লন্ডনে ২৮শে মে শুরু হচ্ছে রেইনবো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব
*২৮শে মে থেকে ৪ঠা জুন পর্যন্ত চলবে উৎসব
*বিভিন্ন দেশের ৪৫টি সিনেমা প্রদর্শিত হবে
*প্রতিটি সিনেমায় থাকবে ইংরেজী সাব-টাইটেল
*মহিলাদের জন্য থাকবে চলচ্চিত্র নির্মাণ কর্মশালা
নিলুফা ইয়াসমীন হাসান
বার্তা সম্পাদক, সত্যবাণী
লন্ডন: বিভিন্ন দেশের নান্দনিক ছায়াছবি নিয়ে প্রতিবারের মত শুরু হচ্ছে রেইনবো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। সময়ের সফল ও জনপ্রিয় বিভিন্ন দেশের সিনেমা লন্ডনের দর্শকদের দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে রেইনবো সোসাইটি। দেশীয় সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি অন্যান্য সংস্কৃতির সুউপাদানসমূহ গ্রহণের মাধ্যমে সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এবারে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২৪তম রেইনবো ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ।
আগামী ২৮শে মে দুপুর বারটায় পূর্ব লন্ডনের মাইল এন্ড রোডস্থ জেনেসিসি সিনেমা হলে অনুষ্ঠিত হবে চলচ্চিত্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এক নাগাড়ে ২৮শে মে থেকে ৪ঠা জুন পর্যন্ত চলবে উৎসব। আটদিনব্যাপী চলা এই চলচ্চিত্র উৎসবে বিভিন্ন দেশের মোট ৪৫টি সিনেমা প্রদর্শিত হবে। বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, পাকিস্তান, কাজাকিস্তান, চায়না, তাইওয়ান, কোরিয়া, আরমেনিয়া ও ফিনল্যান্ডের সিনেমা দেখতে পাবেন দর্শকেরা। প্রতিটি সিনেমায় ইংরেজী সাব-টাইটেল আছে। সব সংস্কৃতির সকল কমিউনিটির চলচ্চিত্রপ্রেমীরা উপভোগ করতে পারবেন প্রতিটি সিনেমা।
আগামী ২৮শে মে রবিবার জেনেসিস সিনেমা হলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হবে অভিজিত গুহ এবং সুদেষণা রায় এর পরিচালনায় নির্মিত কোলকাতার বাংলা ছায়াছবি ‘বেঁচে থাকার গান‘। এতে মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন টোটা রায় চৌধুরী, গার্গী রায় চৌধুরী, ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য, পরান ব্যাণার্জী প্রমুখ।
২৯শে মে থেকে ৩রা জুন পর্যন্ত পূর্ব লন্ডনের হ্যানবারী স্ট্রীটে অবস্থিত ব্রাডি আর্টস সেন্টারে প্রতিদিন দুটি করে সিনেমা প্রদর্শিত হবে। ২৯ তারিখ বিকাল চারটায় প্রদর্শিত হবে চায়নার সিনেমা দ্যা কফিন পেইন্টার, সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশের সিনেমা ‘বিউটি সার্কাস‘।
৩০ শে মে বিকাল চারটা ও ছয়টায় যথাক্রমে প্রদর্শিত হবে ইরানের ছায়াছবি ‘মাদার ল্যাস‘ এবং বাংলাদেশের ছায়াছবি ‘সাঁতাও‘।
৩১ শে মে বিকাল চারটায় প্রদর্শিত হবে ইরানের ছবি ‘এ্যাপল ডে‘, সন্ধ্যা ছয়টায় বাংলাদেশের ছবি ‘দামাল‘।
কাজাখিস্তানের ছায়াছবি ‘মাম আই এম এলাইভ‘ ও ভারতের ছায়াছবি ‘লোটাস বøুম‘ প্রদর্শিত হবে পহেলা জুন যথাক্রমে বিকাল চারটায় এবং সন্ধ্যা ছয়টায়।
২রা জুন বিকাল চারটায় ভারতের ছায়াছবি ‘ইলহাম‘ এবং সন্ধা ছয়টায় পাকিস্তানের ছায়াছবি ‘আই উইল মিট ইউ দেয়ার‘ প্রদর্শিত হবে।
৩রা জুন বিকাল চারটায় প্রদর্শিত হবে ভারতীয় বাংলা ছায়াছবি ‘ঝরাপালক‘, সন্ধ্যা ছয়টায় বাংলাদেশের ছায়াছবি ‘পাপপূণ্য।
