১১ ফেব্রুয়ারি সিলেট ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির পদযাত্রা সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে :সেলিমা রহমান
চঞ্চল মাহমুদ ফুলর
সত্যবাণী
সিলেট থেকেঃ বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, দেশ এখন চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে কোন মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায়নি, ভোটকেন্দ্রে কুকুর শুয়েছিল। তাই এই নির্বাচনকে মানুষ কুত্তা মার্কা নির্বাচন বলে। আর ২০১৮ সালে দিনের ভোট আগের রাতেই শেষ হয়ে যায়। এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। বিএনপি সারাদেশে তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবদে সমাবেশ করছে। এই দাবী শুধু বিএনপি’র একার নয়, এটি জনগণের দাবী। আ’লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তারা দখল, লুন্ঠন, দুর্নীতিতে বিশ্বাসী। আ’লীগের ইতিহাস দেশবাসী জানে, এই ইতিহাস পরিবর্তন করা যাবে না। তাই দেশবাসীকে সাথে নিয়ে এই সরকারের পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দিয়েছিলেন সেই বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে নগরির রেজিস্ট্রারি মাঠে বিএনপির ‘যুগপৎ আন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, বিরোধী দলের গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা’ দাবিতে সিলেটে বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল, ঢাল, নিত্যপণের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ও ১০ দফা দাবি আদায়ে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি সিলেটসহ সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে সেলিমা আরো বলেন, ১৯৭১ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করে ব্যারাকে ফিরে গিয়েছিলেন। এরপর আ’লীগ ক্ষমতায় এসে মাত্র সাড়ে ৩ বছরে লুটপাট করে দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছিল। দেশে দুর্ভিক্ষ এসেছিল, বাসন্তি নামের মেয়েটি শাড়ি না পেয়ে নিজের ইজ্জত রক্ষা করতে জাল পরেছিল। তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে যাতে কেউ কথা না বলে সেজন্য বাকশাল কায়েম করেছিল। তারা এখন উন্নয়নের গান গায়। প্রকৃত উন্নয়ন হচ্ছে জনগণের উন্নয়ন, যা শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়া করে গিয়েছিলেন। আজ দেশের সাধারণ মানুষ খেতে পারছেনা। আ’লীগ ১০ টাকায় চাল খাওয়ানোর কথা বলে এখন ৮০ টাকায় চাল খাওয়াচ্ছে। মধ্যবিত্তরা নি¤œবিত্ত হয়ে যাচ্ছে আর নিম্নবিত্তরা অতিদরিদ্র সীমার নিচে যাচ্ছে। তারা ক্ষমতায় এসে এ পর্যন্ত ১৫ বার বিদ্যুৎ-এর দাম বাড়িয়েছে। একদিকে জনগণ গরীব হচ্ছে আর অন্যদিকে তারা দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে। তাই এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই।
নগর বিএনপি’র আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালি পংকির সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকী ও জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদের যৌথ সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, ড. মো. এনামুল হক চৌধুরী ও খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি এম. নাসের রহমান, সমবায় সম্পাদক জিকে গউস, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সহ-ক্ষুদ্রঋণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সহ-স্থানীয় সরকার সম্পাদক শাম্মী আক্তার, জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আবুল কাহের শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বিএনপি’র ১০ দফা আন্দোলন কর্মসূচিতে সিলেটবাসী অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে। রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমেই এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হবে। ইনশাআল্লাহ দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি নাজির হোসেন, নগর বিএনপি’র যুগ্ন আহবায়ক হুমায়ুন কবির শাহীন, জিয়াউল আরেফিন জিল্লুর, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, এডভোকেট হাবিবুর রহমান, বিএনপি নেতা এডভোকেট আবেদ রাজা, জেলা বিএনপি নেতা এডভোকেট আশিক উদ্দিন, মামুনুর রশীদ প্রমুখ।এরআগে দুপুর থেকে বিভাগীয় সমাবেশে বিভিন্ন স্থানের নেতা-কর্মীরা মিছিলসহকারে আসতে থাকেন। জেলার সকল উপজেলা-পৌরসভা এবং নগরির সকল ওয়ার্ড থেকে পৃথক পৃথক মিছিল নিয়ে দলের নেতা-কর্মীরা যোগদান করেন। এছাড়াও সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।বিকেলের আগেই রেজিস্ট্রারি মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের সময় নগরির তালতলা থেকে শুরু হয়ে সুরমা পয়েন্ট পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।