অবৈধভাবে ক্ষমতাদখলকারী জঙ্গী তালেবানদের স্বীকৃতি না দেয়ার দাবি নির্মূল কমিটির

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ বিকেল ৩টায় ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র কেন্দ্র, জেলা, উপজেলা ও বৈদেশিক শাখাসমূহের শতাধিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বিশেষ প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, লেখক কলামিস্ট সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ, মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবুল বারক আলভী, সমাজকর্মী কাজী মুকুল, ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ, লেখক সাংবাদিক সাব্বির খান, সাংবাদিক শওকত বাঙালি, উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, শহীদসন্তান অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী শম্পা, নির্মূল কমিটির সর্বইউরোপীয় শাখার সভাপতি মানবাধিকারকর্মী তরুণ কান্তি চৌধুরী, লেখক আলী আকবর টাবী, মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্ত্তী, মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান শহীদ, শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব, সঙ্গীতশিল্পী জান্নাত-ই ফেরদৌসী, এডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ, ডা. মফিজুল ইসলাম মান্টু, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, সাংবাদিক দিলীপ মজুমদার, তুরস্ক শাখার সাধারণ সম্পাদক লেখক চলচ্চিত্রনির্মাতা শাকিল রেজা ইফতি, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট লীনা পারভীনসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।নির্মূল কমিটির বিশেষ প্রতিনিধি সভায় আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতা দখল এবং এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের পাকিস্তানপন্থী জামায়াত-হেফাজত শিবিরের উল্লাসে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। গ্রহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছেÑ

১. প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি ঘোষণা করেছেন, সেহেতু আমরা আফগানিস্তানে মৌলবাদী সন্ত্রাসী তালেবানদের অবৈধ ক্ষমতা দখলকে স্বীকৃতি প্রদান না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আফগানিস্তানে তালেবানদের বর্বরতার শিকার বিপন্ন মানুষ বিশেষভাবে আফগান নারী এবং উদারনৈতিক বুদ্ধিজীবী, সমাজকর্মী, সংস্কৃতিসেবী, রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকার কর্মীদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। নির্মূল কমিটি সব সময় জঙ্গী মৌলবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামরত আফগান জনগণের পক্ষে থাকার ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করছে।

সভায় গৃহীত অন্যান্য প্রস্তাবে বলা হয়েছে
২. আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতাদখল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাসীদের নতুনভাবে উৎসাহিত করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার ক্ষমতায় এসে জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় যে আঞ্চলিক টাস্ক ফোর্স গঠনের প্রস্তাব করেছিলেন আজকের সভা এ বিষয়ে সরকারকে বিশেষভাবে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। নির্মূল কমিটি ইতোমধ্যে দক্ষিণ এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশের সমমনা সংগঠনসমূহকে এক মঞ্চে একত্রিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
৩. বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য নির্মূল কমিটির কেন্দ্র ও বৈদেশিক শাখাসমূহ গত দেড় দশক ধরে ধারাবাহিক প্রচারাভিযান চালাচ্ছে, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ হচ্ছে গত ৭ জুলাই (২০২১) জেনেভায় জাতিসংঘ ভবনের সামনে দীর্ঘ মানববন্ধন ও সমাবেশ, যেখানে কায়িকভাবে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২৩টি দেশের আইনপ্রণেতা, গণহত্যা বিষয়ক গবেষক, মানবাধিকার কর্মী ও রাজনীতিবিদরা বক্তব্য প্রদান করে আমাদের দাবির প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করেছেন। আগামী নবেম্বরে ব্রাসেলস-এ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সামনে আরও বড় পরিসরে সমাবেশ করে আমরা এ দাবি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে তুলে ধরব। বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগহীনতায় আমরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। আমরা আশা করবÑ সরকার ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে গৃহীত সর্বসম্মত প্রস্তাব অনুযায়ী বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য অবিলম্বে বিশেষ কূটনৈতিক তৎপরতা আরম্ভ করবে।
৪. গত দেড় বছরে করোনা মহামারীকালে নির্মূল কমিটির যে সব নেতাকর্মী এবং আমাদের পরিবারের যে সব সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন আজকের সভা তাদের সকলের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পাশাপাশি আমাদের আন্দোলনে তাদের অবদান আন্তরিকভাবে স্মরণ করছে।
৫. আজকের সভায় গঠনতন্ত্রের ১৫/১০ ধারা অনুযায়ী নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা পরিষদে ৫ জন ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদে ৯ জন নতুন সদস্য কো-অপ্ট করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদে কো-অপ্টকৃত ৫ জন সদস্য হলেন:
১. বরেণ্য নাট্যজন মুক্তিযোদ্ধা রামেন্দু মজুমদার
২. জাতীয় সংসদের প্রাক্তন সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ সভাপতি জননেতা ঊষাতন তালুকদার
৩. মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসনে অবদানের জন্য জাহানারা ইমাম পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সমাজকর্মী মালেকা খান
৪. বরেণ্য কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন
৫. বিশিষ্ট চলচ্চিত্রনির্মাতা, নাট্যব্যক্তিত্ব ও নির্মূল কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ

 কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদে কো-অপ্টকৃত ৯ জন সদস্য হলেন:

১. নির্মূল কমিটির সিলেট জেলার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্ত্তী
২. ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক-এর সভাপতি, গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ড. কানিজ আকলিমা সুলতানা
৩. বাংলাদেশ সান্তাল লেখক ফোরাম-এর সভাপতি লেখক কলামিস্ট মিথুশিলাক মুর্মু
৪. কলামিস্ট অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট লীনা পারভীন
৫. নির্মূল কমিটির সুইজারল্যাণ্ড শাখার সভাপতি মানবাধিকারকর্মী রহমান খলিলুর
৬. নির্মূল কমিটির কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক সাংবাদিক দিলীপ মজুমদার
৭. নির্মূল কমিটির বগুড়া জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক সমাজকর্মী রাশেদ রাসু
৮. নির্মূল কমিটির নওগাঁ জেলার সাধারণ সম্পাদক সমাজকর্মী ইস্রাফিল খান বাপ্পি
৯. জাতিসংঘের শিশু অধিকার সম্পর্কিত কমিটির সদস্য সমাজকর্মী ফয়সাল হাসান তানভীর

You might also like