৪ঠা জুন ইলফোর্ডের ক্যানেথ মোর থিয়েটাওে চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনি দিনে বিকাল তিনটায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রদর্শিত সিনেমার এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে এবং প্রদর্শিত হবে ফখরুল আরেফিন খান পরিচালিত ও গড়াই ফিল্মস দ্বারা প্রযোজিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত ছায়াছবি ‘জেকে ১৯৭১‘। বহু মাত্রিক সাংস্কৃতিক সমাজে পরিবারের সবাই একসঙ্গে উপভোগ করার উপযোগী চলচ্চিত্রগুলো উৎসবে প্রদর্শনীর জন্য বাছাই করা হয়।
‘ওমেন ইন ফিল্ম কর্মশালা‘
সিনেমা প্রদর্শন ছাড়াও চলচ্চিত্র উৎসবে শুধুমাত্র নারীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে ‘ওমেন ইন ফিল্ম কর্মশালা‘। আগামী ৩রা জুন শনিবার দিনব্যাপী এই কর্মশালায় অভিনয়, পরিচালনা এবং সম্পাদনাসহ একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে চলচ্চিত্র নির্মাণের অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ থাকবে। এই কর্মশালায় অংশ নিতে চাইলে rainbowfs@aol.com এ ইমেইল অথবা ০৭৯৫৬৯২৪২৪৬ নম্বরে যোগাযোগ করতে হবে।
অনলাইনে www.rainbowfilmssociety.com এ যে সকল সিনমো দেখা যাবে সেগুলো হলো ভারতীয় বাংলা সিনেমা ‘অভিযান‘, ‘অপরাজিতো‘, ‘বাল্লাবপুরের রূপকথা‘, ব্যোমকেশ হত্যামঞ্চ‘, ‘ঘাঘরি‘, ‘কর্ণ সুবর্ণের গুপ্তধন, এবং ‘দ্যা ইকেন‘।
জুড়ী বোর্ড
জুড়ী বোর্ডে আছেন রবার্ট ফিলিপস, জয়শ্রী কবীর, পুলক গুপ্ত, সৈয়দ আনাস পাশা, ড. জাকি রেজোয়ানা, সাদেক আহমেদ চৌধুরী, সৈয়দ মুকিব আহমেদ ও নাদিয়া আলী। জুড়ী বোর্ড বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে যেমন বেস্ট ফিল্ম ফিচার, বেস্ট ফিল্ম ডকুমেন্টারি, বেস্ট ডাইরেক্টর, বেস্ট ফিল্ম ফর হিউমেনিটি, স্পেশাল জুড়ী ম্যানশন, বেস্ট ডাইরেক্টর (স্বল্প দৈর্ঘ্য), বেস্ট স্টোরি (স্বল্প দৈর্ঘ্য) এ্যাওয়ার্ড প্রদানের জন্য নির্ধারণ করবে। ৪ঠা জুন চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনি দিনে এই এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
চলচ্চিত্র উৎসবকে সাফল্য মন্ডিত করতে ফেস্টিভ্যাল কমিটিতে যারা কাজ করছেন তাঁরা হলেন: ডেরেক ম্যালকম, মোস্তফা কামাল, শামিমা ফেরদৌস, খবিরুল ইসলাম খান, আহমেদ মোস্তফা জামাল, দেবানিক কুন্ড, জোহরী জামানি, জয়শ্রী কবীর, আবু মুসা হাসান, আনোয়ারুল কবীর, বুলবুল হাসান, দিপ্তী অনুপম, ফরিদা কামাল, ফেরদৌস খান, ইমরান খান, মেহের আহমেদ, নাদিয়া লোদি ওয়াহাব, নিলুফা ইয়াসমীন হাসান, সাদেক আহমেদ চৌধুরী, সামির কামাল, সেলিনা খান, শাহনাজ বেগম মণি, স্মৃতি আজাদ, সৈয়দ জুবায়ের আহমেদ, সৈয়দ মকীব আহমেদ, সাঈদা সায়মা আহমেদ, কৃষ্ণা সাহা এবং আহসানুল আম্বিয়া।
উল্লেখ্য, রেইনবো ফিল্ম সোসাইটির কর্ণধার মোস্তফা কামালের উদ্যোগে দু‘হাজার সালে লন্ডনে প্রথম অনুষ্ঠিত হয় চলচ্চিত্র উৎসব। এরপর থেকে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই চলচ্চিত্র উৎসব। রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি যুক্তরাজ্যের একটি অলাভজনক চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাজ্যে সাংস্কৃতিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে।