লন্ডনে টানা ১৬ ঘণ্টা ৪০ মিনিট বাজালেন চট্টগ্রামের সুদর্শন
নিউজডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডনঃ দীর্ঘ সময় ড্রাম রোল বাজানোর নতুন রেকর্ড গড়ার চ্যালেঞ্জ সফলভাবে সম্পূর্ণ করেছেন পণ্ডিত সুদর্শন দাশ ।টানা ১৬ ঘণ্টা ৪০ মিনিট বাজিয়ে তবেই থেমেছেন তিনি।যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটায় বাজানো শুরু করেন সুদর্শন। বিরতিহীন বাজিয়ে থামেন পরদিন সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে।গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে চারবার লেখা হয়েছে পণ্ডিত সুদর্শন দাশের নাম। টানা ১৪ ঘণ্টা ড্রাম রোল বাজানোর বর্তমান রেকর্ডটি তাঁরই দখলে। নিজের রেকর্ড নিজে ভাঙার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তিনি।সুদর্শন দাশ প্রথম আলোকে জানান, এবারের চ্যালেঞ্জটি তিনি পেয়েছিলেন ভিন্নভাবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেই তাঁকে নতুন রেকর্ড গড়ার মনোনয়ন দেওয়া হয়।পূর্ব লন্ডনের কমার্শিয়াল রোডের লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমি মিলনায়তনে বাজান তিনি। লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমির শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে কাউনডাউনের মাধ্যমে বাজানোর সমাপ্তি টানেন।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের নিয়ম অনুসারে, দীর্ঘ সময় ধরে বাদ্য বাজানোর ফাঁকে কোনো বিরতি নিতে পারেননি সুদর্শন। তবে বাজানোর সময় পানীয় বা হালকা খাবার তিনি খেতে পেরেছেন।অন্য কেউ তাঁকে খাইয়ে দিয়েছে। তাঁর বাজানোর পুরো সময়টাই দুটি ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করা হয়। এসব ভিডিও গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।সেগুলো যাচাই–বাছাই শেষে মিলবে নতুন রেকর্ডসের স্বীকৃতি।বুধবার বাজানো শুরুর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে উৎসর্গ করে ছিল নাচ-গানের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে অতিথি ছিলেন লন্ডনের ইস্টহ্যাম আসনের সাংসদ স্টিফেন টিমস, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার আহবাব হোসেন, লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমির প্রিন্সিপাল আশিদ আলী, ক্যানারি ওয়ার্ক গ্রুপের পরিচালক জাকির খান ও ভারতীয় হাইকমিশনের একজন প্রতিনিধি। তবে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কেউ ছিলেন না। সুদর্শন দাশ জানান, তিনি নিজে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের হাতে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দিয়েছিলেন।
যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা সুদর্শন দাশ চট্টগ্রামের ছেলে। দীর্ঘ সময় তবলা, ঢোল, ড্রাম রোল ও ড্রামসেট বাজানোর চারটি বিশ্ব রেকর্ড রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ২০১৬ সালে টানা ২৫ দিনে ৫৫৭ ঘণ্টা ১১ মিনিট তবলা বাজিয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। ঢোল বাজানোর রেকর্ড গড়তে ২০১৭ সালে তাঁকে বাজাতে হয়েছিল টানা ২৭ ঘণ্টা। ২০১৮ সালে টানা ১৪ ঘণ্টা ড্রাম রোল বাজিয়ে রেকর্ড গড়েন তিনি। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ড্রামসেট বাজান ১৪০ ঘণ্টা ৫ মিনিট।
সুদর্শন দাশের বাবা অমূল্য রঞ্জন দাশ, মা বুলবুল রানী দাশ। পণ্ডিত সুদর্শন পূর্ব লন্ডনের তবলা অ্যান্ড ঢোল একাডেমির প্রিন্সিপাল। তাঁর প্রতিষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা বাদ্যযন্ত্র শিখছে। পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস, নিউহ্যাম ও রেডব্রিজ কাউন্সিলের অধীন তিনি স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মিউজিক ইন্সপেক্টর হিসেবে কাজ করেন। চারটি বিশ্ব রেকর্ড গড়ার সুবাদে পণ্ডিত সুদর্শন দাশ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সহায়তায় অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় বাজিয়েছেন।