বাংলাদেশের অবস্থা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের চিঠি
জুলাই-আগষ্টের পুরো ঘটনাবলী তদন্তের আহ্বান
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ অনুসন্ধান দল প্রেরন সম্পর্কে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে সম্প্রতি মহাসচিব এন্থোনিও গুটেরেস সমীপে ইমেইল যোগে একখানা চিঠি প্ররন করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন, দেওয়ান গৌস সুলতান, এনামুল হক, ফয়জুর রহমান খান ও (প্রকৌশলী) মিফতাহুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বিগত জুলাই- আগষ্ট মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কিভাবে জঙ্গিরূপ গ্রহণ করে এবং পরবর্তিতে হত্যা, ধ্বংস, সরকার পরিবর্তন এবং নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে এসবের কারণ অনুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশে জাতিসংঘের টিম প্রেরনের উদ্দোগকে স্বাগত জানিয়ে মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানানো হয়। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে একটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে।
ছাত্রদের যে আন্দোলনে সরকার সহমত পোষণ করে তাকে অনুপ্রবেশকারীরা জঙ্গিরূপ দিতে কিভাবে হত্যাকাণ্ড, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এবং অন্যান্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় জনবান্ধব স্হাপনা সমুহে ধ্বংস-অগ্নিসংযোগ, কারাগার ভেঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গিসন্ত্রাসী মুক্ত করা ও অস্ত্র-গোলাবারুদ লুটপাট এবং পরিনতিতে ৫ই আগষ্ট সরকারের পদত্যাগ এবং তার ধারাবাহিকতায় জাতীয় ও মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্য সম্বলিত স্মারক ও স্হাপনা ধ্বংসের ঘটনা সমুহের উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ কর্তৃক সংগৃহীত ৫ থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে দেশের প্রায় ৫০টি জেলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর দুই শতাধিক নির্যাতন, আক্রমন, লুঠপাট, হত্যা ও জবর দখলের বিবরণ সম্বলিত একটি ফিরিস্তিও তাতে সংযুক্ত করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ বিস্ময় প্রকাশ করেন যে এসব ব্যাপারে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে কোন দুঃখ বা সমবেদনাও প্রকাশ করা হয়নি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ব্রি. জে. শাখাওয়াত হোসেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় — আন্দোলন চলাকালে যেসব হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে তাতে ৭.৬২ রাইফেলের বুলেট ব্যবহৃত হয়েছে যেগুলো বাংলাদেশ পুলিশের হাতে নাই এবং নিষিদ্ধ উল্লেখ করে এক্ষেত্রে বৃহদাকার (massive) অনুসন্ধানের প্রয়োজনের উপর গুরুত্ব দেন। বর্তমানে বিচারের নামে যেসব নৈরাজ্যকর ঘটনার অবতারনা চলমান রয়েছে সেসব ব্যাপারে দেশী বিদেশী সাংবাদিকদের প্রতিবেদন ও মন্তব্যের তথ্য উল্লেখ করে সব ঘটনা উদঘাটনের জন্য অনুসন্ধান টিমের প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত সময়সীমা ৫ই আগস্ট থেকে সম্প্রসারিত করে অন্তত ১৬ আগস্ট পর্যন্ত করার জন্য মহাসচিবকে অনুরোধ জানান হয়। মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ মনে করেন যে অনুসন্ধানের দ্বৈততা ও সম্ভাব্য পরষ্পর বিরোধীতা এড়ানোর লক্ষ্যে জাতিসংঘের অনুসন্ধান চলাকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনুসন্ধান স্থগিত থাকা বাঞ্ছনীয়।