব সাইটে এ তথ্য জানিয়েছে। রাত ৮টা ৪৬ মিনিটে স্বীকারোক্তিমূলক টুইট করেন রিতা কাটজ। তবে ঢাকার পুলিশ কর্মকর্তারা এই বিস্ফোরণের সঙ্গে কোনো ধরনের জঙ্গি সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছে।পুলিশ বলছে, স্থানীয় এক রাজনীতিকের ছেলেকে হত্যার জন্য সাধারণ অপরাধীরা এই বোমা বহন করছিল। বিস্ফোরণের আগে রফিকুল ইসলাম (৪০), শহিদুল ইসলাম (২৩) ও মোশাররফ হোসেন (২৬) নামে যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা সবাই পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাতের ক্যাডার। থানা পুলিশ গোয়েন্দা হেফাজতে পাঠানোর পর বর্তমানে তাদেরকে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) মধ্যরাতে রাজধানীর পল্লবী থানায় একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে। এতে চার পুলিশসহ পাঁচ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে ডিএমপির বোম্প ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে সেখান থেকে দুটি অবিস্ফোরিত বোমা উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।ঘটনাস্থলে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, মিরপুর এলাকায় বিভিন্ন ধরনের ক্রাইম সংগঠিত হয়ে থাকে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য মিরপুর বিভাগের ডিসির নেতৃত্বে পল্লবী থানা পুলিশের একটি টিম কিছুদিন ধরে কাজ করছিল। পুলিশের কাছে তথ্য আসে— মিরপুরের কালশী কবরস্থানে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ অপরাধ করার জন্য অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে পল্লবী থানা পুলিশ মঙ্গলবার রাত ২টায় সেখানে অভিযান চালিয়ে তিন সন্ত্রাসীকে আটক করে। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে দুটি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি ও ওজন মাপার যন্ত্রের মতো একটি ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।
কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, সন্ত্রাসীদের কাছে ওয়েট মেশিন দেখে থানা পুলিশ বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেয়। বোম্প ডিসপোজাল ইউনিটের কয়েকজন সদস্য ডিভাইসটি পর্যবেক্ষণ করেন। তারা এই ইউনিটের আরও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সদস্যদের থানায় আসতে অনুরোধ করেন। কিন্তু অন্য সদস্যরা আসার আগেই একটি বিস্ফোরণ ঘটে।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, থানা কম্পাউন্ডে বিস্ফোরিত বোমাগুলো আইইডির আদলে তৈরি। জঙ্গিরা সাধারণত এ ধরনের আইইডি তৈরি করে। গত শুক্রবারও রাজধানীর পল্টন থানা এলাকায় একটি আইইডি বিস্ফোরিত হয়। এর আগে গত বছর রাজধানী ঢাকার পাঁচটি স্থানে, খুলনা ও চট্টগ্রামে পুলিশকে টার্গেট করে আইইডি নিক্ষেপ এবং পুলিশ ভ্যানে আইইডি বিস্ফোরিত হয়েছিল। করোনা মহামারির মাঝে জঙ্গিরা ফের সক্রিয় হয়ে পুলিশের ওপরে হামলা করতে পারে, এমন আশঙ্কায় গত ১৯ জুলাই পুলিশ সদর দফতর থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। ওই চিঠিতেও পুলিশ সদস্য বা পুলিশের স্থাপনাসহ দূতাবাস বা বিদেশি নাগরিকদের ওপর জঙ্গিরা হামলা করতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়।