হেফাজত, বেফাক ও হাইআতুল উলয়ায় কে হচ্ছেন শফীর উত্তরসূরি?
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
চট্টগ্রাম: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পরপরই জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে,কে হচ্ছে তার উত্তরসূরি।তাকে চির বিদায় জানাতে আসা শোকার্ত মানুষের মুখেও আলোচনা তার শূণ্যতা পূরণ হবে কিভাবে। তৌহিদি জনতার প্রাণের সংগঠন হেফাজতে ইসলামের হাল ধরছেন কে।রাজধানী ঢাকা থেকে,না কি চট্টগ্রামেই থাকবে হেফাজতের মূল নেতৃত্ব,এ নিয়ে সংগঠনের ভেতর আলোচনা চলছে।শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর হেফাজতের এক সিনিয়র নেতা হাটহাজারি মাদ্রাসা থেকে বলেন,সভাপতিদের মধ্য থেকে যে কেউ হেফাজতের ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্ব পালন করতে পারেন।পরবর্তী সময়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।
জানা গেছে, হেফাজতের আমির আল্লাম শফীর মৃত্যুর পর সংগঠনের এক নম্বর সহ-সভাপতির ভারপ্রাপ্ত আমির হওয়ার কথা। বর্তমানে এক নম্বর সহ-সভাপতি হচ্ছেন আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি বয়সেও সবার বড়। তাকে হেফাজতে ইসলামের ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে আপাতত নেতৃত্বে দেখা যেতে পারে। যদি তিনি দায়িত্ব নিতে অপারগ হন, তাহলে সহ-সভাপতিদের মধ্য থেকে যে কাউকেই ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্বে দেখা যেতে পারে।তবে, আল্লামা শফীর দাফনের পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে হেফাজতের নেতারা জরুরি বৈঠক করে ভারপ্রাপ্ত আমিরের বিষয়টি নির্বাচন করবেন বলে জানা গেছে।এদিকে শুক্রবার রাতে গণমধ্যমকে দলটির মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, উনার (আল্লামা শফী) মতো মানুষ আর পাওয়া যাবে না। উনার চলে যাওয়াতে কিছু প্রভাব পড়বে। তবে ইনশা আল্লাহ এটি কাটিয়ে উঠার আশা রয়েছে। দলের অবস্থান আগের মতোই সুসংগঠিত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কে হচ্ছেন হেফাজতের আমির? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপাতত আমি দলের মহাসচির হিসেবে আছি। আর আমার দায়িত্ব হবে দলের কাউন্সিল ডাকা হবে। সেখানে এ সিদ্ধান্ত হবে। আমির নির্বাচনের ক্ষেত্রে এককভাবে কোনো কিছু করা যাবে না।কবে কাউন্সিল ডাকা হবে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আরো পরে। এখন শোকের ব্যাপার। হুজুরের দাফন-কাফন হবে। তারপর এটা নিয়ে আলোচনা হবে।জানা গেছে, আল্লামা শফীর মৃত্যুর আগে হাটহাজারী মাদ্রাসার কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রকাশ্য দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটির দুই গ্রুপই নিজেদের শীর্ষ নেতাদের হেফাজতের ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্বে আশা করছেন।
তাদের মধ্যে একগ্রুপ আল্লামা শফীর অনুগত ও তার ছেলে আনাস মাদানির নেতৃত্বে। এই গ্রুপে রয়েছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মহিউদ্দিন রুহি প্রমুখ।অন্যদিকে, অন্য গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন হেফাজতের বর্তমান মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী। মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, সাবেকমন্ত্রী মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাস, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মামুনুল হকসহ কওমি ঘরানার অধিকাংশ আলেম ওলামা ও হেফাজতের অধিকাংশ নেতাকর্মী রয়েছেন।
সংগঠনটির দুই গ্রুপই চাইছেন তাদের শীর্ষ নেতারাই হেফাজতের নেতৃত্বে আসুক। তবে, নিয়ম অনুযায়ী হেফাজতের এক নম্বর সহ-সভাপতি ভারপ্রাপ্ত আমির হওয়ার কথা। তবে সহ-সভাপতিদের মধ্য থেকে ভারপ্রাপ্ত্ আমির নির্বাচনে বিবাদ কিংবা মতানৈক্য দেখা গেলে জরুরি ভিত্তিতে হেফাজতের কাউন্সিল ডাকা হতে পারে। কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন আমির নির্বাচন করা হতে পারে।এক্ষেত্রে সংগঠনটির বর্তমান মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরীকেও হেফাজতের আমির হিসেবে দেখা যেতে পারে। বর্তমানে বিবাদমান হেফাজত নেতারা আপাতত তাদের আমিরকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান। আল্লামা শফীর জানাজা, দাফন ও কাফন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন তারা।